দেশে কোনো যুবক বেকার থাকবে না এবং কাউকে বেকার ভাতাও নিতে হবে না– এমন কর্মসংস্থানমুখী রাষ্ট্র গড়ার অঙ্গীকার করেছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। 

তিনি বলেন, ‘যুবকরা কারো কাছ থেকে বেকার ভাতা গ্রহণ করুক, তা আমরা দেখতেও চাই না, শুনতেও চাই না। আমরা প্রতিটি যুবকের হাতকে দেশ গড়ার কারিগরের হাতে পরিণত করতে চাই। প্রত্যেকটি হাতে কাজ তুলে দিতে চাই। বেকার ভাতা নয়, বেকার ভাতার পরিবর্তে এরাই দেশের সব ক্ষেত্রে বিপ্লব সাধন করবে, সেই বিপ্লবের বাণী তাদের মুখে পৌঁছে দিতে চাই।’

শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) রাজধানীর বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের ‘কেন্দ্রীয় সদস্য সম্মেলন-২০২৫’-এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি সাদ্দাম হোসেনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে জামায়াতের শীর্ষ নেতারাসহ দেশ-বিদেশের বরেণ্য অতিথিরা উপস্থিত ছিলেন।

ডা. শফিকুর রহমান তার বক্তব্যে ২৪-এর গণ-অভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপট স্মরণ করে বলেন, ১৯৪৭ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত দীর্ঘ লড়াই ও ত্যাগের বিনিময়ে আজকের বাংলাদেশ অর্জিত হয়েছে। 

তিনি বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্র আব্দুল মালেক থেকে শুরু করে সর্বশেষ বিপ্লবী শরীফ উসমান হাদি পর্যন্ত অনেকের রক্তের কাছে আমরা ঋণী। ছাত্রশিবির এখন আর সাধারণ কোনো সংগঠন নয়; চব্বিশের বিপ্লব-পরবর্তী সময়ে ছাত্রসমাজ তাদের ভালোবাসার মাধ্যমে এই সংগঠনকে ছাত্রসমাজের অভিভাবকের দায়িত্ব দিয়েছে।’

গত ৫৪ বছরে ছাত্রদের হাতে কলমের বদলে অস্ত্র তুলে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেন জামায়াত আমির। তিনি বলেন, ‘শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো মিনি ক্যান্টনমেন্টে পরিণত হয়েছিল, যেখানে মেয়েদের ইজ্জত বা ছাত্রদের ক্যারিয়ারের কোনো নিশ্চয়তা ছিল না। সেই কালো অধ্যায় বিদায় নিতে শুরু করলেও এর ছায়া এখনো রয়ে গেছে। এই কালো ছায়া পুরোপুরি দূর না হওয়া পর্যন্ত লড়াই অব্যাহত রাখতে হবে।’ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মাদক ও অস্ত্র নির্মূল করে শিক্ষক-ছাত্রের মধ্যে ‘পিতা-পুত্রের’ সম্পর্ক ফিরিয়ে আনার আহ্বান জানান তিনি।

তৃণমূল কর্মীদের উদ্দেশে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘তোমাদের কাঁধে অসংখ্য শহীদের লাশ এবং ১৮ কোটি মানুষের প্রত্যাশার বোঝা। ইনসাফ কায়েমের লক্ষ্যেই ছাত্রসমাজ শিবিরকে ভোট দিয়ে বিজয়ী করেছে। কুরআন ও সুন্নাহর ভিত্তিতে একটি দুর্নীতিমুক্ত, বৈষম্যহীন ও মানবিক বাংলাদেশ গড়ার জন্য তোমাদের দক্ষ কারিগর হিসেবে তৈরি হতে হবে।’

সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন– জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমান, সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান ও মাওলানা আব্দুল হালিমসহ দলের নির্বাহী পরিষদের সদস্যবৃন্দ। এ ছাড়া জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে শরিক আটটি রাজনৈতিক দলের নেতারাও অনুষ্ঠানে অংশ নেন।

জেইউ/বিআরইউ