করোনা প্রতিরোধে অবিলম্বে জনগণের সব অংশকে আগামী তিন মাসের মধ্যে ভ্যাকসিন দেওয়ার দাবি জানিয়েছে ওয়ার্কার্স পার্টি। শুক্রবার (১১ জুন) দলের কেন্দ্রীয় কমিটির ভার্চুয়াল সভায় তুলে ধরা এক প্রস্তাবে এ দাবি জানানো হয়।

দলটির কেন্দ্রীয় কমিটির প্রস্তাবে বলা হয়, করোনা সংক্রমণ রোধে এই মুহূর্তে ভ্যাকসিনই হচ্ছে প্রধান বিকল্প। মাস্ক পরাসহ স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনে অন্য অনুসঙ্গগুলো প্রতিপালন একই সঙ্গে জরুরি। কিন্তু দুর্ভাগ্যক্রমে দেখা যাচ্ছে, বাংলাদেশ প্রথমেই ভ্যাকসিন এনে গণটিকা কার্যক্রম শুরু করতে পারলেও এখন ভ্যাকসিন আনা সম্পূর্ণ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। সরকারি মহল থেকে এ বিষয়ে বিভিন্ন সময়ে নানা আশাবাদ ব্যক্ত করা হলেও বাস্তবে তা দেখা যাচ্ছে না।

কেন্দ্রীয় কমিটির প্রস্তাবে বলা হয়, ভ্যাকসিন সংগ্রহে মাত্র একটি উৎসে নির্ভরতা, একক ব্যক্তি স্বার্থ রক্ষায় অন্য উৎস থেকে ভ্যাকসিন আনায় বাধা দান এবং ভ্যাকসিন নিয়ে রাজনীতি ও কূটনীতি সরকারের প্রাথমিক সাফল্যকে ম্লান করে দেয়নি কেবল, জনগণের জীবন ও জীবিকাকেও ঝুঁকিতে ফেলেছে।

প্রস্তাবে বলা হয়, মানুষের জীবনই প্রধান বিষয়; সেক্ষেত্রে স্বাস্থ্য খাতের দুর্নীতি, ব্যর্থতা ও অদক্ষতা আরেকবার প্রকট হয়ে প্রকাশ পেয়েছে। সীমান্ত জেলাগুলোতে যেখানে বহু আগেই লকডাউন প্রয়োজন ছিল, সেখানে তা না করায় এখন সংক্রমণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ থাকার পরও এখনও অর্ধেকের বেশি জেলায় আইসিইউর কোনো ব্যবস্থা নেই। করোনার সংক্রমণ বৃদ্ধি পেলে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা সম্পূর্ণই ভেঙে পড়বে। 

প্রস্তাবে করোনার সংক্রমণে শিক্ষাব্যবস্থায় যে বিপর্যয় সৃষ্টি হয়েছে তা থেকে উদ্ধার পেতে জরুরি ভিত্তিতে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের ভ্যাকসিনের আওতায় এনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়। সেই সঙ্গে অতিমারির প্রভাবে বিধ্বস্ত দরিদ্র ও শ্রমজীবীদের জন্য খাদ্য সহায়তা প্রদান, ভ্যাকসিনপ্রাপ্তি সহজিকরণ, আগামী ছয় মাস পাঁচ হাজার টাকা নগদ সহায়তা প্রদান ও সামাজিক সুরক্ষার আওতায় সার্বজনীন পেনশন চালুর দাবি জানানো হয়।

রাশেদ খান মেননের সভাপতিত্বে সভায় কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক করোনা অতিমারি মোকাবিলায় জীবন ও জীবিকা রক্ষায় জনগণের পাশে দাঁড়াতে ১৮ দফা নির্দেশনা কর্মসূচি উপস্থাপন করেন।

সভায় করোনা মোকাবিলা এবং জনগণের জীবন ও জীবিকা রক্ষায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে যে ১৮ দফা নির্দেশনা কর্মসূচি দেওয়া হয়েছে তা প্রতিপালনে পার্টির সবস্তরের নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়। ইতোমধ্যে বিভিন্ন জেলায় ‘ভলেন্টিয়ার বাহিনী’ গঠন করে পার্টি স্বাস্থ্য সুরক্ষা কার্যক্রমে নেমে পড়েছে তা অনুসরণ করে অন্যান্য জেলাতেও এই কর্মসূচি গ্রহণের জন্য কেন্দ্রীয় কমিটি সব জেলা কমিটিকে আহ্বান জানাচ্ছে।

এইউএ/এসএসএইচ