প্রবীর সিকদারকে হয়রানির দায় নির্ধারণ ও ক্ষতিপূরণ দাবি
সাংবাদিক প্রবীর সিকদার
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের মামলায় খালাস পাওয়া লেখক ও দৈনিক বাংলা ৭১-এর সম্পাদক প্রবীর সিকদারকে হয়রানির ‘দায়’ নির্ধারণ ও ‘ক্ষতিপূরণ’-এর দাবি করেছে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আবদুর রব।
শুক্রবার (১০ সেপ্টেম্বর) এক বিবৃতিতে আ স ম আবদুর রব বলেন, ‘নিরাপরাধ সাংবাদিকসহ নাগরিকরা মিথ্যা মামলা ও রিমান্ডের নামে নির্যাতনের শিকার হবেন, তাদের পেশাগত জীবন বিপন্ন ও ব্যক্তি জীবন ধ্বংস হয়ে যাবে তবুও সরকার কোনো দায় বহন করবে না, এটা রাষ্ট্রের কোনো চরিত্র হতে পারে না। এটা সভ্যতার প্রতিনিধিত্ব করে না।’
বিজ্ঞাপন
‘খালাস পাওয়ার পর তাৎক্ষণিকভাবে প্রবীর সিকদার সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘এই আইনি লড়াইয়ে জিতলেও পারিবারিক জীবনে বড় ক্ষতি হয়ে গেছে, আমি এই ছয়টি বছর লড়াই করেছি। কিন্তু আমার পারিবারিক জীবন ধ্বংস হয়ে গেছে উলট-পালট হয়ে গেছে। আমি এই ছয় বছর বাড়ি থেকে জমি বিক্রি করে ঢাকায় থেকেছি। আমি কোথাও কাজ করতে পারিনি, কাজেও নেয়নি।’ আদালত বলেছেন, মামলা করেছেন দূরের একজন। তার এ অভিযোগে মামলা করার এখতিয়ারই নেই।’
বিবৃতিতে জেএসডি সভাপতি বলেন, ‘তাহলে এই বেআইনি কর্মকাণ্ডে অতি উৎসাহী হয়ে মামলা দায়ের এবং গ্রেফতার করে রিমান্ডে নেওয়াসহ সরকারের অতি বাড়াবাড়ির দায় সরকারকেই বহন করতে হবে। সুতরাং যাদের ভুলে, যাদের বাড়াবাড়িতে এবং যাদের অতি উৎসাহে প্রবীর সিকদারের জীবন ধ্বংস হয়ে গেছে, তাদেরকে অবশ্যই আইনের আওতায় আনতে হবে। প্রবীর সিকদারের ব্যক্তি জীবন, পারিবারিক জীবন ও পেশাগত জীবনের ক্ষয়ক্ষতি নির্ধারণ করে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।’
বিজ্ঞাপন
রব বলেন, ‘নয়তো এ ধরনের ঘটনা অহরহ ঘটতেই থাকবে। সরকার বিভিন্ন অজুহাতে সাংবাদিকসহ সাধারণ মানুষের ওপর নিপীড়নের খড়গ চালাতে থাকবে। নাগরিকদের জীবনকে বিপন্ন করে তুলবে। এ ঘটনায় প্রমাণিত হয়েছে সরকার জনগণের অধিকার সুরক্ষার চেয়ে অধিকার হরণ করতেই অতি উৎসাহী। ইতোমধ্যে আইসিটি আইনের নামে ভুয়া মামলায় সাংবাদিকসহ অসংখ্য নাগরিকের জীবন দুর্বিষহ করে তোলা হয়েছে। রাষ্ট্রকে অবশ্যই ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়াতে হবে।’
তিনি বিবৃতিতে গণমাধ্যমের সুরক্ষায় তিন দফা তুলে ধরেন। দফাগুলো হচ্ছে- ‘প্রজাতন্ত্রের একজন নিরপরাধ নাগরিকের ব্যক্তিগত ও পেশাগত জীবন ধ্বংস করার দায়ে সরকারকে আন্তরিকভাবে ‘দুঃখ প্রকাশ’ করতে হবে; সাংবাদিক প্রবীর সিকদারের বিরুদ্ধে মামলাসহ দীর্ঘ যন্ত্রণা দেওয়ার দায়-দায়িত্ব নির্ধারণ ও ক্ষতি পূরণ প্রদানের লক্ষ্যে নিরপেক্ষ ও শক্তিশালী একটি কমিটি গঠন করতে হবে এবং নিবর্তনমূলক আইসিটি আইন প্রত্যাহার করতে হবে।’
ভবিষ্যতে অনুরূপ ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে ও রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ ‘গণমাধ্যম’ সুরক্ষায় সাংবাদিক সমাজকে সুসংগঠিত ও বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখতে হবে বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।
এইউএ/ওএফ