মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর / ফাইল ছবি

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, টিকা সংকটের কারণে করোনা ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ বন্ধ রেখেছে সরকার। তাদের অযোগ্যতা আর ব্যর্থতার জন্যই বিকল্প মাধ্যম থেকে করোনা টিকা সংগ্রহ করা যায়নি। যা গোটা জাতিকে আজ বিপদগ্রস্ত করেছে।  

সোমবার (২৬ এপ্রিল) দুপুরে এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল বলেন, সরকারের একটি উৎস থেকে ভ্যাকসিন সংগ্রহ করার সিদ্ধান্ত যে আত্মঘাতী হতে পারে সে বিষয়ে বিএনপি বরাবর সতর্ক করেছিল। আওয়ামী লীগ তাদের পছন্দমতো চিহ্নিত দুর্নীতিগ্রস্ত প্রতিষ্ঠানকে দায়িত্ব দিয়ে শুধুমাত্র ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটকে দেড়কোটি ভ্যাকসিনের অগ্রিম মূল্য পরিশোধ করে। যদিও এখন পর্যন্ত দুই কিস্তিতে মাত্র ৭০ লাখ ডোজ পেয়েছে বাংলাদেশ। ভারত সরকারের রফতানি বন্ধের সিদ্ধান্তের কারণে সেরাম বাকি ভ্যাকসিন পাঠাতে অপারগতা জানিয়েছে। যার কারণে আজকে জনগণ টিকা পাচ্ছে না। এ জন্য সরকারের পদত্যাগ করা উচিত।

মির্জা ফখরুল বলেন, আজ থেকে টিকার প্রথম ডোজ দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে সরকার। এখন পর্যন্ত টিকা পেয়েছে ৬০ লাখ মানুষ। যারা প্রথম ডোজ টিকা পেয়েছে তারা দ্বিতীয় ডোজ পাবেন কি-না সন্দেহ রয়েছে। যেখানে সাড়ে ১২ কোটি মানুষকে ভ্যাকসিন দিয়ে হার্ড ইমিউনিটি আনা প্রয়োজন। সেখানে আজকে শুধুমাত্র সরকারের অযোগ্যতা, ব্যর্থতা ও নিজের লোকদের সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার জন্য দুর্নীতির আশ্রয় নিয়ে গোটা জাতিকে বিপদে ফেলা হয়েছে। এটা একটা ক্রাইম। এই একটা কারণেই সরকারের পদত্যাগ করা উচিত।      

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা আগেও বলেছি সরকার মানুষের জীবনের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। সরকারের কাজ কী? মানুষকে ন্যূনতম স্বাস্থ্যগত নিরাপত্তা, খাদ্য নিরাপত্তা, জীবনের নিরাপত্তা দিতে হবে। সেখানে আজকে এতো বড় একটা বৈশ্বিক মহামারির মধ্যে সরকার শুধু আর্থিক লাভের জন্য ভুল সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যার কারণে আজকে জনগণ টিকা পাচ্ছে না। আরও ঝুঁকির মধ্যে পড়ছে। যেগুলো অবশ্যই অপরাধমূলক কাজ। এই অপরাধমূলক কাজের জন্য ভবিষ্যতে তাদের বিচারের সম্মুখীন হতে হবে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে খালেদা জিয়ার পরিবারের সদস্যদের ভুয়া ফেসবুক অ্যাকাউন্টের পেছনে সরকারের মদদ আছে দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন,  জনগণ যাতে সত্য  জানতে না পারে এ জন্য তাদের মদদপুষ্ট লোকজনই এসব অ্যাকাউন্ট থেকে মিথ্যা সংবাদ প্রচার করে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন তৈরির মধ্যে দিয়ে সরকার চরমভাবে মানুষের স্বাধীনতা রুদ্ধ করে দিয়েছে। একইসঙ্গে সরকারি দলের লোকজন এ আইনে মিথ্যা মামলা দিয়ে সাংবাদিকদের হয়রানি করছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপি শুরু থেকেই বলে আসছে করোনা ভ্যাকসিনের জন্য শুধুমাত্র ভারতের ওপর নির্ভরশীল না হতে। ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট যে চুক্তি করেছিল তা ভেঙে পড়েছে। এখন নতুন করে চীন, রাশিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেছে সরকার। বর্তমান পরিস্থিতিতে তাদের কাছ থেকে ভ্যাকসিন সংগ্রহ করতে সময় লেগে যাবে ৫-৬ মাস।

হেফাজতের কর্মকাণ্ডের সঙ্গে বিএনপির সম্পর্ক নেই দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপি শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় যাওয়ার দল। বহুবার ক্ষমতায়ও গিয়েছে। আমরা সেইভাবে কাজ করি, শান্তিপূর্ণভাবে কাজ করি। কিন্তু বিএনপির শীর্ষ নেতাদের হেফাজতে ইসলামের বিভিন্ন ঘটনার সঙ্গে জড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।

এএইচআর/এসকেডি/জেএস