রাজধানীর বসুন্ধরায় এভারকেয়ার হাসপাতালে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ১৮তম দিনের মতো চিকিৎসা চলছে। তার চিকিৎসার শুরুতে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত এভারকেয়ার হাসপাতালের সামনে দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের ভিড় থাকলেও এখন আর নেতাকর্মীরা সেভাবে ভিড় করছেন না এখানে। মাঝে মাঝে দুই একজন নেতাকর্মীরা আসলেও বাহির থেকেই খোঁজ খবর নিয়ে চলে যাচ্ছেন।

এর আগে নেতা কর্মীদের ভিড় না করতে দলটির পক্ষ থেকে বারবার বলা হলেও তারা শুনছিল না। এতে করে হাসপাতালে আসা অন্য রোগী, স্বজনদের সমস্যা হচ্ছিল। সব দিক বিবেচনা করে আর হাসপাতালের সামনে এখন আর ভিড় করেছে না দলটির নেতা কর্মীরা।

বুধবার (১০ ডিসেম্বর) বসুন্ধরায় এভারকেয়ার হাসপাতালের সামনে সকাল থেকেই নেতাকর্মীদের ভিড় করতে দেখা যায়নি। নেতাকর্মীদের উপস্থিতি না থাকলেও নিরাপত্তায় নিয়োজিত আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য এবং গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত আছেন।

বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে আরও উন্নত চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে নেওয়ার কথা থাকলেও বিভিন্ন জটিলতায় তাকে আর দেশের বাইরে নেওয়া হয়নি। এখানেই চিকিৎসা চলবে তার। তার চিকিৎসা ঘিরে হাসপাতালে ভর্তির প্রথম দিকে নেতাকর্মীদের যেমন ভিড় ছিল, এখন তেমনটি নেই। তবে গণমাধ্যম কর্মীদের সরব উপস্থিতি রয়েছে। এ ছাড়া নিরাপত্তায় নিয়োজিত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা হাসপাতালের সামনে ব্যারিকেড দিয়ে তাদের দায়িত্ব পালন করছেন।

প্রতিদিন এখানে সংবাদ সংগ্রহ করতে আসা বেশ কয়েকজন সংবাদকর্মীদের সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, প্রতিদিন হাসপাতালের সামনে অসংখ্য নেতাকর্মী উপস্থিত হয়ে ভিড় করে রাখতো। তবে সেই তুলনায় এখন হাসপাতালের সামনে, আশপাশে নেতাকর্মীদের তেমন উপস্থিতি নেই। সেই সঙ্গে এখানে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশের পাশাপাশি বিজিবি সদস্যরাও উপস্থিত আছেন।

রাজধানীর মালিবাগ থেকে এভারকেয়ার হাসপাতালের সামনে এসেছেন বিএনপির তিনজন কর্মী। তাদের মধ্যে একজন আব্দুর রাজ্জাক। তিনি বলেন, আগে প্রতিদিন হাসপাতালের সামনে আসতাম, ম্যাডামের শারীরিক অবস্থার খোঁজ খবর নিতে। তবে দলীয় নির্দেশনা মেনে এখন আর হাসপাতালের সামনে ভিড় করি না। আজ একটা কাজে পাশের এলাকায় এসেছিলাম আমরা তিনজন। তাই ভাবলাম একটু খোঁজ নিয়ে যাই। তবে ভিড় না করে এখনই আমরা চলে যাচ্ছি।

এদিকে টানা ১৮ দিন ধরে এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন খালেদা জিয়া। গত ২৩ নভেম্বর রাতে হঠাৎ শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে তাকে ভর্তি করা হয়। সেখানে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তার ফুসফুসে ইনফেকশন ধরা পড়ায় তার অবস্থা সংকটময় বলে বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল সেসময়। এর মধ্যে গত ২৭ নভেম্বর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে সিসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর স্বাস্থ্যের তেমন উন্নতি না হওয়ায় এখনো সিসিইউতে রেখেই চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

দেশি-বিদেশি চিকিৎসকদের সমন্বয়ে গঠিত মেডিকেল বোর্ডের অধীনে চিকিৎসা চলছে খালেদা জিয়ার। পাশাপাশি তার চিকিৎসার দেখভাল করছেন বড় ছেলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী জুবাইদা রহমান। তিনি প্রতিদিনই হাসপাতালে যাওয়া-আসা করে শাশুড়ির চিকিৎসার তদারকি করছেন।

বিএনপির চিকিৎসকদের সূত্রে জানা গেছে, আগের মতোই অপরিবর্তিত আছে খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা। নিয়মিত তার কিডনি ডায়ালাইসিস চলছে। এ ছাড়া ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুস, লিভারসহ অন্য সমস্যাগুলো অপরিবর্তিত রয়েছে।

এএসএস/বিআরইউ