জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেছেন, কাউকে ক্ষমতায় নিতে বা ক্ষমতাচ্যুত করতে আমাদের রাজনীতি নয়। দেশের মানুষকে মুক্তি দিতেই রাজনীতি করছি। 

রোববার জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের বনানী কার্যালয়ের মিলনায়তনে কিশোরগঞ্জ জেলা শাখার নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এসব কথা বলেন তিনি। 

তিনি বলেন, আমরা কারো আস্থা অর্জন করতে বা কারো বিরাগভাজন হতে রাজনীতি করি না। দেশ ও মানুষের স্বার্থে জাতীয় পার্টি কাকে সমর্থন দেবে, তাও পরে বিবেচনা করা হবে। আমরা স্বতন্ত্র আদর্শ নিয়ে রাজনীতির মাঠে আছি। দেশের মানুষ পরিবর্তন চায়। দেশের মানুষ আওয়ামী লীগের পরিবর্তে বিএনপিকে চায় না। দুটি দলের বিকল্প হিসেবে মানুষ জাতীয় পার্টিকে রাষ্ট্র ক্ষমতায় দেখতে চায়।

আওয়ামী লীগের পরিবর্তে বিএনপি এলে দেশের অবস্থা আরও ভয়াবহ হয়ে উঠবে- দাবি করে জাপা চেয়ারম্যান বলেন, খারাপ অবস্থার ধারাবাহিকতা সৃষ্টি হবে। বিএনপি বিনা বিচারে হত্যা শুরু করে, আওয়ামী লীগ এসে তার ধারাবাহিকতায় রক্ষা করছে। বিএনপি দুর্নীতিতে দেশকে চ্যাম্পিয়ন করেছে, আওয়ামী লীগ এসে সেই ধারাবাহিকতাই রক্ষা করছে। 

তিনি আরও বলেন, পল্লীবন্ধু জেলখানায় যখন অসুস্থ হয়ে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছিলেন, তখন আমরা পিজি হাসপাতালে তার সুচিকিৎসার জন্য সরকারের কাছে আবেদন করেছিলাম। তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা শেখ হাসিনাও এরশাদের সুচিকিৎসার জন্য বিবৃতি দিয়েছিলেন। কিন্তু বিএনপি সরকার তখন জেলখানা থেকে পিজি হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেনি। আজ বিএনপি তাদের নেত্রীর চিকিৎসার জন্য কান্নাকাটি করছে। 

দেশের মানুষ ভালো নেই বলে উল্লেখ করে জি এম কাদের বলেন, নিয়ন্ত্রণহীনভাবে দ্রব্যমূল্য বেড়ে যাচ্ছে। অপরদিকে, কাজ নেই, মানুষের আয় নেই। তাই সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছে দেশের বেশিরভাগ মানুষ। এমএ পাস করে যুবকরা কাজের অভাবে রাস্তার পাশে হকারি করছেন। শিক্ষিত বেকাররা সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালাচ্ছেন, তাদের মেধার মূল্যায়ন হচ্ছে না। 

তিনি বলেন, দেশের মানুষের মান-সম্মান, ইজ্জত ও জীবনের নিরাপত্তা নেই। সড়কে বের হলে দুর্ঘটনায় মানুষ মারা যাবে, ট্রেনের ধাক্কায় বাসের যাত্রী মারা যাবে আর নদীতে দুর্ঘটনায় অসংখ্য মানুষের মৃত্যু হবে - এটা যেন স্বাভাবিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

তিনি আরও বলেন, নির্বাচনে সরকারি দলের টিকেট পেলেই সেখানকার পুলিশ ও প্রশাসনের একটি শ্রেণি নির্বাচনকে কলুষিত করতে উঠে-পড়ে লেগে যায়। নির্বাচনের মাঠে প্রতিপক্ষকে দাঁড়াতেই দিতে চাচ্ছে না ক্ষমতাসীনরা। 

কিশোরগঞ্জ জেলা আহ্বায়ক কমিটি মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু, কো-চেয়ারম্যান এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার, চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মনিরুল ইসলাম মিলন, জহিরুল আলম রুবেল, যুগ্ম মহাসচিব মো. জসিম উদ্দিন ভূঁইয়া প্রমুখ।

এএইচআর/আরএইচ