বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর হাফিজ উদ্দিন বলেছেন, সাকিব আল হাসান ও আমার একটি ছবি নিয়ে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। এটি নিয়ে মনের মাধুরী মিশিয়ে কয়েকটি সংবাদপত্র নানা ধরনের সংবাদ প্রকাশ করছে।

মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) বনানী নিজ বাসভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।

মেজর হাফিজ উদ্দিন বলেন, আমি সামান্য ব্যক্তি। তারপরও ৩৭ বছর ধরে রাজনীতি করছি। দুইবার মন্ত্রী ও ৬ বার এমপি ছিলাম। ওইসব সংবাদে আমার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার অপচেষ্টা লক্ষ্য করছি। দলের নেতাকর্মীরাও এতে বিচলিত হন।

সাকিব আল হাসানের সঙ্গে নিজের ছবির প্রসঙ্গ তুলে ধরে তিনি বলেন, এই ব্যাকগ্রাউন্ড হচ্ছে বাংলাদেশের রাজনীতি অত্যন্ত নোংরা। দেশে কোনো গণতন্ত্র নেই। এখানে নানা ধরনের কলাকৌশল করা হয়। যে দলই ক্ষমতায় থাকে তারা প্রতিপক্ষকে নানান নির্যাতন করে। সেখান থেকে কিছু লোক বাগিয়ে এনে নিজের দলে কিংবা অন্যদলে সন্নিবেশ করে নির্বাচনী বৈতরণি পার হতে চায়।

নিজের জীবন খোলা বইয়ের মতো বলে উল্লেখ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, সেখানে এমন কিছু করিনি যে আমাকে লজ্জিত হতে হবে। আমি সামান্য হলেও আমার এলাকার মানুষ অনেক সম্মান করেছে। ৬ বার নির্বাচিত করেছে।

বিএনএম গঠন করতে পেছন থেকে কাজ করেছেন হাফিজ উদ্দিন আহমেদ আর সাকিব আল হাসান সেই দলে যোগ দিয়েছিলেন গণমাধ্যমে যে সংবাদ প্রকাশ হয়েছে সে প্রসঙ্গে হাফিজ উদ্দিন বলেন, দ্বাদশ নির্বাচনের আগে নতুন দল গঠনের প্রস্তাব পেয়েছি। কিন্তু তা ফিরিয়ে দিয়েছি। ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানকে আমার কাছে নিয়ে আসা হয়েছিল। তবে আমি তাকে নতুন দলে যোগদানের বিষয়ে কোনো উৎসাহ দেইনি।

হাফিজ উদ্দিন বলেন, আমি কী বিএনএমে যোগ দিয়েছি? দল ভেঙেছি?

সামরিক বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কয়েকজন পরিচিত কর্মকর্তা নতুন দল গঠনের পরামর্শ দিয়েছিলেন উল্লেখ করে হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘তাদের বলেছি, রাজনীতিতে কোনো শর্টকাট নেই।’

আরও পড়ুন

তিনি বলেন, সামরিক বাহিনীর তিন চারজন অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তার উদ্যোগে বিএনএম গঠিত হয়। তারাই সাকিব আল হাসানকে আমার কাছে নিয়ে আসেন। সাকিবও রাজনীতিতে যোগদানের ইচ্ছা ব্যক্ত করেন। আমি সাকিবকে বলেছিলাম, রাজনীতি করা আপনার বিষয়। এখনো খেলাধুলা করছেন, রাজনীতি করবে কি না বিবেচনা করে দেখেন। আমার কাছ থেকে উৎসাহ না পেয়ে সে চলে যায়।

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের মাস ছয়েক আগে থেকেই সরকারি দল করা গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা যোগাযোগ করা শুরু করে জানিয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, তারা দেখেছে বিএনপির নীতিনির্ধারণী বিষয়ে আমার মাঝে মাঝে দ্বিমত থাকে। তারা ধরে রেখেছিল যে বিএনপি ত্যাগ করার জন্য আমি উন্মুখ। আমি তাদের বলেছিলাম, আমার পক্ষে ৩২ বছর পর দলত্যাগ করা সম্ভব নয়। আমি শারীরিকভাবে অসুস্থ। শিগগিরই রাজনীতি থেকে অবসর নেব।

‘সরকারি দলের চাপ বাড়তে থাকার মধ্যে একজন মন্ত্রী ঘোষণা দেন যে হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বিএনএমে যোগ দেবেন— বিষয়টি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘পরদিনই আমি সংবাদ সম্মেলন করে বলেছি, বিএনপিতেই থাকব।

বিএনএমের নিবন্ধন নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে হাফিজ উদ্দিন বলেন, আমার কথায় কোন দলকে নিবন্ধন দেওয়া হবে, এটা বাস্তবসম্মত নয়। আপনারা জানেন, কারা এসব করে।

সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিএনপিতে কাউন্সিল হয় না। তা নিয়ে বিভিন্ন সময় পরামর্শ দিয়েছি। কিন্তু বেগম জিয়াকে নিয়ে কখনো কোনো অসৌজন্যমূলক কথা বলিনি।

তিনি আরও বলেন, জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় একটি নির্বাচনের ব্যবস্থা করা গেলে এবং তাতে অংশ নিলে বিএনপির জন্য ভালো হতো। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচনে গেলে বিএনপির জন্য ফলাফল একই হতো।

এএইচআর/ এমএ