বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, দেশে দ্রব্যমূল্য বেড়েই চলেছে। কয়েকদিন আগে সয়াবিন তেলের দাম ৭ টাকা বেড়েছে। গত ফেব্রুয়ারি থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত ৮ মাসে ৭ বার সয়াবিন তেলের দাম বেড়েছে। এ পর্যন্ত প্রতি লিটারে বেড়েছে ৪৫ টাকা। কেন এটা করা হয়েছে ব্যবসায়ীরা যুক্তি দেখিয়েছে করোনাকালে তাদের অনেক ক্ষতি হয়ে গেছে, তাই দাম বেড়েছে। অথচ আমদানিকৃত যে সয়াবিন আছে তাতে আমাদের আরও তিন মাস চলার কথা। সব মিলিয়ে শুধু পকেট কাটা হচ্ছে জনগণের।

আজ (বৃহস্পতিবার) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত এক মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন। চাল-ডাল-তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতি ও শ্রমজীবী মানুষের ভোগান্তির প্রতিবাদে এ মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়। 

সরকারের কাছে প্রশ্ন রেখে নজরুল ইসলাম খান বলেন, করোনাকালে ব্যবসায়ীদের ক্ষতি হয়েছে তাই তেলের দাম বাড়িয়ে দিলেন, কিন্তু শ্রমজীবী মানুষের যে লোকসান, ক্ষতি হলো এতে, তাদের জন্য আপনারা কিছু করলেন না কেন?
 
নজরুল ইসলাম খান আরও বলেন, টিসিবি দ্রব্যমূল্যের হিসেব রাখে। তাদের তথ্য মতেই গত এক বছরে চালের দাম বেড়েছে ৭ শতাংশ, আটা বেড়েছে ১৩ শতাংশ, ময়দা বেড়েছে ৩০ শতাংশ, সয়াবিন ৪৯ শতাংশ, পাম অয়েল ৫২ শতাংশ, চিনি ২৬ শতাংশ, মসুরের ডাল ২৯ শতাংশ, রসুন ৪১ শতাংশ আর পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ৪২ শতাংশ। তাহলে একজন শ্রমজীবী মানুষের জীবনযাপনে কতটা ব্যয় বেড়েছে।

বিএনপির এই স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, আমরা ষড়যন্ত্র, সন্ত্রাসের রাজনীতি করি না। একদলীয় স্বৈরশাসনের কবরের ওপরে বহুদলীয় গণতন্ত্রের বাগান রচনা করেছিলেন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। সামরিক স্বৈরশাসন থেকে গণতন্ত্র মুক্ত করেছিলেন বেগম খালেদা জিয়া। একইভাবে ১/১১ সরকারকে জরুরি অবস্থা প্রত্যাহারে বাধ্য করেছিলেন বেগম খালেদা জিয়া, এটাই ইতিহাস। একটা দল আছে যারা গণতন্ত্র হত্যা করে, সমর্থন জানায়। আরেকটা দল আছে যারা লড়াই করে আন্দোলনের মাধ্যমে গণতন্ত্র পুনপ্রতিষ্ঠা করে। আর এই ইতিহাসের পক্ষ ধরেই আরও একবার ইনশাআল্লাহ বাংলাদেশের মানুষের গণতন্ত্র পুনপ্রতিষ্ঠা করবে বিএনপি। আমাদের গণতান্ত্রিক আন্দোলন ছাড়া আর কোনো পথ নেই, আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।

নজরুল ইসলাম খান আরও বলেন, যেকোনো দেশপ্রেমিক নাগরিকের এখন মূল কর্তব্য হলো দেশের মানুষের স্বার্থ রক্ষায়, দেশের স্বার্থ রক্ষায় গণতন্ত্র পুনপ্রতিষ্ঠায় এগিয়ে যাওয়া। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত না হলে বেগম খালেদা জিয়াকে আমরা মুক্ত করতে পারবো না। খালেদা জিয়াকে কোনো অপরাধের জন্য সাজা দেওয়া হয়নি, তাকে সাজা দেওয়া হয়েছে শুধুমাত্র রাজনৈতিক কারণে। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হলে নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তন করতে হবে। তাই সামনে পথ একটাই সবার এবং দেশের স্বার্থ রক্ষায় ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন ছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই।

জাতীয়তাবাদী শ্রমিকদলের সভাপতি আনোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীসহ শ্রমিকদলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

এএসএস/এনএফ