ডিজেল, কেরোসিন, এলপি গ্যাস ও টিসিবি পণ্যের বর্ধিত মূল্য কমানোর দাবিতে সমাবেশ ও মিছিল করেছে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ)। 

ঢাকা মহানগর শাখার উদ্যোগে শনিবার (৬ নভেম্বর) বিকেল ৪টায় পল্টন মোড়ে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল পল্টন, মুক্তাঙ্গন, জিরো পয়েন্ট, গুলিস্তান, বঙ্গবন্ধু এভিনিউ, বায়তুল মোকাররম হয়ে বিজয়নগর, সেগুনবাগিচা এলাকা প্রদক্ষিণ করে।

সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বাসদ ঢাকা মহানগর আহ্বায়ক কমরেড বজলুর রশীদ ফিরোজ। বক্তব্য রাখেন বাসদ ঢাকা মহানগর শাখার সদস্য সচিব জুলফিকার আলী, সদস্য খালেকুজ্জামান লিপন, ছাত্র ফ্রন্টের সভাপতি আল কাদেরী জয়, মহিলা ফোরাম নেত্রী রুখশানা আফরোজ আশা ও চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের নেতা জসিম উদ্দিন।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, পাশের দেশে তেল পাচার ও আন্তর্জাতিক বাজারে মূল্য বৃদ্ধির অজুহাত দেখিয়ে মূল্য বৃদ্ধির ঘোষণা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক। সরকার বিভিন্ন পর্যায়ে শুল্ক ১৭ টাকা কমালে মূল্য বৃদ্ধির কোনো দরকার নেই। সরকারি শুল্ক ও অন্যান্য খরচ কমালে দাম না বাড়িয়ে বরং কমানো সম্ভব। 

তারা বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে মূল্য বৃদ্ধির অজুহাত দেখিয়ে এখন সরকার লস করছে সেই কথা বলছে। কিন্তু গত ৭ বছর আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কম থাকার পরও দেশে দাম না কমিয়ে সরকার ৪০ হাজার কোটি টাকার বেশি মুনাফা করেছে। এই মুনাফার একটা অংশ এখন ভর্তুকি হিসেবে দিলেও দাম বাড়ানোর প্রয়োজন হতো না। তেল পাচারের অজুহাতও ভুয়া। কারণ তেল পকেটে করে পাচার করা যায় না। তাহলে জনগণের ট্যাক্সের টাকায় বেতন নেওয়া পুলিশ, বিজিবি কেন পাচার রোধ করতে পারে না?

বক্তারা আরও বলেন, ডিজেল, কেরোসিন ও ফার্নেস অয়েলের মূল্যবৃদ্ধির অভিঘাত দেশের ১৭ কোটি মানুষের ওপর পড়বে। কারণ ডিজেলের ওপর আমাদের কৃষি, পরিবহন, শিল্প ও বিদ্যুৎ উৎপাদন নির্ভরশীল। 

একদিকে যখন তেলের মূল্য বৃদ্ধি অন্যদিকে নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্য দ্রব্যের অস্বাভাবিক দামে জনজীবন অতিষ্ঠ তখন টিসিবিও পণ্যের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। টিসিবি জনগণকে সুলভ মূল্যে নিত্যপণ্য সরবরাহের কথা থাকলেও তারা এখন একটি মুনাফা লোভী প্রতিষ্ঠানের মতো বাজারদর অনুযায়ী দাম নির্ধারণ করছে। ফলে মূল্যবৃদ্ধির প্রভাবে এই করোনায় আয় কমে যাওয়া ও কর্মহীন হয়ে পড়া মানুষের জীবনে নাভিশ্বাস উঠছে।

বক্তারা অবিলম্বে জ্বালানি তেল, এলপি গ্যাস ও টিসিবির পণ্যের মূল্য বৃদ্ধির অযৌক্তিক ও গণবিরোধী সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে গ্রাম-শহরে রেশনিং চালু, শুল্কসহ অন্যান্য সরকারি খরচ কমিয়ে জনগণকে ভোগান্তি থেকে বাঁচানোর আহ্বান জানান। নেতারা মূল্যবৃদ্ধির বিরুদ্ধে দেশব্যাপী কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান।

সমাবেশে ডিজেল, কেরোসিন ও এলপি গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে বাম গণতান্ত্রিক জোট আহুত আগামী সোমবারের (৮ নভেম্বর) জ্বালানি মন্ত্রণালয় ঘেরাও কর্মসূচি এবং দেশব্যাপী বিক্ষোভ সফল করার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান।

ওএফ