মার্কিন কংগ্রেসে হোমল্যান্ড বিষয়ক কমিটির প্রভাবশালী সদস্য এবং ইমার্জেন্সি ম্যানেজমেন্ট ও টেকনোলজি সংক্রান্ত সাব কমিটির চেয়ার কংগ্রেসম্যান (রিপাবলিকান) অ্যান্থনী দি’ইসপসিটোর সঙ্গে ‘ফ্রেন্ডস অব বাংলাদেশ’র মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক সিটি সংলগ্ন লং আইলান্ডে একটি পার্টি হলে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় কংগ্রেসম্যান অ্যান্থনী দি’ইসপসিটো বলেন, বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে মিথ্যা ও আজগুবি প্রচারণায় প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যকার উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা আমাকেও বিচলিত করে। কারণ, আমার নির্বাচনী এলাকার অনেক মানুষ বাংলাদেশি আমেরিকান। আপনাদের সঙ্গে সম্পর্কের যে সূচনা ঘটল তাকে আরও জোরদার করে বাংলাদেশের গণতন্ত্র, অর্থনীতি, উন্নয়ন-অগ্রগতির পরিক্রমাকে ত্বরান্বিত করা যেতে পারে।

তিনি বলেন, ক্যাপিটল হিলে ফিরেই সহকর্মীদের সঙ্গে এবং স্টেট ডিপার্টমেন্ট ও হোমল্যান্ড সিকিউরিটি ডিপার্টমেন্টে কথা বলব। বাংলাদেশের জাতির জনকের ঘাতক হিসেবে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত রাশেদ চৌধুরী কীভাবে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করছে সেটিও জানতে চাইব।

‘ফ্রেন্ডস অব বাংলাদেশ’র অন্যতম সংগঠক বীর মুক্তিযোদ্ধা লাবলু আনসার ঘাতক রাশেদ চৌধুরীর প্রসঙ্গ উত্থাপন করলে কংগ্রেসম্যান বলেন, সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার অ্যাটর্নি জেনারেল বিল বারকে নির্দেশ দিয়েছিলেন বিষয়টি খতিয়ে দেখতে। কিন্তু তিনি নির্বাচনে পরাজিত হওয়ার পর সেই বিষয়টি স্থবির হয়ে পড়েছে। আমাকে রাশেদ চৌধুরী সংক্রান্ত নথিপত্র প্রদান করলে আমি হোমল্যান্ড সিকিউরিটি কমিটিতে বিষয়টি উত্থাপন করব। রাশেদ চৌধুরীর মতো গুরুতর অপরাধী তথা মানবাধিকার লঙ্ঘনকারীদের অভয়ারণ্য যুক্তরাষ্ট্র হতে পারে না।

‘ফ্রেন্ডস অব বাংলাদেশ’র প্রধান সংগঠক মোর্শেদ আলম সূচনা বক্তব্যে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশে আইনের শাসনের ইতিবাচক পরিক্রমা উপস্থাপন করে বলেন, আমরা শ্রমিক অধিকারের ব্যাপারে সব সময় সোচ্চার রয়েছি। মার্কিন কংগ্রেস থেকে শুরু করে সর্বস্তরেই একই মনোভাব।

মোর্শেদ আলম কংগ্রেসম্যানকে অবহিত করেন যে, বাংলাদেশ নানা ক্ষেত্রে অনেক অগ্রগতি সাধন করেছে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে। কিন্তু সেই পরম বাস্তবতাকে মুছে ফেলতে একটি মহল অপপ্রচার চালাচ্ছে মার্কিন প্রশাসনের প্রায় সব স্তরে। এমন মিথ্যাচার দূর করতেই আমরা এ প্রক্রিয়া চালাচ্ছি ‘ফ্রেন্ডস অব বাংলাদেশ’র ব্যানারে। এসব তথ্য জেনে কংগ্রেসম্যান বলেন, আজ থেকে আমি আপনাদের বন্ধু হলাম এবং বাংলাদেশ নিয়ে আরও বেশি মনোযোগী হওয়ার সুযোগ তৈরি হলো।

মার্কিন কংগ্রেস ও হোয়াইট হাউজে বর্তমান বাংলাদেশ নিয়ে বিভ্রান্তিকর দেন-দরবারের বিরুদ্ধে জনমত সৃষ্টি তথা কংগ্রেসম্যানদের প্রকৃত তথ্য অবহিত করার লক্ষ্যে ‘ফ্রেন্ডস অব বাংলাদেশ’র লাগাতার বৈঠক/মতবিনিময়ের অংশ হিসেবে এটি ছিল চতুর্থ বৈঠক। এর আগে কংগ্রেসে পররাষ্ট্র বিষয়ক কমিটির র‌্যাঙ্কিন মেম্বার কংগ্রেসম্যান (ডেমক্র্যাট) গ্রেগরী মিক্স, কংগ্রেসে স্বাস্থ্য, মানবসম্পদ এবং শিক্ষা বিষয়ক কমিটির সদস্য কংগ্রেসওম্যান লুইস ফ্র্যাঙ্কেল, সাইবার সিকিউরিটি বিষয়ক সাব কমিটির চেয়ার কংগ্রেসম্যান (রিপাবলিকান) অ্যান্ড্রু গারবারিনোর সঙ্গে বৈঠক হয়।

এসব বৈঠক সমন্বয়ে আরও ছিলেন ফ্লোরিডায় বসবাসরত বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা মহাসচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা এম ফজলুর রহমান, ডেমক্র্যাটিক পার্টির নেতা জুনায়েদ আহমেদ, নিউইয়র্কে বসবাসরত বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের যুক্তরাষ্ট্র শাখার সাধারণ সম্পাদক ও আওয়ামী লীগ নেতা মো. কাদের মিয়া, জেবিবিএর প্রেসিডেন্ট মাহাবুবুর রহমান টুকু প্রমুখ।

/এসএসএইচ/