‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ স্লোগানকে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি প্রদানের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ। একই সাথে এ স্লোগানের ‘অবমাননা’র অভিযোগ ওঠা আলোচিত আইনজীবী ও যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের সাবেক প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনের বার কাউন্সিল সনদ বাতিলের দাবিও জানিয়েছে সংগঠনটি।

আজ (রোববার) বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে আয়োজিত এক সমাবেশ থেকে এ দাবি জানানো হয়।

বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সনেট মাহমুদের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন- কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. আল মামুন, সহ-সভাপতি মাকসুদ হাওলাদার, শাহীন মাতবর, ফরহাদ হোসেন, রোমান হোসাইন। মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ শেষে সায়েদুল হক সুমনের ছবি পুড়িয়ে প্রতিবাদ করে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ।

সমাবেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সনেট মাহমুদ বলেন, জয় বাংলা আমাদের মুক্তিযুদ্ধের স্লোগান। বঙ্গবন্ধু আমাদের জাতির পিতা। সেই জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু স্লোগানের বিরোধিতা করা মানে বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশকে অস্বীকার করা। যুবলীগ থেকে বহিষ্কৃত ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমন এই স্লোগানকে অবমাননা করে রাষ্ট্রদ্রোহের অপরাধ করেছেন। তার বার কাউন্সিল সনদ বাতিলসহ তাকে কঠোর শাস্তির আওতায় আনতে হবে।

সাধারণ সম্পাদক আল মামুন বলেন, বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ একই সূত্রে গাথা। জয় বাংলা ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে অবমাননা মানে বাংলাদেশকে অবমাননা করার সামিল। ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমন দেশের উচ্চ আদালতের রায় এবং সংবিধান চরমভাবে লঙ্ঘন করেছেন। জয় বাংলা স্লোগান দিয়ে বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে সাড়া দিয়ে আমাদের পিতারা এ দেশ স্বাধীন করেছেন। জয় বাংলা ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে অবমাননা কখনোই মেনে নেবে না বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ।

জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধুকে রাষ্ট্রীয় স্লোগান হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে দ্রুত গেজেট প্রকাশের দাবি জানিয়ে আল মামুন বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মহান মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়েছে। মহান মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এবং এর অঙ্গসংগঠনগুলোতে কোনো স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তির জায়গা হবে না। সরকারের কাছে দাবি, জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু স্লোগানকে রাষ্ট্রীয় স্লোগান হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে দ্রুত গেজেট প্রকাশ করতে হবে।

যুবলীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক পদ থেকে শনিবার রাতে অব্যাহতি দেওয়া হয় ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনকে। 

গত ৪ আগস্ট রাত ১২টা ১ মিনিটে শহীদ শেখ কামালের জন্মদিন উপলক্ষে শরীয়তপুর সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের একটি দলীয় কর্মসূচিতে স্লোগান দিয়েছিলেন সদরের পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আক্তার হোসেন। 

৬ আগস্ট ফেসবুকে লাইভে এসে ওসির দেওয়া স্লোগানের নিন্দা জানান ব্যারিস্টার সুমন। লাইভে ব্যারিস্টার সুমন বলেন, ‘শেখ কামাল সাহেবের জন্মদিনে শরীয়তপুরের পালং থানার ওসি আক্তার হোসেনের আওয়ামী লীগের দলীয় স্লোগান দেওয়ার একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। এই জিনিসটা দেখার পর আমার কাছে মনে হয়েছে দু-একটা কথা বলা দরকার। আওয়ামী লীগের স্লোগান দেওয়ার মানুষ কি এতই কম যে একজন ওসি সাহেবের এই স্লোগান দিতে হবে। আমি খেয়াল করে দেখলাম যে উনি বলছেন আবেগ থেকেই স্লোগান দিয়েছেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমার কথা হচ্ছে, আপনি যখন সরকারি দায়িত্বে থাকবেন কিংবা রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে থাকবেন, তখন দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে আবেগ দেখানোর সঙ্গে সঙ্গে কিন্তু আপনার বিরুদ্ধে পানিশমেন্ট নিয়ে আসা উচিত। কিন্তু তিনি এখনো ওই জায়গাতে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্বপ্রাপ্ত আছেন।’

এইচআর/এনএফ/জেএস