মির্জা আব্বাস

সাবেক সংসদ সদস্য এম ইলিয়াস আলীকে স্বাধীনচেতা ও দেশপ্রেমিক সাহসী নেতা হিসেবে উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিবের উদ্দেশে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, তার গুমের পেছনে আমাদের দলের যে বদমাশগুলো রয়েছে তাদেরকেও চিহ্নিত করার ব্যবস্থা করেন প্লিজ। এদেরকে অনেকেই চেনেন।

তিনি বলেন, ইলিয়াস গুম হওয়ার আগের রাতে দলীয় অফিসে কোনো এক ব্যক্তির সঙ্গে তার বাকবিতণ্ডা হয়। ইলিয়াস খুব গালিগালাজ করেছিলেন তাকে। সেই বিষধর সাপগুলো এখনও আমাদের দলে রয়ে গেছে। যদি এদেরকে দল থেকে বিতাড়িত করতে না পারি, সামনে যাওয়া যাবে না। 

শনিবার (১৭ এপ্রিল) দুপুরে সিলেট বিভাগ জাতীয়তাবাদী সংহতি সম্মেলনী-ঢাকার উদ্যোগে আয়োজিত এক ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন মির্জা আব্বাস। 

তিনি বলেন, ছাত্রনেতাদের সঙ্গে ৯০ এর স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের মধ্যদিয়ে আমার সম্পর্ক, যেটা আজও বিদ্যমান। ভালোবাসার ছাত্রনেতাদের মধ্যে ইলিয়াস আলী ছিল অন্যতম। সে যে রাতে গুম হয়, ওই রাতেই দেড়টা-পৌনে দুইটার দিকে খবর পাই। তাৎক্ষণিকভাবে আমার পরিচিত কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করি। তারা আমাকে জানান, তাকে চট্টগ্রাম নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। সবচেয়ে মজার বিষয় হচ্ছে, যে পুলিশ কর্মকর্তাদের সামনে থেকে নেওয়া হলো, তাদের আজ পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। ইলিয়াস আলীর গাড়িচালককেও পাওয়া যায়নি। তাহলে এই কাজটি করল কে?

বিএনপির এই নেতা বলেন, আমরা কিন্তু সামনের লক্ষণ ভালো দেখছি না। ইলিয়াসকে গুমের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘিত হতে যাচ্ছে। হিসাব করে দেখেন, একটা একটা করে রাজনৈতিক দল শেষ করে দেওয়া হচ্ছে। এখন চলছে হেফাজত। বিএনপির ওপর নির্যাতন তো চলছেই। একটা সময় আওয়ামী লীগকেও শেষ করে দেওয়ার চেষ্টা করা হবে। আমি ধরে নিলাম আওয়ামী লীগ সরকার ইলিয়াস আলীকে গুম করেনি। তাহলে গুম করল কে? আমাদের একজন নেতা সালাহউদ্দিনকে পাচার করে নিয়ে গেল, চৌধুরী আলমকে গুম করা হল, আমাদের দলের বহু নেতাকর্মীকে গুম করা হয়েছে। এটা কিন্তু বাংলাদেশকে ধ্বংস করার পূর্ব আলামত। 

মির্জা আব্বাস বলেন, যারা এই গুম করেছে, তারা এ দেশের স্বাধীনতা চায়নি, তারা দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব থাকতে দেবে না। বেঁচে থাকি কি না জানি না। দেখবেন সামনে আরও ঘটনা ঘটবে। গণমাধ্যমে খবরে দেখলাম, প্রত্যেক থানার সামনে মেশিনগান ফিট করা হয়েছে, বালুর বস্তা দিয়ে বাঙ্কার করা-এসব কিসের আলামত? কাকে মারার জন্য এসব লাগবে?  

আলোচনা সভায় অংশ নেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। যুবদলের সাবেক সহ-সভাপতি কাইয়ুম চৌধুরীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় অংশ নেন এ জেডএম জাহিদ হোসেন, শামসুজ্জামান দুদু, আসাদুজ্জামান রিপন, খায়রুল কবির খোকন প্রমুখ।

এএইচআর/আরএইচ