সরকার করোনায় সংক্রমণ ও মৃত্যুর প্রকৃত সংখ্যা দিচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, সরকার উদ্দেশ্যমূলকভাবে সংক্রমণ ও মৃত্যুর সংখ্যার প্রকৃত চিত্র না দিয়ে অসত্য তথ্য দিচ্ছে।

রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন তিনি।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, হাসপাতালে সংবাদকর্মীদের তথ্য সংগ্রহের ক্ষেত্রে বিভিন্ন বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টে মামলার ভয়ে সংবাদকর্মীরা প্রকৃত তথ্য তুলে ধরতে পারছেন না।

ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব আশংকাজনক হারে বৃদ্ধি পাওয়ায় পরিস্থিতি আরও জটিল আকার ধারণ করেছে উল্লেখ করে ফখরুল অবিলম্বে এই পরিস্থিতির পরিবর্তনের জন্য সরকারকে কার্যকরী ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান।

মির্জা ফখরুল বলেন, ভারতীয় ডেল্টা ভেরিয়েন্ট সারা দেশে ভয়াবহভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। সংক্রমিতের সংখ্যা এবং মৃত্যুর সংখ্যা আশংকাজনক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। মানুষ পরীক্ষার জন্য জেলা হাসপাতাল ও পরীক্ষা কেন্দ্রগুলোতে ভিড় করলেও সরকারের অব্যপস্থাপনার কারণে বেশিরভাগ আক্রান্ত মানুষ টেস্ট করতে পারছেন না।

চিকিৎসা না পেয়ে হাসপাতালে ঘুরে ঘুরে মানুষের মৃত্যু হচ্ছে বলেও অভিযোগ তোলেন ফখরুল। তিনি বলেন, জেলা হাসপাতালগুলোতে পরিস্থিতি উন্নত করার কোনো প্রচেষ্টা সরকারের নেই। অন্যদিকে ঢাকায় কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালগুলোতে অতিরিক্ত রোগীর চাপে চরম অব্যবস্থপনা দেখা দিয়েছে।

করোনার শুরু থেকেই স্বাস্থ্য অধিদফতর করোনা টেস্টের ক্ষেত্রে চূড়ান্তভাবে ব্যর্থ হচ্ছে বলে দাবি করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, দেশের মানুষের কাছে সঠিক তথ্য প্রকাশিত হচ্ছে না। অন্যদিকে সংক্রমিত ব্যক্তিরা হাসপাতালে কোনো বেড পাচ্ছে না। করোনা সংক্রান্ত জটিল রোগী ও শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত ব্যক্তিরা অক্সিজেন-আইসিইউ বেড পাচ্ছে না।

মির্জা ফখরুল বলেন, সব নাগরিককে টিকা দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক টিকা সংগ্রহ, সংরক্ষণ ও বিতরণের সুনির্দিষ্ট রোড ম্যাপ সরকার এখন পর্যন্ত জনগণের সামনে দিতে পারেনি। সরকার অবলীলায় জনগণকে ভুল তথ্য দিয়ে প্রতারণা করছে। তারা বলছে, প্রতি সপ্তাহে ৬০ লাখ টিকা প্রদানের ব্যবস্থা করা হবে, অথচ গত ৭ মাসেও ৬০ লাখ টিকা দিতে পারেনি সরকার।

টিকা প্রাপ্তির কোনো নিশ্চয়তা ছাড়াই সরকার প্রতি মাসে ১ কোটি টিকা প্রদানের ঘোষণা দিয়েছে দাবি করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, এটা জনগণের সঙ্গে প্রতারণা ছাড়া কিছুই নয়। প্রতি মাসে ১ কোটি টিকা প্রদানের জন্য টিকা প্রাপ্তির উৎস সরকার এখন পর্যন্ত জানাতে পারেনি। স্বাস্থ্যমন্ত্রীর এসব উক্তি এখন হাস্যকর হয়ে গেছে। এগুলো যে ফাঁকা বুলি এটা বুঝতে আর বাকি নেই।

এএইচআর/এনএফ/জেএস