ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে একটি ক্ষুদ্র আয়তনের নৈসর্গিক সৌন্দর্যের দেশ পর্তুগাল। আয়তন অনুসারে দেশটির জনসংখ্যাও কম, কেননা প্রতি বর্গকিলোমিটারে মাত্র ১১৪ জন মানুষের বসবাস এবং প্রতি বছরই তা কমছে। তবে পর্তুগালে ২৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ৮ লাখ ৩৭ হাজার ৮৭৮ জন কমপক্ষে এক ডোজ করোনার ভ্যাকসিন গ্রহণ করেছেন, যা তাদের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৮ দশমিক ১৩ শতাংশ।

পর্তুগাল ইউরোপীয় ইউনিয়নের ভ্যাকসিন প্রোগ্রামের আওতায় রয়েছেন অর্থাৎ ভ্যাকসিন উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়ন চুক্তি করেছিল এবং সে অনুযায়ী সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে তারা সরবরাহ করছে। এ পর্যন্ত পর্তুগাল মানুষ দশ লাখ ৩৪ হাজার ৯৭০ ডোজ ভ্যাকসিন গ্রহণ করেছে। গত ২৭ ডিসেম্বর ২০২০ সালে শুরু হওয়া কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন কার্যক্রমে প্রথমে একটু ধীর গতি ছিল। তবে এখন তার গতি পেয়েছে অনেক গুণ, যেমন গত ২৬ থেকে ২৭ ফেব্রুয়ারি একদিনে ভ্যাকসিন গ্রহণ করেছেন প্রায় ৪০ হাজার ৮৭৬ জন মানুষ।

পর্তুগাল সরকার আগামী গ্রীষ্মের প্রথমার্ধে মধ্যে দেশের মোট জনসংখ্যার ৭০ শতাংশ জনগোষ্ঠীকে ভ্যাকসিন দেওয়া নিশ্চিত করার পরিকল্পনা নিয়েছে। অপরদিকে যদি ভ্যাকসিন সরবরাহ বাড়ে তাহলে প্রতিদিন গ্রহণের সংখ্যাও বাড়বে এবং আগামী চার মাসের মধ্যে সরকার লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছাতে সক্ষম হবে।

দেশের মোট জনসংখ্যার প্রতি ১০০ জনে ২য় ডোজ ভ্যাকসিন গ্রহণের হার হিসেবে পর্তুগাল বিশ্বে ১৮তম অবস্থানে রয়েছে। অর্থাৎ দেশটি এ পর্যন্ত তাদের মোট জনগোষ্ঠীর প্রায় তিন শতাংশের ওপরে ২য় ডোজ দিতে সমর্থ হয়েছে। তবে ইইউর ক্ষেত্রে পর্তুগালের অবস্থান ৯ নম্বরে। পর্তুগালের ভ্যাকসিন কার্যক্রম সাজানো হয়েছে তিনটি ধাপে ।

প্রথম ধাপে
দেশের সেবা কার্যক্রমের সামনের সারিতে যারা কাজ করেন অর্থাৎ স্বাস্থ্যকর্মী, নিরাপত্তাকর্মী, বিভিন্ন সেবাদনকারী ব্যক্তিবর্গ, ৫০ বছরের ঊর্ধ্বে প্রাণঘাতী রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিবর্গ।

দ্বিতীয় ধাপ
৬৫ বছর বয়সের ঊর্ধ্বে এবং ৫০ থেকে ৬৫ বছর বয়সের যাদের কিডনির সমস্যা, হার্টের সমস্যা এবং শ্বাসজনিত যেকোনো রোগের সমস্যায় যাদের অক্সিজেন নিতে হয় তাদের ক্ষেত্রে।

তৃতীয় ধাপ
সর্বশেষে এই ধাপে ক্রমান্বয়ে বয়সভিত্তিক গ্রুপ যেমন ৫০ থেকে ৬৫, ২৪ থেকে ৪৯, ১৮ থেকে ২৪ এবং সর্বশেষ ০ থেকে ১৭ বছর পর্যন্ত।

পর্তুগালে ২০২১ সালের শুরুতে করোনা মহামারি খুবই ভয়াবহ আকার ধারণ করে, তবে সরকারের জরুরি অবস্থা জারির পর গত একসপ্তাহে তা বলতে গেলে অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। সরকারি ঘোষণা অনুযায়ী আগামী ১৬ মার্চ পর্যন্ত দেশটিতে জরুরি অবস্থা এবং লকডাউন চলবে।

দেশটিতে রোববার সকাল পর্যন্ত করোনায় মারা গেছেন ১৬ হাজার ২৪৩ জন। মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৮ লাখ তিন হাজার। তবে ইতোমধ্যে পর্তুগালে ৭ লাখ ১৪ হাজার মানুষ করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন।

এইচকে/এসএম