দু-একজন ছাড়া সরকারের অধিকাংশ মন্ত্রী ও এমপি ঈদুল ফিতরে ঢাকায় থাকছেন। একইসঙ্গে ঢাকায় থাকছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের অধিকাংশ শীর্ষনেতা। বিভিন্ন সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবন সূত্রে জানা যায়, আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঈদ করবেন তার সরকারি বাসভবন গণভবনে। করোনার কারণে আনুষ্ঠানিক কোনো কর্মসূচি না থাকলেও ঈদের দিন টেলিফোন ও ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন তিনি। এরই মধ্যে অডিও ও ভিডিও বার্তায় দেশবাসীকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

চলমান করোনাভাইরাস পরিস্থিতি মাথায় রেখে সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। পাশাপাশি দলীয় নেতাকর্মীসহ সবাইকে নিজ নিজ অবস্থানে থেকে ঈদ উদযাপনের আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি। দলীয় প্রধানের এমন নির্দেশনা মেনে অধিকাংশ মন্ত্রী ও নেতা এবার ঢাকায় ঈদ উদযাপন করছেন।

আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা যায়, অনেকে ঈদের আগে নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকায় ঘুরে এসেছেন। অনেকে ঈদের পর যাবেন। আবার কেউ কেউ ঈদের দিন নির্বাচনী এলাকায় অবস্থান করবেন। মন্ত্রীদের মধ্যে কয়েকজন এবং আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের দু-একজন নির্বাচনী এলাকায় ঈদ উদযাপন করবেন।

খোঁজ নিয়ে আরও জানা যায়, মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ নেতাদের মধ্যে যারা রমজান মাসে নির্বাচনী এলাকায় যাননি, তারা ঈদের পর করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হলে এলাকায় যাবেন। ঢাকায় ঈদ করলেও ভার্চুয়াল মাধ্যম ও মোবাইল ফোনে তারা যোগাযোগ রাখছেন নির্বাচনী এলাকার মানুষের সঙ্গে।

জানা যায়, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী ঈদে থাকছেন ঢাকায়। দলটির উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য ও কেন্দ্রীয় ১৪ দলের মুখপাত্র আমির হোসেন আমু ঈদের দিন রাজধানীর ইস্কাটনের বাসায় কাটাবেন। রাজধানীর বনানীর বাসায় ঈদের দিন কাটাবেন উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য তোফায়েল আহমেদ। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের তার সরকারি বাসভবনে ঈদ উদযাপন করবেন।

দলটির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ফারুক খান, কাজী জাফরুল্লাহ, জাহাঙ্গীর কবির নানক ঈদের দিন ঢাকাতেই থাকছেন। যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক  মাহবুব-উল আলম হানিফ, ডা. দীপু মনি, ড. হাছান মাহমুদ ও আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিমও ঢাকায় ঈদ করবেন। তবে ঈদের আগে নির্বাচনী এলাকায় গিয়েছিলেন মাহবুব-উল আলম হানিফ, ড. হাছান মাহমুদ ও বাহাউদ্দিন নাছিম। ঈদের পরে নির্বাচনী এলাকায় যাবেন তারা।

সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, এস এম কামাল হোসেন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আবদুস সবুর, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ড. শাম্মী আহমেদ, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, উপ-দফতর সম্পাদক সায়েম খান ঢাকাতেই থাকছেন। করোনায় আক্রান্ত হয়ে নিজ বাসায় ঈদের দিন কাটাতে হচ্ছে কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলীকে।

তবে, ব্যতিক্রম হিসেবে নিজ নির্বাচনী এলাকা ফরিদপুরের মধুখালীতে থাকছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও ফরিদপুর- ১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মো. আব্দুর রহমান।

মন্ত্রীদের মধ্যে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন, স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক ঈদের দিন ঢাকাতেই থাকছেন। জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেনও ঢাকায় থাকছেন। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম সরকারি বাসভবন ঢাকায় থাকছেন বলে জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. ইফতেখার হোসেন। ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তফা জব্বার ঢাকায় ঈদ করবেন বলে নিশ্চিত করেছেন তথ্য ও জনসংযোগ কর্মকর্তা ম. শেফায়েত হোসেন।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক ঢাকায় ঈদ করবেন বলে জানিয়েছেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য অফিসার মো. কামরুল ইসলাম ভূঁইয়া। শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি ঢাকায় ঈদ করবেন বলে জানান শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা আবুল খায়ের। ঈদের দিন রাজধানীর মিন্টো রোডের সরকারি বাসভবনে থাকবেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। বেসামরিক বিমান ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলীও ঢাকায় ঈদ করবেন।

তবে নিজ নির্বাচনী এলাকা নাটোরের সিংড়ায় থাকছেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের জনসংযোগ কর্মকর্তা শহিদুল আলম মজুমদার জানান, প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বর্তমানে নাটোরে অবস্থান করছেন। ঈদ করে ১৬ তারিখ (মো) বিকেলে ঢাকায় ফেরার সম্ভাবনা রয়েছে তার।

নিজ নির্বাচনী এলাকা কুড়িগ্রামে থাকছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী জাকির হোসেন ও শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।

আগামীকাল শুক্রবার (১৪ মে) দেশব্যাপী মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপন হবে। কিন্তু বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে এবারের ঈদ আনন্দের সবকিছুতেই যেন ভাটা পড়েছে।

এইউএ/জেডএস/এমএআর/