করোনার দ্বিতীয় ঢেউ সামলে ঘুরে দাঁড়িয়েছে অস্ট্রেলিয়া। যদিও দেশটিতে করোনা ব্যাপক আকার ধারণ করেনি। তবে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকায় রয়েছে মেলবোর্ন শহর। বেশ কয়েকবার লকডাউন দেওয়ায় জৌলুস হারিয়েছে বিশ্বমানের শহরটি।

জানা যায়, কঠোর বিধি-নিষেধ, সামাজিক দূরত্ব ও মাস্ক ব্যবহারের ব্যাপারে অনড় অস্ট্রেলিয়ার সরকার করোনাকে বশ মানাতে বিচক্ষণতার ছাপ রেখেছে । সবাইকে বিনামূল্যে টিকাদানের ঘোষণা দেওয়ায় দেশটির নাগরিকরাও সরকারের প্রতি খুশি।
 
অস্ট্রেলিয়ার স্বাস্থ্যবিভাগ জানিয়েছে, টিকা পেতে দেশটির সরকার পাঁচটি চুক্তির মাধ্যমে তিন দশমিক তিন বিলিয়ন ডলারের বেশি বিনিয়োগ করেছে। ফাইজার, অ্যাস্ট্রাজেনেকা, নোভাভ্যাক্স, কোভ্যাক্স ও অন্য একটি কোম্পানির কাছ থেকে টিকা নেওয়ার জন্য এ চুক্তি করা হয়েছে। 

দেশটির প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন জানান, অস্ট্রেলিয়ায় বসবাসরত স্থায়ী-অস্থায়ী বাসিন্দা সবাইকে বিনামূল্যে করোনার টিকা দেওয়া হবে। ইতিমধ্যে (২২ ফেব্রুয়ারি) টিকাদান কর্মসূচি শুরু হয়েছে। আগামি অক্টোবরের মধ্যে শতভাগ টিকাদানের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে অস্ট্রেলিয়া।

দেশটির সার্বিক পরিস্থিতি তুলনামূলক সুবিধাজনক অবস্থানে রাখতে সরকার বিভিন্ন সময় প্রণোদনার ঘোষণা দিয়েছে। তাতে লাভের মুখ দেখছেন অনেকেই। ব্যবসায়ীদের কেউ কেউ লোকসান কাটিয়ে ছন্দে ফিরতে চেষ্টা করছেন। 

করোনার প্রভাবে দেশটিতে অবস্থানরত বাংলাদেশিরাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তবে অস্ট্রেলিয়া সরকারের আন্তরিকতায় অনেকেই আশার মুখ দেখছেন। সিডনির বাংলা টাউনের একটি ট্রাভেল এজেন্সির সত্ত্বাধিকারী মো. সোহাগ জানিয়েছেন, ‘আগে আমাদের যে পরিমাণ এয়ার টিকেট বিক্রি হতো, এখন ১০ ভাগের এক ভাগও এখন বিক্রি হয় না। সরকার কিছুটা সহায়তা করছে, আমরা এখনও আশাবাদী।’

সিডনিতে কয়েক ধাপের বিধি-নিষেধ দেওয়ায় বাংলা টাউনে আগের মতো লোকসমাগম নেই। লাকেম্বার বাসিন্দা গণমাধ্যমকর্মী আবুল কালাম আজাদ খোকন জানান, আগে বাংলা টাউনের আড্ডা একদম বাংলাদেশের মতো ছিল। মানুষে গিজগিজ করত। এখানে থাকা বাংলাদেশিদের ব্যবসাও ভালো চলত। করোনায় হঠাৎ চিত্রটা পাল্টে যায়। যদিও এখন ধীরে ধীরে এই আমেজটা ফিরছে।

অন্যদিকে, আন্তঃ রাজ্য সীমান্তগুলো বন্ধ থাকায় লোকসান গুনছে দেশটির উদ্যান ও কৃষিশিল্প। আন্তঃ রাজ্যগুলোর মধ্যে ভ্রমণ বন্ধ থাকায় মৌসুমি শ্রমিকের অভাবে ফলন ব্যাহত হচ্ছে। যার প্রভাবে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী। তবে সার্বিকভাবে অস্ট্রেলিয়ার অর্থনীতি এখনও দাড়িয়ে আছে দৃঢ়তা নিয়ে। মার্কিন ডলারের বিপরীতে নিজেদের ডলারকে ঊর্ধ্বগামী রাখতে অর্থনীতির বহুমাত্রিক কৌশল অবলম্বনে মুনশিয়ানা দেখিয়েছে প্রশাসন। খুব শিগগির সবকিছু ছাপিয়ে পুরনো রূপে ফিরতে মরিয়া প্রশান্তপাড়ের দেশটি।

ওএফ