ভোটকেন্দ্র দখলমুক্ত রাখতে পারলে ব্যালটে নীরব বিপ্লব ঘটবে ইসলামের : হেলাল
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের নায়েবে আমির (ঢাকা-৮ আসনে জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী) অ্যাডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন বলেছেন, জনগণ জামায়াতের নেতৃত্বে ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য উন্মুখ হয়ে আছে। ভোটকেন্দ্র দখলমুক্ত রাখতে পারলে ইসলামের পক্ষে নীরব বিপ্লব সংঘটিত হবে।
বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) বিকেলে ঢাকা-৮ সংসদীয় এলাকায় পল্টন-শান্তিনগরে দাঁড়িপাল্লা প্রতীকের গণসংযোগ পূর্ব পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বিজ্ঞাপন
ভোটকেন্দ্র দখলমুক্ত রাখতে প্রশাসনকে সহযোগিতার জন্য সর্বস্তরের নেতাকর্মীকে প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ক্ষমতালোভীরা ভোটকেন্দ্র দখলের চেষ্টা করবে। অস্ত্রের মহড়া দেবে, কালো টাকার ছড়াছড়ি করবে। সব ভয়ভীতি উপেক্ষা করে জনগণের ভোটাধিকার প্রয়োগে সহায়তা করতে হবে। আগামী নির্বাচন জাতির পরবর্তী ভাগ্য নির্ধারণ করবে। এই নির্বাচনে যদি অবৈধভাবে কেউ ক্ষমতা দখল করে, তবে নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ সম্ভব হবে না।
ড. হেলাল উদ্দিন বলেন, নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণের জন্য জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীদের সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করতে হবে। একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানে প্রশাসনকে সহযোগিতা করতে হবে।
বিজ্ঞাপন
প্রশাসনে দলীয়করণ এবং সর্বস্তরে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত ব্যতীত অংশগ্রহণমূলক সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, একটি দলের শীর্ষ থেকে তৃণমূলের নেতারা এখনই মানুষকে হুমকি-ধামকি দিতে শুরু করেছে। তাদের দলীয় প্রতীক ব্যতীত অন্য কোনো মার্কায় ভোট দিলে নিরাপদে বাড়িতে যেতে দেবে না। এমন পরিস্থিতি ও পরিবেশে অংশগ্রহণমূলক সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। তাই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে এখনই সর্বস্তরে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে হবে।
তিনি বলেন, গণমানুষের ৫ দফা দাবি বাস্তবায়িত হলে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন সম্ভব।
গণভোট ও জাতীয় নির্বাচন একই দিনে আয়োজন করার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার জন্য তিনি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, জাতীয় নির্বাচনে কেউ কোনো কারচুপি করলে তার প্রভাব গণভোটের ওপরও পড়বে। ফলে গণভোট এবং জাতীয় নির্বাচন দুটোই প্রশ্নবিদ্ধ হবে। যারা নিজ দলের একটা আহ্বায়ক কমিটি নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে গঠন করতে পারে না, দলীয় নমিনেশন দিয়ে দলীয় শৃঙ্খলা বজায় রাখতে পারে না, তারা জাতীয় নির্বাচনে কারচুপি করবে না, ভোট চুরি চেষ্টা করবে না— এটা জাতি বিশ্বাস করে না। সরকার যদি এমন বিশ্বাস করে, তবে সরকার ভুল করবে।
তিনি বলেন, বর্তমান সমাজ ব্যবস্থা দুর্নীতি-সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজিতে ভয়াবহ ব্যাধিতে রূপ নিয়েছে। ব্যবসায়ী সমাজ সন্ত্রাসী আর চাঁদাবাজদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ। সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য নতুন নেতৃত্বের প্রয়োজন। পুরাতন দুর্নীতিগ্রস্ত নেতৃত্বের পরিবর্তে দুর্নীতিমুক্ত, সন্ত্রাসমুক্ত, চাঁদাবাজমুক্ত সৎ ও দক্ষ নেতৃত্বকে নির্বাচিত করতে হবে। জামায়াতে ইসলামীতে রয়েছে সৎ, যোগ্য, আল্লাহভীরু নৈতিক ও আদর্শিক নেতৃত্ব।
জামায়াতে ইসলাম'র নেতৃত্বে একটি ইসলামিক কল্যাণ রাষ্ট্র গঠন করতে তিনি দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান।
মহানগর কর্মপরিষদ সদস্য ও পল্টন থানা আমির শাহীন আহমেদ খানের সভাপতিত্বে পথসভায় উপস্থিত ছিলেন ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি ও পল্টন থানা সেক্রেটারি মঞ্জুরুল ইসলাম, পল্টন থানা সহকারী সেক্রেটারি এনামুল হক, পল্টন থানা প্রচার ও মিডিয়া সম্পাদক মোহাম্মদ আল-আমীন রাসেল, থানা কর্মপরিষদ সদস্য যথাক্রমে আ.ফ.ম ইউসুফ, নজরুল ইসলাম মজুমদার, শামীম হাসনাইন, মোশাররফ হোসাইন।
জেইউ/এমজে