বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, বাংলাদেশ ও অন্তর্বর্তী সরকারকে বিব্রত করার জন্য একটি কুচক্রী মহল কাজ করে যাচ্ছে। সরকারের ভেতরেরই কিছু লোক ড. ইউনূসকে ভুল পথে চালানোর পরিকল্পনা করছে।

তিনি বলেন, আমরা বিএনপি ও অন্যান্য দলগুলো ড. ইউনূসকে সঠিক পথে চালানোর জন্য কাজ করছি। তবে কিছু লোক বিএনপিকে আওয়ামী লীগের সঙ্গে ট্যাগ করার চেষ্টা করছে। দেশের বাইরে কিছু ভ্লগার আছেন, যাদের কাজই হলো বিএনপির ক্ষতি করা।

রোববার (১ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে স্বাধীনতা ফোরাম কর্তৃক আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

মির্জা আব্বাস বলেন, ২১ আগস্ট একটি গ্রেনেড হামলা হয়েছিল, যা পরিকল্পিত একটি বিদেশি শক্তির কাজ ছিল। যাতে বিএনপি কখনো ইনভলভ ছিল না। কিন্তু এউ হামলা ঘিরে একটি মিথ্যা মামলা সাজিয়ে তারেক রহমানকে সাজা দেওয়া হয়। সেই মামলার আজ রায় হয়েছে, যে রায়ে প্রমাণিত হয়েছে যে গ্রেনেড হামলায় তারেক রহমান জড়িত নয়।

তিনি বলেন, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার জন্য ১৭ বছর ধরে আমরা রাজপথে আন্দোলন করে আসছি। তার জন্য হাজার হাজার নেতাকর্মীকে জেলে যেতে হয়েছে। এতো কষ্ট করার পর তাদের জিজ্ঞেস করতে চাই যে, বিএনপির সঙ্গে আপনাদের শত্রুতা কি, কেন আপনারা আওয়ামী লীগের সঙ্গে ট্যাগ করতে চান।

তিনি আরও বলেন, গণতন্ত্র আর আওয়ামী লীগ এই দুটো শব্দ একসঙ্গে যায় না। বিএনপি আর গণতন্ত্র একঙ্গে যায়। কারণ খালেদা জিয়া সবসময় গণতান্ত্রিক উপায়ে ক্ষমতা হস্তান্তর করেছেন। আমরা প্রমাণ করেছি যে আমরা গণতান্ত্রিক দল। শেখ হাসিনা যদি গণতান্ত্রিকভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর করতেন তাহলে দেশের আজ এই দশা হতো না।

আব্বাস বলেন, ২১ আগস্ট একটি গ্রেনেড হামলা হয়েছিল,যা পরিকল্পিত একটি বিদেশি শক্তির কাজ ছিল। যাতে বিএনপি কখনো ইনভলভ ছিল না। কিন্তু এই হামলা ঘিরে একটি মিথ্যা মামলা সাজিয়ে তারেক রহমানকে সাজা দেওয়া হয়। সেই মামলার আজ রায় হয়েছে যে রায়ে প্রমাণিত হয়েছে যে গ্রেনেড হামলার সঙ্গে তারেক রহমান জড়িত নয়। এই মামলায় এজন্য তাকে জেলে থাকতে হয়েছে, সে সময় তিনি অনেক অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। তবে এখন তিনি অনেকটাই সুস্থ হয়েছেন এবং আমরা আশা করছি সহি সালামতে তারেক রহমান দেশে ফিরে আসবেন।

মির্জা আব্বাস বলেন, সবাই বলে বাংলাদেশ ছোট গরিব দেশ। কিন্তু আমি মনে করি বাংলাদেশ উদার ও অনেক শক্তিশালী দেশ। একটা কথা মনে রাখতে হবে আমাদের সোলজার কম। আমি তাদের ভাবতে বলব আমরা একাত্তর সালে ট্রেনিং ছাড়া যুদ্ধ করেছি। ২৪ সালে হাসিনা পতনেও আমরা, আমাদের ছেলে-মেয়েরা বিনা অস্ত্রে যুদ্ধ করেছে। বাংলাদেশে ২০ কোটি লোক কিন্তু সোলজার। যদি আজকে বাংলাদেশ দখল করতে হয় তাহলে ২০ কোটি লোকের রক্ত পাড়া দিয়ে দেশ দখল করতে হবে। 

আওয়ামী লীগ ১৫ বছরে দেশের সব ইতিহাস নষ্ট করেছে উল্লেখ করে মির্জা আব্বাস বলেন, তারা গত ১৫ বছরে সঠিক ইতিহাস নষ্ট করে ফেলেছে। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষক। দেশের সেক্টর কমান্ডারের অফিস ছিল ভারতে। একমাত্র জিয়াউর রহমানের অফিস ছিল সিলেটে। আওয়ামী লীগ স্বাধীনতার ইতিহাস বইয়ে পড়েছে। তারা সরাসরি যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেনি। আমরা সম্মুখ সারির যুদ্ধে সরাসরি অংশগ্রহণ করেছি।

আওয়ামী সরকারের আমলে নির্যাতনের চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, এখনো আমাদের কোর্টে যেতে হয়। কোর্টের বারান্দায় ঘুরতে হবে। আশা করছি সঠিক সময়ে আমরা ন্যায়বিচার পাব। আমার এমন কোনো বছর নেই যে বছর জেলে যেতে হয়নি। মানুষ বলতো ভাই আপনার ঠিকানা কোথায় আমি কোর্ট বা জেল। সেখানে গেলে আমাকে পাবেন। 

আলোচনা সভায় দলের ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু বলেন, শেখ হসিনা সরকার ক্ষমতায় থেকে ইতিহাস বিকৃত করছে,যা ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক আন্দোলনের মাধ্যমে নতুন ইতিহাস সৃষ্টি হয়েছে। 

স্বাধীনতা ফোরামের সভাপতি আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ সভাপতিত্বে সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব আব্দুস সালাম আজাদ, গণঅধিকার পরিষের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান প্রমুখ।

ওএফএ/এমএ