চলমান বিধিনিষেধ তুলে দিয়ে সবার জন্য করোনাভাইরাসের টিকা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছে এবি পার্টি। দলটির এক আলোচনায় অংশ নিয়ে বক্তারা বলেন, করোনা নিয়ে জনগণকে সরকার সচেতন করতে পারেনি। বিধিনিষেধও ব্যর্থ হয়েছে। তাই এখন সবাইকে টিকার আওতায় আনতে হবে। স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার ব্যবস্থা নিতে হবে।

শুক্রবার (৬ আগস্ট) সন্ধ্যায় ‘করোনা পরিস্থিতি পর্যালোচনা ও জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা’ শীর্ষক এক ওয়েবিনার আয়োজন করে এবি পার্টি।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সাবেক উপদেষ্টা প্রফেসর ডা. মোজাহেরুল হক বলেন, করোনার ইন্ডিয়ান ভ্যারাইটি আমাদের জন্য সবচেয়ে বেশি আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। করোনা নিয়ন্ত্রণের একটি বৈজ্ঞানিক উপায় ছিল বিধিনিষেধ, কিন্তু আমাদের দেশে যে বিধিনিষেধ চলছে তা পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে। বিধিনিষেধ ব্যর্থ হওয়ার অন্যতম কারণ হলো সাধারণ মানুষকে সম্পৃক্ত করতে না পারা। এ ধরনের মহামারি থেকে রক্ষা পেতে প্রধান কাজ ছিল জনগণকে সচেতন করা, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ অনুযায়ী তাদের সম্পৃক্ত করা। কিন্তু সরকারের একগুঁয়েমি ও গোয়ার্তুমির জন্য করোনা প্রতিরোধক সব কার্যক্রমে জনসাধারণ সম্পৃক্ত হয়নি। এখন একটিই উপায় রয়েছে বয়স ও ঝুঁকিপূর্ণ পেশা বিবেচনায় সবাইকে টিকার আওতায় নিয়ে আসতে হবে।

নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, শ্রমিকদের টিকার আওতায় আনার দাবি আমাদের জোরালো করতে হবে। টিকা নিয়েও সরকার নানা টালবাহানা করছে। রাশিয়া ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর সঙ্গে যোগাযোগ করে স্বল্প ব্যয়ে টিকা দিতে আগ্রহী হয়েছিল কিন্তু সরকারের টালবাহানায় সেটাও পাওয়া সম্ভব নয়।

গণফোরামের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ড. রেজা কিবরিয়া বলেন, সরকার গড ফাদার আনুকূল্যের সরকার। বৈষম্যের চরম অবস্থা তারা সৃষ্টি করেছে। দেশের অর্থনৈতিক ধারাবাহিকতা বজায় রাখার স্বার্থে সর্বপ্রথম উচিত ছিল শ্রমজীবী মানুষদের টিকার আওতায় আনা এবং কর্মজীবী মানুষদের দু’বেলা দুমুঠো খাবারের ব্যবস্থা করা। বিশেষ করে স্বাস্থ্য বিভাগের ঝুঁকিপূর্ণ পেশায় নিয়োজিত ডাক্তার, নার্সদের ঝুঁকি ভাতার আওতায় নিয়ে আসা। কিন্তু তা করেনি।

তিনি আরও বলেন, টিকা সরবরাহে সরকার একটি দেশের ওপর নির্ভরশীল না হয়ে কোনো কোম্পানির কমিশনের দিকে না তাকিয়ে যদি জনগণের দিকে তাকাত তাহলে আরও অনেক বেশি টিকা সাশ্রয়ী মূল্যে সংগ্রহ করে জনসাধারণকে দেওয়া যেত। ব্যক্তি বিশেষের অর্থলোভ জনসাধারণের আজকের এই চরম ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

সভাপতির বক্তব্যে এবি পার্টির সদস্য সচিব এএফএম সোলায়মান চৌধুরী বলেন, দেশে এক করুণ অবস্থা বিরাজ করছে। অব্যবস্থাপনার কারণে করোনা নিয়ন্ত্রণ আরও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। আমরা দেশের কৃষক, শ্রমিক, ডাক্তার, আইনজীবীসহ সব নাগরিককে টিকার আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি। সরকার সঠিকভাবে এগোলে আমরাও স্বেচ্ছাসেবীর মতো দেশের জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাব।

এবি পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক ডা. মেজর (অব.) আব্দুল ওহাব মিনার সঞ্চালনায় ওয়েবিনারে আরও বক্তব্য রাখেন- সাবেক সংসদ সদস্য নিলুফার চৌধুরী মনি, গণফোরাম নেতা সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী মহসীন রশিদ ও এবি পার্টির সদস্য সচিব মজিবুর রহমান মন্জু।

এএইচআর/এসএসএইচ