নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে উঠলে দেশ অস্থিতিশীল হয়ে পড়বে : রাষ্ট্র সংস্কার
দেশের মানুষ যখন নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে আছে, তখন রাজনৈতিক দলগুলোর একাংশের প্রতি অন্যায় আচরণ অন্তর্বর্তী সরকারের নিরপেক্ষতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে উঠলে দেশ অস্থিতিশীল হয়ে পড়বে। দেশের মানুষকে স্বৈরাচারী সরকারের চেয়ে উন্নত জীবন উপহার দেওয়ার সুযোগ হারিয়ে যাবে বলে মন্তব্য করেছে বাংলাদেশ রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন।
একইসঙ্গে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন নিয়ে ঐকমত্য কমিশন যে সুপারিশ দিয়েছে, তা রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সৃষ্ট ঐক্যকে চ্যালেঞ্জের মধ্যে ফেলে দিয়েছে বলে বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ দাবি জানিয়েছে রাষ্ট্র সংস্কারের নেতারা।
বিজ্ঞাপন
সংকট এড়াতে কমিশনকে দ্রুত জুলাই সনদ বাস্তবায়নের সুপারিশগুলো নিয়ে আবারও রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি।
বিবৃতিতে বলা হয়, জুলাই অভ্যুত্থান থেকে উঠে আসা সংস্কার আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নে দীর্ঘ পাঁচ মাস ধরে আলাপ-আলোচনার পর জাতীয় ঐকমত্য কমিশন জুলাই সনদ বাস্তবায়নের সুপারিশ জাতির সামনে উপস্থাপন করেছে। ঐকমত্য কমিশন যে ঐক্যকে সামনে রেখে প্রায় এক বছর ধরে তাদের কার্যক্রম চালিয়ে গেছে, বাস্তবায়নের সুপারিশ সেই ঐক্যকে চ্যালেঞ্জের মধ্যে ফেলেছে।
বিজ্ঞাপন
চ্যালেঞ্জের মূল কারণ হিসেবে বলা হয়, ঐকমত্য কমিশন জুলাই সনদ বাস্তবায়নের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে যেটুকু আলোচনা করেছিল, সেখানে এ প্রস্তাবে উল্লিখিত বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া উপস্থাপন করা হয়নি। বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে সমঝোতায় পৌঁছানোর পর যদি এ প্রস্তাব জাতির সামনে হাজির করা হতো, তাহলে চ্যালেঞ্জ পরিহার করা যেত।
এতে আরও বলা হয়, জুলাই সনদ বাস্তবায়ন নিয়ে আলোচনায় রাজনৈতিক দলগুলো গণভোটের মাধ্যমে পরবর্তী সংসদকে সংবিধানের মৌলিক সংস্কারের জন্য প্রয়োজনীয় গঠনগত ক্ষমতা দেওয়ার বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছেছিল। কিন্তু যেসব প্রস্তাবে কিছু দল আপত্তি জানিয়েছিল, সেগুলো কীভাবে বাস্তবায়ন হবে, সেই বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছানো সম্ভব হয়নি। এমন অবস্থায় সংস্কার প্রস্তাবে লিপিবদ্ধ আপত্তির বিষয়গুলোকে সনদ বাস্তবায়নের সুপারিশ থেকে মুছে দেওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই রাজনৈতিক দলগুলোর ভেতর ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
বাংলাদেশ রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন মনে করে, দ্রুত ওই সুপারিশ থেকে বের হয়ে না এলে রাজনৈতিক দলগুলোর একাংশের ভেতরের যৌক্তিক ক্ষোভ পরবর্তী সময়ে দেশের মানুষের ভেতর ছড়িয়ে পড়বে।
সংকট এড়াতে ঐকমত্য কমিশনকে দ্রুত তাদের সুপারিশগুলো নিয়ে পুনরায় রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার দাবি জানিয়েছে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন। তারা বলেছে, সংবিধান টেকসই ও সর্বজনীন করতে তাড়াহুড়ো থেকে বিরত থেকে আলোচনার মাধ্যমে সমঝোতায় পৌঁছানোই সংবিধান সংস্কারের একমাত্র পথ। ঐকমত্য কমিশন সঠিক বিবেচনাবোধকে গুরুত্ব দিয়ে দেশকে সংকট থেকে মুক্ত রাখবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়।
বিআরইউ