বাংলাদেশের মুন্সীগঞ্জের বিনোদপুর রামকুমার উচ্চ বিদ্যালয়ের বিজ্ঞানশিক্ষক হৃদয় চন্দ্র মণ্ডলকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়েছে কানাডার টরন্টো ফিল্ম ফোরাম। সেই সঙ্গে দ্রুত তার শর্তহীন মুক্তি দাবি করেছে।

টরন্টো ফিল্ম ফোরাম বাংলাদেশের সংবিধানের ১৭নং অধ্যায় অনুসারে দেশে দ্রুত বিজ্ঞানভিত্তিক একটি ‘অভিন্ন, গণমুখী এবং সার্বজনীন’ শিক্ষাব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করার দাবি জানিয়েছে।

ফোরাম মনে করে, দীর্ঘদিন থেকেই রাষ্ট্রের শিক্ষাব্যবস্থাকে ধর্মীয় মৌলবাদী করার যে প্রক্রিয়া চলে আসছে, তারই ফসল হচ্ছে এই শিক্ষক গ্রেপ্তার।

ইতোপূর্বে হিন্দুধর্মাবলম্বী লেখকদের লেখা পাঠ্যসূচি থেকে বাদ দেওয়া, ধর্মীয় শিক্ষাব্যবস্থাকে অবৈজ্ঞানিকভাবে সাধারণ শিক্ষার সমতুল্য করা, বিভিন্ন ধরনের শিক্ষাব্যবস্থা চালু রাখাসহ শিক্ষাব্যবস্থাকে একমুখী, বিজ্ঞানভিত্তিক ও সরলীকরণ না করে বরাবরই বাণিজ্যিকীকরণের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।

টরন্টো ফিল্ম ফোরাম মনে করে, বিজ্ঞান শিক্ষাকে অবদমিত করতে ও শিক্ষাব্যবস্থাকে ধ্বংস করার লক্ষ্যেই বিজ্ঞানশিক্ষকদের ওপর এ আঘাত। এ অবস্থা চলতে থাকলে বাংলাদেশে বিজ্ঞানভিত্তিক শিক্ষার কবর রচনা হবে, ধর্মীয় গোঁড়ামি যুক্ত শিক্ষার প্রসারে দেশের সব অর্জন ভূলুণ্ঠিত হবে ও দেশ এক অন্ধকূপে পতিত হবে। একই সঙ্গে দেশে মানুষের মৌলিক মানবিক চাহিদা অপূরণ থাকাসহ সাধারণ জনগণ তার গণতান্ত্রিক অধিকার হারাবে।

টরন্টো ফিল্ম ফোরাম ধারণা করে, এ ঘটনা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে ঘটানো হয়েছে। ছাত্রের প্রশ্ন করার ধরন এবং সেই সঙ্গে কথা রেকর্ড করাই প্রমাণ করে এটি পরিকল্পিত। বাংলাদেশের শিক্ষকদের মধ্যে একটা প্রবণতা আছে ছাত্রদের প্রশ্ন করতে না দেওয়া। সেখানে হৃদয় মণ্ডল ধৈর্যের সঙ্গে ছাত্রদের প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন। অথচ সেই জবাবের জন্য তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং এখন পর্যন্ত জামিন দেওয়া হয়নি। তার মতো মেধাবী বিজ্ঞানবিষয়ক সুযোগ্য শিক্ষককে পরিকল্পিতভাবে ফাঁসানো এবং তার প্রতি সাম্প্রদায়িক আচরণের জন্য সেই ছাত্র ও সংশ্লিষ্ট সবাইকে জবাবদিহিতামূলক শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছে টরন্টো ফিল্ম ফোরাম।

প্রসঙ্গত, মুন্সীগঞ্জের বিনোদপুর রামকুমার উচ্চ বিদ্যালয়ের গণিত বিষয়ের সহকারী শিক্ষক হৃদয় চন্দ্র মণ্ডলের বিরুদ্ধে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ ওঠার পর ২২ মার্চ ওই শিক্ষককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

এসএসএইচ