৬ হাজার ৩১৪ দিন পর ঢাকায় পৌঁছালেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তাকে বহনকারী উড়োজাহাজটি বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) বেলা ১১টা ৪০ মিনিটে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।

ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার পর বিমানবন্দরের ভিআইপি লাউঞ্জে প্রথমে ফুল দিয়ে তারেক রহমানকে স্বাগত জানান দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। পরে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মির্জা ফখরুল ও স্থায়ী কমিটির সদস্যদের সঙ্গে একে একে আলিঙ্গন করেন। এ ছাড়া উপস্থিত নেতাদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন তিনি।

পরে তিনি কুশল বিনিময় করেন শাশুড়ি সৈয়দা ইকবাল মান্দ বানুর সঙ্গে। এসময় মেয়ের জামাইকে গোপাল ফুলেল মালা পরিয়ে বরণ করেন তিনি।

বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) বেলা ১১টা ৫৫ মিনিটে বিমানবন্দরে এ চিত্র দেখা যায়। দেখা যায়, সৈয়দা ইকবাল মান্দ বানু বিমানবন্দরে একটি সোফায় বসে রয়েছেন। পরে তারেক রহমান কুশল বিনিময় করতে এলে তিনি ফুলের মালা দিয়ে বরণ করে নেন তাকে। এরপর দুজন কুশল বিনিময় করেন। পরে তারেক রহমানের মেয়ে ব্যারিস্টার জাইমা রহমান নানীকে জড়িয়ে ধরে কুশল বিনিময় করেন।  সৈয়দা ইকবাল মান্দ বানুর সঙ্গে সোফায় বসে তার মেয়ে, মেয়ের জামাই ও নাতনি কিছুক্ষণ কথা বলেন।

এর আগে যুক্তরাজ্যের লন্ডন থেকে রওনা হয়ে সকাল ৯টা ৫৫ মিনিটে তারেক রহমানকে বহনকারী উড়োজাহাজটি সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। সেখানে কিছু সময় যাত্রা বিরতি নিয়ে বেলা ১১টা ১২ মিনিটে ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা শুরু করে।

তারেক রহমানকে বহনকারী বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার বিজি-২০২ ফ্লাইটটি স্থানীয় সময় বুধবার সন্ধ্যা ৬টা ১৫ মিনিটে লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দর থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হয়।

বিএনপি মিডিয়া সেলের অন্যতম সদস্য শায়রুল কবির খান জানান, বিমানবন্দর থেকে তারেক রহমান লাল ও সবুজ রঙে সজ্জিত একটি বিশেষ বুলেটপ্রুফ বাসে করে এভারকেয়ার হাসপাতালে যাবেন। বাসটিতে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান, চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের প্রতিকৃতি এবং ‘সবার আগে বাংলাদেশ’ স্লোগান রয়েছে। পথে তিনি একটি সংবর্ধনা কর্মসূচিতে অংশ নেবেন।

এ উপলক্ষ্যে বিএনপি ৩৬ জুলাই এক্সপ্রেসওয়ে, যা ৩০০ ফিট সড়ক নামে পরিচিত, সেখানে একটি সংক্ষিপ্ত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। অনুষ্ঠানে তারেক রহমান দেশবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাবেন, ধন্যবাদ জানাবেন এবং মহান আল্লাহর দরবারে দোয়া করবেন। এরপর তিনি এভারকেয়ার হাসপাতালে যাবেন। সেখান থেকে পরে তিনি গুলশান অ্যাভিনিউয়ে মা খালেদা জিয়ার বাসভবনে ফিরোজার পাশের ১৯৬ নম্বর বাসায় যাবেন।

২০০৭ সালে ১/১১ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় তারেক রহমান গ্রেপ্তার হন। এক বছর কারাভোগের পর ২০০৮ সালে তিনি মুক্তি পান এবং চিকিৎসার জন্য স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমান ও কন্যা জাইমা রহমানকে সঙ্গে নিয়ে লন্ডনে যান। এরপর থেকে বিএনপির এই শীর্ষ নেতা লন্ডনে নির্বাসিত জীবনযাপন করে আসছিলেন।

এদিকে, দেশের আকাশসীমায় প্রবেশের পর তারেক রহমান তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্ট লেখেন, ‘দীর্ঘ ৬ হাজার ৩১৪ দিন পর বাংলাদেশের আকাশে!’

এমএসি/এসএসএইচ