প্রখ্যাত রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ড. দিলারা চৌধুরী বলেছেন, কোনো দেশের উন্নয়ন মানে রোড ঘাট, ব্রিজ কালভার্ট আর বড় বড় বিল্ডিংয়ের উন্নয়ন নয়। দেশের উন্নয়ন মানে দেশের মানুষের জীবন মানের উন্নয়ন। উন্নয়নের নামে এই দখলদার আওয়ামী লীগ সরকার দেশকে লুটেরাদের স্বর্গরাজ্যে পরিণত করেছে। 

শনিবার (২৩ মার্চ) আমার বাংলাদেশ পার্টি (এবি পার্টি) আয়োজিত মাসব্যাপী গণ-ইফতারের ১২তম দিনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

ড. দিলারা চৌধুরী বলেন, দেশে চলছে ভুয়া উন্নয়নের মহোৎসব। আওয়ামী লীগ জনগণকে প্রতারিত করে বিগত তিন টার্ম ভোটাধিকার হরণ করে ক্ষমতা দখল করে জনগণকে উন্নয়নের গান শোনাচ্ছে। শুধু কিছু ব্রিজ আর বড় বড় বিল্ডিং করলেই দেশে উন্নয়ন হয় না। উন্নয়ন মানে দেশের মানুষের জীবন মানের উন্নয়ন। মানুষ পনেরো বছরে ভোট দিতে পারেনি, দ্রব্যমূল্যের কারণে খেয়ে পরে জীবন ধারণ কঠিন হয়ে উঠেছে। অথচ সরকার আমাদের উন্নয়নের অসত্য গান শোনাচ্ছে।

তিনি বলেন, যে স্বাধীনতার চেতনার কথা তারা বলে, সেটা বাস্তবায়ন হলে দেশে গরিব থাকার কথা নয়। আজ গরিব মানুষের পড়াশোনা করার উপায় নেই, চিকিৎসার কোনো ব্যবস্থা নেই। এভাবে এই দেশ চলতে পারে না। সবাইকে নিজেদের অধিকার আদায় সচেষ্ট হতে হবে।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন সাবেক রাষ্ট্রদূত সিরাজুল ইসলাম। এবি পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক প্রফেসর ডা. মেজর (অব.) আব্দুল ওহাব মিনারের সভাপতিত্বে ও প্রচার সম্পাদক আনোয়ার সাদাত টুটুলের সঞ্চালনায় গণ-ইফতারে আরও বক্তব্য রাখেন পার্টির যুগ্ম সদস্য সচিব ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ, যুবপার্টির আহ্বায়ক এবিএম খালিদ হাসান, মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আলতাফ হোসাইন ও  সহকারী সদস্য সচিব ব্যারিস্টার নাসরীন সুলতানা মিলিসহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ।

রাষ্ট্রদূত সিরাজুল ইসলাম বলেন, বিগত পনেরো বছর দেশের মানুষ ভোট দিতে পারে না, আমি নিজেও ভোট দিতে পারিনি। 

তিনি জনগণকে উদ্দেশ করে বলেন, ভোট আপনাদের রাজনৈতিক অধিকার। মানুষ যখন রাজনৈতিক অধিকার হারায় তখন তার অন্য কোনো অধিকার আর থাকে না। সরকার যখন ভোট ছাড়াই ক্ষমতা দখল করে তখন আর জনগণের কথা তাদের চিন্তায় থাকে না। এই সরকারেরও একই অবস্থা। ইসরায়েল যেভাবে ফিলিস্তিনদের দমন করছে এই সরকারও তেমনি বিরোধীদলগুলোকে দমন করে ক্ষমতায় টিকে আছে। এখন আমাদের অধিকার আদায়ে ভূমিকা রাখতে হবে। নিজেদের সচেতন হতে হবে। নিজের অধিকার নিজেকেই আদায় করতে হবে। 

ব্যারিস্টার নাসরীন সুলতানা মিলি বলেন, লুটপাট করে কিছু সরকারের তল্পিবাহক ব্যবসায়ী হাজার হাজার কেটি টাকার মালিক হচ্ছেন অথচ দেশের মানুষ খেতে পারছে না। এমপি মন্ত্রীদের ছেলে মেয়েরা বেগম পাড়ায় থাকছে অথচ আমার দেশের মানুষের ঘর নেই। মন্ত্রী, এমপি সচিবরা হাঁচি দিলেই চিকিৎসা নেয় সিঙ্গাপুরে অথচ দেশের মানুষের চিকিৎসার কোনো ব্যবস্থা নেই। সরকারের মন্ত্রীরা বলে দেশের মানুষের কোন সমস্যা নেই, সেইসঙ্গে কিছু দালাল একই সুরে কথা বলে। আসলে এরা জনগণের সরকার নয়।

গণ-ইফতারে আরও উপস্থিত ছিলেন— এবি পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক বিএম নাজমুল হক, সহকারী সদস্য সচিব শাহ আব্দুর রহমান, দক্ষিণের যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুল হালিম খোকন, উত্তরের সদস্যসচিব সেলিম খান, দক্ষিণের যুগ্ম সদস্যসচিব কেফায়েত হোসেন তানভীর, আহমাদ বারকাজ নাসির, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল হালিম নান্নু, ছাত্রপক্ষের আহ্বায়ক মোহাম্মদ প্রিন্স, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মশিউর রহমান মিলু, রুনা হোসাইন, রিপন মাহমুদ, শরণ চৌধুরী, আমেনা বেগম, পল্টন থানা আহ্বায়ক আব্দুল কাদের মুন্সি, যাত্রাবাড়ী থানা সমন্বায়ক সিএম আরিফ, ছাত্রনেতা হাসিবুর রহমান খানসহ কেন্দ্রীয় ও মহানগরীর বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা। 

জেইউ/এমএ