জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারী সেক্রেটারি মাহফুজুর রহমান বলেছেন, সরকার কেয়ারটেকার সরকারের গণদাবি পাশ কাটিয়ে একতরফা নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। কিন্তু রাজপথের সংগ্রামী জনতা তাদের সে ষড়যন্ত্র সফল হতে দেবে না বরং গণবিরোধী তফসিল জনগণের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হলে তা জনগণ জীবন দিয়ে হলেও রুখে দেবে। 

বুধবার (১৫ নভেম্বর) রাজধানীতে সরকারের পদত্যাগ, নির্বাচনকালীন কেয়ারটেকার সরকার, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধ ও জামায়াত আমীর ডা. শফিকুর রহমানসহ জাতীয় নেতাদের অবিলম্বে মুক্তির দাবিতে কেন্দ্র ঘোষিত ৫ম দফার দেশব্যাপী টানা ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ কর্মসূচির সমর্থনে এক পথসভায় তিনি এসব কথা বলেন।

এদিন সকালে জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তরের মিরপুর অঞ্চল আয়োজিত এক বিক্ষোভ মিছিলটি মিরপুর-১ নং ছাপাখানা মোড় থেকে শুরু হয়ে নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে আনসার ক্যাম্পে সামনে এসে পথ সভার মাধ্যমে শেষ হয়। 

সেখানে পথ সভায় উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগরী উত্তরের মজলিসে শূরা সদস্য অ্যাডভোকেট আব্দুল হামিদ, আব্দুর রকীব, জসিম উদ্দীন, আল আমিন ও বিপ্লব, ছাত্রনেতা তানভির, ফাহাদ ও মেহেদীসহ জামায়াত-শিবিরের স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।

সরকারকে জনগণের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা না করে অবিলম্বে পদত্যাগ ও কেয়ারটেকার সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের আহ্বান জানিয়ে মাহফুজুর রহমান বলেন, সরকারের মন্ত্রীরা দেশকে জান্নাতের সঙ্গে তুলনা করলেও মূলত দেশকে প্রাকারান্তরে জাহান্নামে পরিণত করা হয়েছে। মহামান্য হাইকোর্ট বিভাগের একজন বিচারপতিও এমন মন্তব্য করে দেশের বাস্তবচিত্র দেশ ও জাতির সামনে উপস্থাপন করেছেন। দেশ চলছে ফ্যাসিবাদী ও মাফিয়া কায়দায়। 

সরকারের নিজেদের অবৈধ ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করার জন্যই রাষ্ট্রযন্ত্রের সকল কিছুকেই দলীয়করণ করে ফেলেছে। জনগণের শেষ ভরসাস্থল বিচারবিভাগকে আজ্ঞাবাহী প্রতিষ্ঠানে পরিণত করা হয়েছে। রাজপথে সভা-সমাবেশ ও রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন দেশের প্রত্যেক নাগরিকের সাংবিধানিক অধিকার হলেও সরকার সে অধিকার থেকে জনগণকে বঞ্চিত করছে। 

সরকার জনতার আন্দোলন নির্মম ও নিষ্ঠুরভাবে দমনের জন্য জনপ্রশাসন ও পুলিশসহ দলীয় শক্তিকে লেলিয়ে দিয়ে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস অব্যাহত রেখেছে। কিন্তু এসব করে সরকারের শেষ রক্ষা হবে না। তিনি সরকারকে গণবিরোধীতা পরিহার করে গণতান্ত্রিক অভিযাত্রায় ফিরে আসার আহ্বান জানান। অন্যথায় তাদের জন্য নির্মম পরিণতি অপেক্ষা করছে। তাদের পালানোর পথ থাকবে না বলেও উল্লেখ মাহফুজুর রহমান। 

ঢাকা মহানগর উত্তর জামায়াত কাফরুল, তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল ও বাড্ডায় এলাকার বিভিন্ন স্পটে অবরোধ সমর্থনে বিক্ষোভ, মিছিল ও পিকেটিং করে।

কাফরুল এলাকায় জামায়াতের অবরোধ

৫ম দফা ৪৮ ঘণ্টার সর্বাত্মক অবরোধ কর্মসূচির ১ম দিনে কাফরুলে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে ঢাকা মহানগর উত্তর জামায়াতে ইসলামীর কাফরুল অঞ্চলের নেতাকর্মীরা। কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগর উত্তরের সহকারী সেক্রেটারি ডা. ফখরুদ্দীন মানিকের নেতৃত্বে আরো উপস্থিত ছিলেন, ঢাকা মহানগর উত্তরের কর্মপরিষদ সদস্য টুটুল, জোন টিমের সদস্য আলাউদ্দিন মোল্লা, শ্রমিক নেতা মিজানুর রহমান, মহানগর উত্তরের শুরা সদস্য আব্দুল মতিন খান, আবু তৈয়ব,আহসান হাবীব ও আতিক হাসান প্রমুখ।

আব্দুল্লাহপুর জামায়াতের অবরোধ

কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের কর্মপরিষদ সদস্য মুহাম্মদ জামাল উদ্দিনের নেতৃত্বে ঢাকা মহানগর উত্তরের উত্তরা পূর্ব অঞ্চলের উদ্যোগে আব্দুল্লাহপুর বেড়ীবাঁধ সড়কে অবরোধ করে জামায়াত নেতাকর্মীরা। সেখানে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগরী উত্তরের মজলিসে শূরা সদস্য এম আলম, আব্দুল্লাহ সাদিক, এম রহমান ও আবু মুসআব এবং ছাত্রনেতা জুলকারনাইন।

রাজধানীর উত্তরায় অবরোধ

কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের কর্মপরিষদ সদস্য মো. আবু ফারহানের নেতৃত্বে ৪৮ ঘণ্টার সর্বাত্মক অবরোধ কর্মসূচির প্রথম দিনে উত্তরার সড়ক অবরোধ করে জামায়াতে ইসলামী উত্তরা অঞ্চলের নেতাকর্মীরা। এসময় উপস্থিত ছিলেন উত্তরা ও তুরাগের আমির, নায়েবে আমীর ও সেক্রেটারিসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।

বাড্ডায় জামায়াতের অবরোধ

চলমান পঞ্চম দফার অবরোধের প্রথম দিনে ঢাকা মহানগরী উত্তরের মজলিসে শূরা সদস্য মাওলানা কুতুবউদ্দীন ও আব্দুস সবুর ফরহাদের নেতৃত্বে এলাকায় বাড্ডা-রামপুরা অঞ্চলের বাড্ডা এলাকায় শান্তিপূর্ণ সড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালন করা হয়। শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি চলাকালে স্থানীয় যুবলীগ-ছাত্রলীগ অতর্কিত হামলা চালিয়ে ৫-৬ জনকে আহত করে এবং কয়েকজনকে তুলে নিয়ে যায়। বাড্ডাসহ বিভিন্ন স্থানে অবরোধ কর্মসূচি চলাকালে বেশ কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে বলেও দাবি জামায়াতে ইসলামীর।

জেইউ/এমএসএ