বিএনপিতে সবাই নেতা, কর্মী কেউ নেই বলে মন্তব্য করেছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। তিনি বলেন, বর্তমানে বিএনপিতে শতকরা ৮০ জন নেতা আর মাত্র ২০ জন কর্মী। সবাই স্টেজে বক্তব্য দিতে চান কিন্তু কর্মী হতে চান না।

মঙ্গলবার (৮ জুন) জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি। জিয়াউর রহমানের ৪০তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভার আয়োজন করে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি।

গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, যেদিন সবাই কর্মী হবে, সামনে একজন নেতা হবে, সেদিন গণতন্ত্র মুক্তি পাবে। সেদিন খালেদা জিয়া মুক্তি পাবেন, সেদিন তারেক রহমান দেশে ফিরতে পারবেন। এজন্য বলছি, আসেন আমরা সবাই কর্মী হই, জিয়ার মতো হাঁটি রাস্তায়। দেখি কতক্ষণ সরকার ক্ষমতায় থাকে। আর সবাই যদি নেতা হই তাহলে কিছুই হবে না।

রাষ্ট্রপতি থাকাকালীন জিয়াউর রহমান যে উপহার পেতেন তা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা রাখতেন। আর এখনকার আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের উপহারের ঘড়ি হাতে দিয়ে রাখেন। এখনকার নেতারা মার্সিডিজ গাড়ি ছাড়া চলাচল করেন না। আর জিয়াউর রহমান মাত্র ১৩০০ সিসির গাড়ি ব্যবহার করতেন।

স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান তিন তরকারি দিয়ে ভাত খেতেন। মাছ থাকলে মাংস থাকতো না, মাংস থাকলে মাছ থাকতো না, সঙ্গে ডাল এবং ভাজি দিয়ে খেতেন।

নেতা-কর্মীদের ‘আশাহত’ না হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আন্দোলনে ‘জয়ী হবো’। আমাদের মধ্যে অনেকে বলে, ভাই কিছু হবে? এটা যখনই মনে করবেন তখনই বুঝবেন যে, আপনি শেষ। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান একটা স্লোগান দিচ্ছেন। তা হলো ‘যদি তুমি ভয় পাও তাহলে তুমি শেষ আর তুমি যদি রুখে দাঁড়াও তবেই বাংলাদেশ।’

তিনি আরও বলেন, একজন মানুষ মরে যায় কখন? সে যখন আশা হারায়। আশা নিয়ে আমাদের থাকতে হবে। একটি সত্য আপনাদের মনে রাখতে হবে যে, এই দেশের শতকরা ৯০ জন মানুষ আপনাদের পক্ষে আছে, যেখানেই যাবেন দেখবেন। একটা কথা আমি বলতে পারি, আমরা জয়ী হবই। আমাদের সামনের দিকে এগুতে হবে।

মির্জা ফখরুল বলেন, অনেক সময় নেই, তাহলে আমি আপনাদের দেখাতে পারতাম যে, একজন রিকশাওয়ালা কী বলছে? একজন ঠেলাগাড়ি চালক কী বলছে? গাইবান্ধায় একজন সবজি বিক্রি করে সে কী বলছে? এগুলো কোনো কিছু বানানো নয়, তাদের মনের কথাগুলো তারা বলছে। তারা বলছে এই সরকার আমাদের কী দেখবে? নিজের দেখেই তো কূল কিনারা পায় না। আমাদের তো দেখে না কেউ? আজকে হাজার হাজার কোটি টাকার মেগা প্রজেক্ট করছে। এই যে মহাখালীতে সাততলা বস্তি পুড়ে গেল তাদের জন্য কোনো প্রজেক্ট তৈরি করে না সরকার।

ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মুন্সি বজলুল বাসিত আনজুর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আবদুল আলিম নকির সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুস সালাম, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, কেন্দ্রীয় নেতা আবদুস সালাম আজাদ, শহীদুল ইসলাম বাবুল, যুব দলের সভাপতি সাইফুল আলম নিরব, মহানগর উত্তরের আতিকুল ইসলাম মতিন, জিএম শামসুল হক, এবিএমএ রাজ্জাক প্রমূখ।

এএইচআর/এসকেডি