দোষ স্বীকার করে রাষ্ট্রপতি অথবা সরকারের কাছে ক্ষমা চাওয়া ছাড়া আইনে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক। 

বুধবার (৩০ জুন) জাতীয় সংসদের ছাঁটাই প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ কথা জানান। 

এর আগে বিএনপির দলীয় সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদ তার ছাঁটাই বক্তব্যে দলটির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশ যেতে অনুমতি দেওয়ার জন্য দাবি করেন।

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, ওনারা কথায় কথায় বলেন খালেদা জিয়াকে বিদেশ পাঠাতে। প্রথমে পরিবারের সদস্যরা তার জন্য দরখাস্ত করলেন। আমার দেখা দরখাস্তে এটা কোনো ধারায় ছিল না। ওনারা দরখাস্তের মধ্যে বলেছিলেন ওনাকে বিদেশ নিয়ে যেতে হবে। এটা ঠিক। আমরা (স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ) যখন অনুমতি দিলাম প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় তখন দুটি শর্ত দিয়েছিলাম। একটা হচ্ছে তিনি বাসায় থেকে চিকিৎসা নেবেন। আরেকটা হচ্ছে তিনি দেশে থেকে চিকিৎসা নেবেন।

তিনি বলেন, এটাকে ৪০১ ধারার দরখাস্ত হিসাবে ট্রিট করে এই দুই শর্তে শাস্তি স্থগিত রেখে তাকে মুক্ত করে দিলাম। মুক্তি দেওয়া হয়েছে। এটা তারা গ্রহণ করেছিল। গ্রহণ করে এটা কার্যকর করে জেলখানা থেকে বাসায় নিয়ে গিয়েছিল। একটা দরখাস্ত যখন গ্রহণ হয়ে যায়, সেই দরখাস্ত কি আবার পুনর্বিবেচনা করা যায়? ওনারাতো এই কথাটা বলেই ওনাকে মুক্ত করে এনেছেন। তারপর এখন বলেছেন বিদেশ যেতে চান, আবার দরখাস্ত। এটা কি রকম? ওই দরখাস্ততো শেষ। ওই দরখাস্তের উপরতো কেউ কিছু করতে পারবে না। ৪০১ এর দরখাস্ত গ্রহণ করা হয়েছে। এর পরে আর কোনো দরখাস্ত করা যায় না।

বিএনপির সংসদ সদস্যদের আইন পড়ার পরামর্শ দিয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, আইনটা পড়েন। আইনের ৬টা সাবসেকশন আছে। এর মধ্যে কোথাও থাকে, আপনি আবার দরখাস্ত করতে পারবেন, আবার পুনর্বিবেচনা করতে পারবেন। তাহলে আমি আর আইন পেশায় থাকব না।

আইনমন্ত্রী বলেন, এখানে বলা আছে শর্ত বা শর্ত ছাড়া। আর চিকিৎসা। উনি (খালেদা জিয়া) এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। ওনার অবস্থা অত্যন্ত খারাপ ছিল। সেখানে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। চিকিৎসা পাননি কোথায়? চিকিৎসা পান নাই এটা বলতে পারেন যারা হাসপাতালে ভর্তি হতে পারে না। যাদেরকে আমরা বাধাগ্রস্ত করি। এমন নজির তারা দেখাতে পারবে না। তাহলে চিকিৎসা পাননি এটা কেন বলছেন। নিরর্থক শুধু রাজনৈতিক স্টানবাজি।

আনিসুল হক বলেন, যদি কোনো সাজাপ্রাপ্ত আসামিকে মুক্ত করতে হয় তাহলে একমাত্র আইনের মাধ্যমেই করতে হবে। আরেকটা আছে রাষ্ট্রপতি বা প্রধানমন্ত্রীর কাছে ক্ষমা চাইতে পারেন। তারা যদি বিবেচনা করেন তাহলে মুক্তি পেতে পারেন। ক্ষমা চাইতে গেলে অবশ্যই দোষ স্বীকার করে।

এইউএ/জেডএস