ওবায়দুল কাদের/ ফাইল ছবি

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার চিকিৎসার চেয়ে রাজনীতিকেই দলটির নেতারা বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

সোমবার (১০ মে) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ উপ-কমিটির উদ্যোগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঈদ উপহার ও করোনা সুরক্ষা সামগ্রী বিতরণ কর্মসূচিতে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন তিনি। 

ওবায়দুল কাদের বলেন, অবশেষে খালেদা জিয়ার করোনা টেস্ট রিপোর্টে তার আসল জন্মদিনের তথ্য প্রকাশিত হলো।

তিনি বলেন, একাধিক জন্মদিনের নামে জাতিকে এতদিন খালেদা জিয়া অন্ধকারে নিমজ্জিত করে রেখেছিলেন। প্রকৃতপক্ষে তার জন্মদিন করোনা টেস্ট রিপোর্ট অনুযায়ী ৮ মে।

ওবায়দুল কাদের বলেন, দীর্ঘদিন মানুষ অসত্যের সঙ্গে চলতে পারে না। পারে না সত্যকে লুকিয়ে রাখতে। হাতের তালু দিয়ে যেমন আকাশ ঢাকা যায় না, তেমনি সত্যকেও কখনও আড়াল করে রাখা যায় না। পৃথিবীর ইতিহাসে এক নির্মম, বেদনাদায়ক হত্যাকাণ্ড ১৫ আগস্ট। অথচ কতটা নিষ্ঠুর হলে এই দিনে খালেদা জিয়া এতদিন তার ভুয়া জন্মদিন পালন করে আসছিলেন।

তিনি বলেন, ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসে খালেদা জিয়ার ভুয়া জন্মদিন পালন করা জাতির পিতার হত্যাকারীদের উৎসাহিত করা এবং নির্মম হত্যাকাণ্ডকে উপহাস করারই শামিল বলে জনগণ মনে করে। বিএনপির নেত্রী কী পারতেন না শোকাবহ ১৫ আগস্টে ভুয়া জন্মদিনের অনুষ্ঠান না করতে? 

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিভিন্ন সময়ে জন্মদিন পালনকারী খালেদা জিয়ার জন্মদিন বিষয়ক আসল সত্য তিনি নিজেই উন্মোচন করেছেন। ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসে তাকে কেক কেটে উৎসবের সঙ্গে ভুয়া জন্মদিন পালন করতেও দেখেছে জাতি।

তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার মেট্রিকুলেশন সনদ অনুযায়ী জন্মদিন ৯ আগস্ট ১৯৪৫, বিবাহ সনদ ৫ সেপ্টেম্বর ১৮৪৫, পাসপোর্ট সনদ ১৯ আগস্ট ১৯৪৫, আবার দাবি করেন ১৫ আগস্ট ১৯৪৫ তার জন্মদিন। একজন মানুষের এতগুলো জন্মদিন থাকা নিয়ে দীর্ঘদিনের রহস্য এখন নতুন করে তিনিই উন্মোচন করেছেন। অবশেষে করোনা পরীক্ষার জন্য দেওয়া তথ্যে জানা গেল তার জন্মদিন ৮ মে ১৯৪৬।

ওবায়দুল কাদের বলেন, সপরিবারে জাতির পিতার হত্যা দিবসে ভুয়া জন্মদিন পালন করা কতটা নিষ্ঠুর ও বিদ্বেষপ্রসূত রাজনীতির বহিঃপ্রকাশ তা বলার অপেক্ষা রাখে না। বিএনপি নেতারা তার মুক্তি এবং চিকিৎসা নিয়ে এর আগেও রাজনীতি করেছেন, এখনও করছেন। 

তিনি বলেন, আমরা তার রোগমুক্তি অবশ্যই কামনা করি, তার বয়স বিবেচনায় এবং চিকিৎসার সুবিধার্থে শেখ হাসিনা তার সাজা সাময়িক স্থগিত করেছিলেন। বিএনপি নেতারা এখনও খালেদা জিয়ার চিকিৎসার চেয়ে রাজনীতিকেই বেশি মনোযোগ দিচ্ছেন। 

কাদের বলেন, তার (খালেদা জিয়া) বিদেশ যাত্রার ব্যাপারে স্বরাষ্ট্র ও আইনমন্ত্রীর বক্তব্য সবাই জেনেছে, তাই এ নিয়ে নতুন করে কিছু বলার নেই।

মানুষকে করোনায় সচেতন হতে সারাদেশে দলীয় নেতাকর্মীদের ক্যাম্পেইন পরিচালনা করার আহ্বান জানান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। তিনি বলেন, সবাইকে শতভাগ মাস্ক পরিধানসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। ঈদ উৎসব যাতে অন্তিম উৎসবে পরিণত না হয় সেদিকেও সবাইকে খেয়াল রাখার অনুরোধ জানাই। 

ওবায়দুল কাদের বলেন, দেশ-বিদেশে মিডিয়ার একটি অংশ ও কোনো কোনো নেতা প্রতিনিয়ত সরকারের বিরুদ্ধে বিষোদগার করে যাচ্ছে। সরকারের বিরুদ্ধে অন্ধ সমালোচনা করা তাদের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। 

এ সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, ড. আবদুর রাজ্জাক, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী প্রমুখ।

এইউএ/এসএসএইচ/জেডএস