বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ইতিহাসের সত্য না বলা অপরাধ। আওয়ামী লীগ তাদের তৈরি করা ইতিহাস প্রতিষ্ঠা করার সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে। 

শনিবার (১০ এপ্রিল) সন্ধ্যায় জেএসডি আয়োজিত এক ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি। ১৯৭১ সালের যুদ্ধ কোনো একক ব্যক্তি বা দলের নয় বলে উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, যারা দীর্ঘকাল ধরে স্বাধিকার-স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠার লড়াই করেছেন তাদের কারও নাম উচ্চারণ করা হয় না। এমনকি মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী, তাজউদ্দীন আহমদ, জিয়াউর রহমানের নামও উচ্চারিত হয় না। 

তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধ সংগঠিত হয়েছিল সমগ্র জাতির আত্মবিকাশের আকাঙ্ক্ষাকে কেন্দ্র করে। কিন্তু স্বাধীনতার পর আওয়ামী লীগ সংবিধানকে ছিন্নভিন্ন করে একদলীয় বাকশাল প্রতিষ্ঠা করে জনগণের গণতান্ত্রিক আকাঙ্ক্ষাকে তিরোহিত করে। বর্তমান ফ্যাসিবাদী সরকারের বিরুদ্ধে বৃহত্তর জাতীয় ঐক্য গড়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে আ স ম আবদুর রব বলেন, সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচারভিত্তিক রাষ্ট্রীয় রাজনীতির আমূল সংস্কার করে অংশীদারিত্বভিত্তিক শাসনব্যবস্থা প্রবর্তন করতে হবে। এ লক্ষ্যে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রই ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ বিনির্মাণের সুনির্দিষ্ট দার্শনিক ভিত্তি। 

তিনি বলেন, ২৫ মার্চ বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার এবং গণহত্যা শুরুর মধ্য দিয়ে নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনের কবর রচিত হয়। বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতিতে দীর্ঘ নয় মাস সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধ তাজউদ্দীন আহমদের নেতৃত্বে সম্পন্ন হয়। স্বাধীনতা অর্জনের সর্বোচ্চ স্তর হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধ। মুক্তিযুদ্ধে সুযোগ্য নেতৃত্ব না থাকলে আমাদের স্বাধীনতা অর্জন চরম ঝুঁকিতে পড়ত। এসব গভীর সত্য উপলব্ধি করতে ব্যর্থ হলে জাতির ঐতিহাসিক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাবলীর মূল্যায়ন করা সম্ভব হবে না। স্বাধীনতা সংগ্রাম, মুক্তিযুদ্ধ কিংবা কোনো আদর্শিক সংগ্রাম কারো একক কৃতিত্বে সম্পন্ন হতে পারে না।

স্বাধীনতা ও জাতীয় মুক্তিসংগ্রামে যাদের অসামান্য অবদান রয়েছে, তাদেরকে সরকার সামান্য মর্যাদা দিতেও কুণ্ঠাবোধ করে বলে দাবি করে রব বলেন, বর্তমান সরকার অতিরিক্ত পরশ্রীকাতরতা সম্পন্ন।

আলোচনা সভায় মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, গত ৫০ বছরে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রের মহান ভাবাদর্শকে ধূলিসাৎ করে দেওয়া হয়েছে, মুক্তিযুদ্ধের সব স্বপ্নকে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। স্বৈরাচারী শাসনব্যবস্থার বিরুদ্ধে কল্যাণরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য ঐক্যবদ্ধ লড়াই করতে হবে।

ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর বলেন, দেশ চরম সংকটে। সরকার অবৈধ ক্ষমতাকে বৈধতা দেওয়ার জন্য, মুক্তিযুদ্ধের কিংবদন্তিদের উপেক্ষা করে তথাকথিত সুবর্ণজয়ন্তী আয়োজন করেছে। বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে বৃহত্তর গণআন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।

আলোচনায় আরও অংশ নেন অ্যাডভোকেট ছানোয়ার হোসেন তালুকদার, সা কা ম আনিছুর রহমান খান, সিরাজ মিয়া, তানিয়া রব, শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন প্রমুখ।

এএইচআর/আরএইচ