প্রায় বছরখানেক ধরে ঢাকা-১১ সংসদীয় আসনে চষে বেড়িয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী আতিকুর রহমান। কড়া নাড়ার চেষ্টা করেছিলেন প্রত্যেক ভোটারের দরজা। কিন্তু মাঝপথে এসে ছাড়তে হলো নির্বাচনী মাঠ। জোটে আসা জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামকে শুভকামনা জানিয়ে এ আসন থেকে সরে দাঁড়ান জামায়াতের এই প্রার্থী।

রোববার (২৮ ডিসেম্বর) মাঝ রাতে নিজের ফেসবুক পেজে এক পোস্টে এ ঘোষণা দেন তিনি। আতিকুর রহমান শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

পোস্টের শুরুতেই নাহিদ ইসলামের জন্য শুভকামনা জানিয়ে আতিকুর রহমান লেখেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ। ছুম্মা আলহামদুলিল্লাহ। দীর্ঘ ১০ মাস ২২ দিন পর আজ এক বড় জবাবদিহিতার জিম্মাদারি থেকে মুক্তি পেলাম। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসের ৬ তারিখে সংগঠনের সিদ্ধান্তের পর থেকে ঢাকা-১১ সংসদীয় আসনকে ইসলামী আন্দোলনের পক্ষে জনমত তৈরি করার জন্য সাধ্যমতো প্রচেষ্টা চালিয়েছি। ব্যক্তি, পরিবার, পেশাগত দায়িত্ব সবকিছুর ঊর্ধ্বে ময়দানে ভূমিকা ও জনগণের পাশে থাকার চেষ্টা করেছি। আলহামদুলিল্লাহ, সবার আন্তরিক প্রচেষ্টার কারণে ঢাকা-১১ সংসদীয় আসনে জামায়াতে ইসলামী ও দাঁড়িপাল্লার পক্ষে সব শ্রেণি-পেশার মানুষের ব্যাপক সমর্থন তৈরি হয়েছে। যা সর্বশেষ জরিপে উঠে এসেছে।’

তিনি বলেন, ‘আমি ঢাকা-১১ (রামপুরা-বাড্ডা-ভাটারা-হাতিরঝিল আংশিক) সংসদীয় আসনের সব শ্রেণি-পেশার মানুষের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। আপনারা এ স্বল্প সময়ে আমাকে আপনাদের আপনজন হিসেবে গ্রহণ ও অভূতপূর্ব ভালোবাসায় আবদ্ধ করেছেন। মহান রাব্বুল আলামিন আপনাদের সবাইকে সামগ্রিক কল্যাণ দান করুন, ভালো ও নিরাপদে রাখুন। আমিন।’

এতে আরও উল্লেখ করা হয়, ‘আমার সঙ্গে এই পথচলা সব সহযাত্রীর প্রতিও আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। এই সময়ে অনেকেই অবর্ণনীয় কষ্ট ও ত্যাগ স্বীকার করেছেন। রাত জেগে পোস্টার লাগিয়েছেন। ঘণ্টার পর ঘণ্টা একসঙ্গে হেঁটেছেন। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন সবাইকে উত্তম প্রতিদান দান করুন। আমিন।’

আতিকুর রহমান বলেন, ‘আমার সহযাত্রী বোনদের প্রতিও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। যারা জনমত গঠনে অনেক কষ্ট ও ত্যাগ স্বীকার করেছেন। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন আপনাদেরও উত্তম জাযা দান করুন। এ সময়ে আমার ইচ্ছা বা অনিচ্ছায় কেউ কষ্ট পেয়ে থাকলে আন্তরিকভাবে ক্ষমা প্রার্থী। আমরা সবাই সংগঠনের সিদ্ধান্তের প্রতি পরিপূর্ণ আনুগত্য এবং আস্থাশীল। ইনসাফের বাংলাদেশ গড়তে আমরা একযোগে কাজ করব ইনশা আল্লাহ। মহান রাব্বুল আলামিন আমাদের সব প্রচেষ্টা তার সন্তুষ্টি এবং দ্বীন বিজয়ের জন্য কবুল করুন। আমিন।’

পোস্ট দেওয়ার পরই আতিকুর রহমানের শুভানুধ্যায়ী ও অনুরাগীরা মন্তব্যের ঘরে আবেগঘন নানান মন্তব্য করেন। কেউ তার ত্যাগের কথা আবার কেউ উদারতার বর্ণনা দেন।

রাব্বি ইসলাম নামের একজন লেখেন, ‘আপনি যে উদারতা, ত্যাগ করেছেন, তা আমরা ভুলতে পারবো না। মহান রব আপনাকে উত্তম প্রতিদান দান করুন। আশাকরি আপনি এই আসনে লেগে থাকবেন, ইনশাআল্লাহ ঢাকা-১১ হবে জামায়াতে ইসলামীর অন্যতম ঘাঁটি। দোয়া এবং ভালোবাসা অবিরাম।’

আপন প্রধান লিখেছেন, আতিক ভাইয়ের ভালোবাসা আমার চোখের পানি ঝরিয়ে দিয়েছে। কিছু করার নেই আনুগত্য করতেই হবে। আলহামদুলিল্লাহ।

উল্লেখ্য, জামায়াত নেতৃত্বাধীন আট দলীয় জোটে নতুন করে এলডিপি ও এনসিপি যুক্ত হয়। এদিন বিকেলে জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে দল দুটির নাম ঘোষণা করেন জামায়াত ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। সমঝোতার মাধ্যমে নির্বাচন করায় ঢাকা-১১ আসনে নাহিদ ইসলামকে চূড়ান্ত প্রার্থী ঘোষণা করা হয়।

এমআরআর/এমএন