২৮ অক্টোবরের হত্যাকাণ্ড ছিল দেশ বিরোধী ষড়যন্ত্রের অংশ: এটিএম মা’ছুম
২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর পল্টন হত্যাযজ্ঞের মাধ্যমে দেশের গণতন্ত্র, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ, স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও রাষ্ট্রীয় অখণ্ডতা ধ্বংসের পথ উন্মুক্ত করা হয়েছিল বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মা’ছুম।
সোমবার (২৭ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে ৪টায় রাজধানীর মগবাজারের আল ফালাহ মিলনায়তনে কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে জামায়াতে ইসলামীর ঢাকা মহানগর উত্তর আয়োজিত ২৮ অক্টোবরের লগি-বৈঠার নির্মম আঘাতে শাহাদাতবরণকারীদের স্মরণে আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।
বিজ্ঞাপন
কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগর উত্তরের নায়েবে আমির আব্দুর রহমান মূসার সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন- কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগর উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগর উত্তরের সহকারী সেক্রেটারি নাজিম উদ্দীন মোল্লা ও ডা. ফখরুদ্দীন মানিক।
উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগর উত্তরের সহকারী সেক্রেটারি ইয়াছিন আরাফাত, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য হেমায়েত হোসাইন, ঢাকা মহানগর উত্তরের প্রচার ও মিডিয়া সেক্রেটারি মু. আতাউর রহমান সরকার, ইঞ্জিনিয়ার নোমান আহমেদি প্রমুখ।
বিজ্ঞাপন
মাওলানা এটিএম মা’ছুম বলেন, ২৮ অক্টোবরের হত্যাযজ্ঞের মাধ্যমে আওয়ামী বাকশালীরা দেশে এক কলঙ্কজনক অধ্যায়ের সূচনা করেছিল। সেদিন ছিল ৪ দলীয় জোট সরকারের মেয়াদপূর্তির দিন। সংবিধান অনুযায়ী একটি নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের মাধ্যমে সে সরকারের অধীনে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠান হওয়ার কথা। কিন্তু অতি তুচ্ছ অজুহাতে আওয়ামী লীগ সাংবিধানিক সে সরকারকে মেনে নিতে রাজি হয়নি, বরং কথিত আন্দোলনের নামে সারাদেশেই এক নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছিল। পরে বিএনপি মহাসচিব আব্দুল মান্নান ভূঁইয়া ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল জলিল সংকট নিরসনে দফায় দফায় বৈঠক করে কোনো সমাধানে উপনীত হতে পারেননি।
তিনি বলেন, এটা ছিল সে সময়ের দেশের বৃহত্তম দুই দলের সবচেয়ে বড় ব্যর্থতা। ফলে ২৮ অক্টোবর নির্মম হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। তারপরও রাষ্ট্রপতি ইয়াজউদ্দীনের নেতৃত্বে একটি তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠিত হয়। কিন্তু আওয়ামী নৈরাজ্য থেমে থাকেনি। একসময় সরকারের উপদেষ্টারা পদত্যাগ করা শুরু করেন। সে সুযোগেই ফখরুদ্দীন-মঈনুদ্দীনরা ১/১১-এর অভ্যুত্থান ঘটাতে সক্ষম হয়।
তিনি বলেন, ১/১১-এর কথিত জরুরি সরকারের কোনো সাংবিধানিক ভিত্তি ছিল না, বরং সে সরকার অদ্ভুত প্রকৃতির বেআইনি সরকার। এ সরকারের কাজই ছিল আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন করা।
ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, ২৮ অক্টোবরের খুনীরা প্রকাশ্য রাজপথে মানুষ হত্যা করেই ক্ষান্ত হয়নি, বরং লাশের ওপর দানবীয় মাতম চালিয়েছে। শহীদরা জীবন দিয়েছেন কিন্তু মাথা নত করেননি। তাদের আত্মত্যাগের মাধ্যমেই ফ্যাসিবাদবিরোধী প্রতিরোধ আন্দোলনের ভিত্তিপ্রস্তর হয়েছিল। ২০২৪ সালে আবু সাঈদ এবং মুদ্ধের মাধ্যমে তা পূর্ণতা পেয়েছে।
সভাপতির বক্তব্যে আব্দুর রহমান মূসা বলেন, পল্টনের শহীদরা আমাদেরকে জীবন দিতে শিখিয়েছে। তাই আমাদের জন্য হতাশার কিছু নেই, বরং শাহাদাতের তামান্না নিয়েই আগামী দিনে নিজেদের করণীয় নির্ধারণ করতে হবে।
জেইউ/এমজে