রাজধানীর বহুতল ভবনে ভয়াবহ আগুনে ৪৬ জন নিহতের ঘটনায় সরকার দায় এড়াতে পারে না বলে মন্তব্য করেছেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না ও সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ কায়সার। এই মর্মান্তিক ঘটনার যথাযথ তদন্ত এবং দুর্ঘটনায় কারণ ও সংশ্লিষ্টদের বিচার দাবি করেছেন তারা।

শুক্রবার (১ মার্চ) এক যৌথ শোক বার্তায় তারা এ কথা বলেন।

দলটির শীর্ষ এই দুই নেতা বলেন, এক মৃত্যুকূপে বসবাস করছি আমরা। নিমতলী ও চুড়িহাট্টার পর বেইলি রোড। আর কত মৃত্যুর পর টনক নড়বে রাষ্ট্রের? কিন্তু সরকারের সেদিকে কোনো ভ্রূক্ষেপ নেই। বেইলি রোডের যে ভবনে এই ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে, সেখানে ছিল না অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা এবং একমাত্র সিঁড়ি ছিল গ্যাস সিলিন্ডারে ভর্তি।

কয়েকদিন পর পর জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর বিভিন্ন রেস্তোরাঁয় অভিযান চালায়। এই সিলিন্ডার গুলো কি তাদের চোখে পড়ে না? এ রকম একটা কমার্শিয়াল ভবনে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা নেই, পর্যাপ্ত সিঁড়ি নেই, রাজউক কি তার কোনো খোঁজ-খবর রেখেছে? সরকারের কাজ কি শুধু পাঁচ বছর পর পর নির্বাচনের সার্কাস সাজিয়ে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করা? 

কয়েকদিন পর পরই গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে বলে দাবি করে নাগরিক ঐক্যের শীর্ষ নেতারা বলেন, কিন্তু সিলিন্ডার ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা কিংবা ন্যূনতম সিলিন্ডার টেস্টিংয়ের কোনো ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ নেয়নি সরকার। কারণ সিলিন্ডার গ্যাসের ব্যবসা সরকারের গুটিকয়েক মানুষের হাতে। 

বৃহস্পতিবার রাত ৯টা ৫০ মিনিটের দিকে রাজধানীর বেইলি রোডে অবস্থিত বহুতল ভবনে আগুন লাগে। এতে অন্তত ৪৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া, গুরুতর দগ্ধ হয়েছেন অন্তত ২২ জন। এ ঘটনায় নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

গতকাল রাতে বেইলি রোডের যে ভবনে আগুন লেগেছে, সেটি সাততলা। ভবনের দ্বিতীয় তলায় ‘কাচ্চি ভাই’ নামের খাবারের দোকান রয়েছে। তৃতীয় তলায় একটি পোশাকের দোকান ছাড়া ওপরের তলাগুলোতেও রয়েছে খাবারের দোকান। প্রতিদিন সন্ধ্যার পর থেকে খাবারের দোকানগুলোতে ক্রেতাদের ভিড় হয়। অনেকেই পরিবার নিয়ে সেখানে খেতে যান।

তিনতলায় ছিল কাপড়ের দোকান। বাকি সব ছিল রেস্টুরেন্ট। রেস্টুরেন্টগুলোতে ছিল গ্যাস সিলিন্ডার। যে কারণে আগুনের তীব্রতা ছড়িয়েছে ভয়াবহভাবে।

এএইচআর/কেএ