সরকার দমন-পীড়নের যন্ত্রকে কাজে না লাগিয়েও টিকে থাকতে পারছে না বলে মন্তব্য করেছেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি।  

শুক্রবার (৫ জানুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে গণতন্ত্র মঞ্চের উদ্যোগে আয়োজিত ‘সরকার ও শাসনব্যবস্থা পরিবর্তনের লক্ষ্যে ঐক্যবদ্ধ হোন, একতরফা ভোট বর্জন করার’ দাবিতে এক বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। 

জোনায়েদ সাকি বলেন, আগামী ৭ তারিখ আওয়ামী লীগ একটি রাজনৈতিক দল হিসেবে তাদের দেউলিয়াত্বের পুরোটা জনগণের সামনে তুলে ধরবে। পাশাপাশি রাষ্ট্রের পুলিশ বাহিনীকে ২৪ ঘণ্টা সতর্কভাবে দাঁড় করিয়ে রাখার নির্দেশ দিয়েছে। তারমানে চিন্তা করুন একটা সরকার ক্ষমতায় আছে পুলিশ বাহিনীকে ২৪ ঘণ্টা সতর্ক অবস্থানে দাঁড় করিয়ে রেখে। বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের জেলে না পুড়ে তারা নিশ্চিন্তভাবে ঘুমাতে পারছে না। সরকারের পায়ের নিচে কোনো মাটি নেই। রাষ্ট্রীয় দমন পীড়নকে তারা চূড়ান্ত করে দিয়েছে। 

সরকারকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, তারা নিজেদের দলের লোকদেরকে মনোনীত নৌকা দিয়েছেন। একই সঙ্গে কিছু দলকে সহযোগী দল বানিয়েছেন। কিন্তু সেগুলো এখন আর রাজনৈতিক দল হিসেবে বিবেচিত হয় না। জাতীয় পার্টিসহ ১৪ দলের যারা এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছেন সেখানে আওয়ামী লীগ ছাড়া অন্য কোনো দলকে রাজনৈতিক দল হিসেবে বিবেচনা করা যাবে না। এরা সবাই আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন। এদেরকে কিছু সিট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এদেরকে পাস করানোর দায়িত্বও প্রধানমন্ত্রী নিজ হাতে নিয়েছেন। তবে পত্রপত্রিকা দেখা যাচ্ছে আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থীদের প্রভাবে ওনারা কেউ জিততে পারবেন না। প্রধানমন্ত্রী যাদেরকে জেতাবেন তাদের নাম রিটার্নিং কর্মকর্তা ঘোষণা করে দেবেন।

তিনি আরও বলেন, ভোটকেন্দ্রে কোনো মানুষ যাবে না সেটা আওয়ামী লীগ ভালো করেই জানে। এজন্যই তারা নিজেদের আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থীকে ডামি করে দাঁড় করিয়েছেন, যাতে করে কিছুসংখ্যক ভোটারকে এনে তারা নির্বাচনে প্রতিযোগিতামূলক দেখাতে চাচ্ছেন। আওয়ামী লীগ যে জাতীয় নির্বাচন করছেন তা ইউনিয়ন পর্যায়ের নির্বাচন থেকে নিকৃষ্ট।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সাহেব বলেছেন, দেশের ৭০ শতাংশ জনগণ আওয়ামী লীগকে ভোট দিতে প্রস্তুত আছে। তার মানে এভাবেই তারা নির্বাচনকে প্রতিযোগিতা ও অংশগ্রহণমূলক দেখাবে। তবে ওনারা যতই ভোটের পার্সেন্টেজ দেখাক, দেশপ্রেমী কোনো মানুষ এই নির্বাচনে ভোট দেবে না। 

জোনায়েদ সাকি বলেন, গদি টিকিয়ে রাখতে আওয়ামী লীগ তাদের সব ধরনের চেহারা জনগণকে দেখাচ্ছে। এই গদি ঢেকে রাখার জন্য দেশ জাহান্নামে যাক তারপরও তারা গদি টিকিয়ে রাখবে। তাই বলতে চাই, এরা বাংলাদেশকে নিয়ে যেভাবে ছিনিমিনি খেলছে তা দেশের জনগণ কোনভাবেই হতে দেবে না। জনগণ আওয়ামী লীগের ভোটকে বর্জন করার মাধ্যমে দেশে গণজাগরণের নতুন এক ধারার সূচনা করবে। এর মাধ্যমে আগামী দিনের বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হবে।

ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব হাবিবুর রহমান নিজুর পরিচালনায় সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন— বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সাইফুল হক, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী অ্যাডভোকেট হাসনাত কাইয়ুম, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন প্রমুখ।

ওএফএ/এমএ