বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে দেখতে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে গেছেন গণঅধিকার পরিষদের আহ্বায়ক ড. রেজা কিবরিয়া ও সদস্য সচিব সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর।

আজ বেলা ১১টা ৪০ মিনিটে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে দেখতে হাসপাতালে যান তারা। এ সময় সংগঠনের অন্যান্য নেতারাও উপস্থিত ছিলেন।

ড. রেজা কিবরিয়া ও নুরুল হক নুর হাসপাতালে বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার খোঁজ নেন। তারা রাজনীতির বাইরে গিয়ে মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশে উন্নত চিকিৎসা দেওয়ার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানান।

এ সময় সাংবাদিকদের নুর বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার খোঁজ খবর নিতে আমরা হাসপাতালে গিয়েছিলাম। সেখানে আমরা তার মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসকদের সঙ্গে প্রায় এক ঘণ্টা আলাপ-আলোচনা করেছি। তারা আমাদের জানিয়েছেন, কারাগারে থাকা অবস্থায় খালেদা জিয়ার চিকিৎসার অনিয়ম হয়েছে। যে কারণে তার শারীরিক জটিলতা আরও প্রকট আকার ধারণ করেছে। বর্তমানে তিনি খুব খারাপ অবস্থার মধ্যে আছেন।

তিনি আরও বলেন, খালেদা জিয়ার আগের জটিলতাগুলো এবং বর্তমান জটিলতা সবমিলে তার উন্নত চিকিৎসার জন্য মেডিকেল বোর্ডই বলেছে যে দেশের বাইরের চিকিৎসা দরকার। পরিবারও সে দাবি জানিয়েছেন। রাজনীতির বাইরে গিয়েও আমরা সাবেক প্রধানমন্ত্রীর প্ৰতি সে মানবিকতাটা দেখাতে পারি।

সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে নুর বলেন, একটা রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে সরকারের প্রতি আমাদের আহ্বান থাকবে, প্রতিহিংসা থেকে যেন একজন মানুষকে চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত না করি। আইনের ঊর্ধ্বে উঠে মানবিকতার বিবেচনায় বেগম জিয়াকে দেশের বাইরে সুচিকিৎসার সুযোগ দেন প্রধানমন্ত্রী।

বিএনপির গণ অনশন কর্মসূচির প্রতি সমর্থন জানিয়ে নুর বলেন, এই কর্মসূচির প্রতি আমরা সম্মতি জানাচ্ছি। তাদের যেকোনো ন্যায়সঙ্গত কর্মসূচিতে আমাদের সম্মতি থাকবে। আমার বিশ্বাস, রাজনৈতিক দলগুলো যেভাবে রাজনৈতিক দিক বিবেচনা না করে মানুষ হিসেবে উনার (খালেদা জিয়া) পাশে দাঁড়িয়েছি এবং তার সুচিকিৎসার কথা বলছি, আমাদের আবেদন সরকার ফেলতে পারবে না।

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন, দলটির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদ খাঁন, মাহফুজুর রহমান খান, সোহরাব হোসেন, শাকিলুজ্জামান প্রমুখ।

দেশে করোনার প্রাদুর্ভাব দেখা দিলে খালেদা জিয়ার পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সরকার নির্বাহী আদেশে ২০২০ সালের ২৫ মার্চ ছয় মাসের জন্য তার সাজা স্থগিত করে মুক্তি দেয়। এরপর আরও তিন দফায় তার সাজা স্থগিতের মেয়াদ বাড়ায় সরকার। 

কিন্তু খালেদা জিয়ার পরিবারের পক্ষ থেকে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশ নিতে কয়েকবার আবেদন করা হলেও কোনো সাড়া মিলছে না। এ অবস্থায় গত বৃহস্পতিবার দলের পক্ষ থেকে দলীয় চেয়ারপারসনের বিদেশে নিয়ে সুচিকিৎসার দাবিতে গণঅনশনের ঘোষণা দেয় বিএনপি।

এর আগে ১৩ নভেম্বর খালেদা জিয়ার নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার কথা জানিয়ে তাকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। পর দিন ১৪ নভেম্বর ভোর থেকে তাকে ওই হাসপাতালের সিসিইউতে ভর্তি করা হয়।

পিএসডি/এইচআর/এমএইচএস