ইতালিতে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৩তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উদযাপন করা হয়েছে।  শুক্রবার (১৭ মার্চ) রোমে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসের উদ্যোগে দূতাবাস প্রাঙ্গণে যথাযথ মর্যাদায় দিনটি উদযাপন করা হয়।

এ দিন অনুষ্ঠানের প্রথম পর্বে সকাল ৮টায় দূতাবাসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উপস্থিতিতে রাষ্ট্রদূত মো. শামীম আহসানের নেতৃত্বে জাতীয় পতাকা আনুষ্ঠানিকভাবে উত্তোলন, জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ, জাতির পিতা ও মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

এ উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ, বঙ্গবন্ধুর জীবনীভিত্তিক প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন এবং আলোচনা সভা ও দোয়া করা হয়।

এসময় ইতালিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. শামীম আহসান জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন। তিনি উল্লেখ করেন, বঙ্গবন্ধুর সম্মোহনী ব্যক্তিত্ব ও ঐন্দ্রজালিক নেতৃত্ব সমগ্র জাতিকে এক সূত্রে গেঁথে ছিল, যার ফলে বাঙালি পেয়েছে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ।

বঙ্গবন্ধুর কিশোর জীবনের মানবিক গুণাবলি ও শিশুদের প্রতি গভীর মমত্ববোধের কথা তুলে ধরেন রাষ্ট্রদূত। তিনি বলেন, জাতির পিতার অনুকরণীয় আদর্শ বাঙালিদের নিরন্তর অনুপ্রেরণার উৎস হিসেবে কাজ করবে। শৈশব থেকেই শিশুদের প্রতি বঙ্গবন্ধুর দৃশ্যমান অকৃত্রিম ভালোবাসা পরিণত বয়সে তা মহান নেতার রাজনৈতিক দর্শন।

সকাল ১০টায় অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে ইতালির স্কুল শিক্ষার্থীদের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন ও আদর্শের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার উদ্দেশ্যে দূতাবাসের উদ্যোগে রোমের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত স্কুলে বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্মের ওপর এক বিশেষ অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। স্কুলের অডিটোরিয়ামটি ব্যানার, ফেস্টুন, বেলুন দিয়ে অঙ্কিত বাংলাদেশের মানচিত্র, পতাকা ও বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি প্রভৃতি দিয়ে দৃষ্টিনন্দনভাবে সাজানো হয়। যা প্রবাসে বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন উদযাপনে আনন্দঘন আবহের সৃষ্টি করে। বঙ্গবন্ধুর জীবন ও জীবনীভিত্তিক আলোচনা এবং কুইজ প্রতিযোগিতায় লিওপোলডো বিদ্যালয়ের বিভিন্ন দেশের ৬০ জন শিশু-কিশোর স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করে।

এসময় বঙ্গবন্ধুর ওপর রাষ্ট্রদূতের বক্তব্য ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ সম্পর্কে গভীর আগ্রহের সৃষ্টি করে। রাষ্ট্রদূত তাদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন। প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী শিশু-কিশোরদের মধ্যে পুরস্কার ও খাবার বিতরণ করা হয়। পরে বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন উপলক্ষ্যে কেক কেটে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি করা হয়।

অনুষ্ঠানে বিদ্যালয়ের উপ-অধ্যক্ষসহ শিক্ষকরা উপস্থিত ছিলেন। রাষ্ট্রদূত বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন উপলক্ষ্যে তাদের সহযোগিতার জন্য ধন্যবাদ জানান এবং শিক্ষকদের হাতে বঙ্গবন্ধুর আত্মজীবনীর ইতালিয় সংস্করণ তুলে দেন। একই সঙ্গে ছাত্রছাত্রীদের মুজিববর্ষ উপলক্ষ্যে দূতাবাসের বিশেষ প্রকাশনা উপহার হিসেবে প্রদান করা হয়।

/এসএসএইচ/