মেডিকেল বোর্ড
হাদিকে সিঙ্গাপুর নেওয়ায় চিকিৎসাগত বাধা নেই, শারীরিক অবস্থারও অবনতি হয়নি
গুলিবিদ্ধ জুলাই যোদ্ধা শরিফ ওসমান হাদিকে সিঙ্গাপুরে নেওয়ার ক্ষেত্রে তার শারীরিক অবস্থায় কোনো চিকিৎসাগত বাধা নেই বলে জানিয়েছে মেডিকেল বোর্ড।
জরুরি বৈঠক শেষে বোর্ড জানায়, হাদির শারীরিক অবস্থার কোনো অবনতি হয়নি এবং প্রয়োজনীয় সব ক্লিনিক্যাল প্যারামিটার স্থিতিশীল রয়েছে।
বিজ্ঞাপন
সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) দুপুর দেড়টায় এভারকেয়ার হাসপাতাল গেটে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এসব তথ্য জানান ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিউরো সার্জন ও হাদির চিকিৎসায় যুক্ত ডা. আব্দুল আহাদ।
তিনি জানান, মেডিকেল বোর্ড সর্বশেষ অবস্থা মূল্যায়ন করে দেখেছে যে রোগীর শারীরিক অবস্থায় নতুন করে কোনো অবনতি হয়নি। কিডনি ফাংশন স্বাভাবিকভাবে কাজ করছে এবং শরীরের কোনো অর্গানে নতুন করে সংক্রমণের লক্ষণ পাওয়া যায়নি।
বিজ্ঞাপন
হাদির শারীরিক অবস্থা ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ডা. আহাদ বলেন, প্রথম দিন যেই অবস্থায় রোগীকে আমরা রিসিভ করেছি, এখনও মূলত সেই একই অবস্থায় আছে। অবস্থার উন্নতি হয়নি, আবার খারাপের দিকেও যায়নি।
তিনি জানান, হাদির মস্তিষ্কে ইডেমা বা ফোলা আগের তুলনায় বেড়েছিল এবং সেই ইডেমা এখনও কমেনি। ব্রেনে অক্সিজেনের স্বল্পতা ছিল এবং সেই অবস্থার ধারাবাহিক প্রভাব এখনো বিদ্যমান। ইডেমার কারণে ব্রেনের স্কেমিক পরিবর্তন আরও প্রকট হতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে। নতুন করে কোনো সিটি স্ক্যান না হওয়ায় ইডেমার বর্তমান মাত্রা নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে না। তবে পিউপিল রেসপন্সসহ ব্রেন ফাংশনের যে ক্লিনিক্যাল সাইনগুলো দেখা হয়, সেগুলোতে উল্লেখযোগ্য কোনো পরিবর্তন দেখা যায়নি।
নিউরোসার্জিক্যাল আউটকাম প্রসঙ্গে ডা. আহাদ বলেন, একজন নিউরোসার্জন হিসেবে খুব বেশি আশার জায়গা আপাতত দেখা যাচ্ছে না। তার নিউরোসার্জিক্যাল রেসপন্স প্রথম দিনের মতোই রয়েছে।
আশাবাদ ব্যক্ত করে ডা. আহাদ বলেন, অতীতে গুলিবিদ্ধ রোগীদের ক্ষেত্রে এমন অনেক উদাহরণ রয়েছে, যেখানে চিকিৎসাবিজ্ঞানের পূর্বানুমান অতিক্রম করে রোগী সুস্থ হয়ে উঠেছে। তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজে চিকিৎসা পাওয়া কিছু রোগীর উদাহরণ দিয়ে বলেন, মিরাকেল কখনো কখনো হয়। আমরা সেই আশাটুকু ধরে আছি।
চিকিৎসা ব্যয় প্রসঙ্গে ডা. আহাদ জানান, সরকারের উচ্চপর্যায়ের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী সাইদুর রহমানের সঙ্গে কথা বলে তিনি নিশ্চিত হয়েছেন যে এখন থেকে হাদির চিকিৎসার পুরো ব্যয়ভার সরকার বহন করবে। পাশাপাশি ইতোমধ্যে যারা তার চিকিৎসার জন্য অর্থায়ন করেছে, সরকার তাদের সেই খরচও ফেরত দেবে বলে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
হাদির সঙ্গে তার পরিবারের দুই সদস্য সিঙ্গাপুরে যাচ্ছেন। বাংলাদেশ থেকে কোনো চিকিৎসক তার সঙ্গে যাচ্ছেন না। এভারকেয়ার হাসপাতালের মেডিকেল বোর্ড আনুষ্ঠানিকভাবে সিঙ্গাপুরের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের কাছে রোগীকে হ্যান্ডওভার করেছে।
তিনি বলেন, হাদি লড়াই করছে এবং এই দেশের জন্য তার ফিরে আসা খুব প্রয়োজন। দেশবাসীর দোয়া ও আশাই এখন সবচেয়ে বড় শক্তি।
টিআই/এমএসএ