যথাযোগ্য মর্যাদায় মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ হাইকমিশনে মহান বিজয় দিবস-২০২৩ উদযাপিত হয়েছে। শনিবার (১৬ ডিসেম্বর) সকাল ১০টায় জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়। অনুষ্ঠানে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার মোহাম্মদ খোরশেদ আলম খাস্তগীর।

পতাকা উত্তোলন শেষে আলোচনা সভার শুরুতে বীর শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে মোনাজাত করা হয়। এরপর মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।

অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ করা হয় এবং মুক্তিযুদ্ধের ওপর নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।

ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার তার বক্তৃতায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সশ্রদ্ধচিত্তে স্মরণ করেন। সেইসঙ্গে তিনি জাতীয় চার নেতা এবং সব বীর মুক্তিযোদ্ধার স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানান।

বিজয় দিবসে প্রবাসী বাংলাদেশিদের আন্তরিক অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানিয়ে তিনি বলেন, জাতির পিতা মাত্র সাড়ে তিন বছরে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশকে পুনর্গঠন করেন। মাত্র ১০ মাসে প্রণীত হয় গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান। তিনি যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটিকে নিয়ে যান স্বল্পোন্নত দেশের কাতারে। বঙ্গবন্ধু যখন সোনার বাংলা বিনির্মাণে দেশকে অর্থনৈতিক মুক্তির চূড়ান্ত পর্যায়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন ঠিক তখনই স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তি ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের কালরাতে তাকে, পরিবারের সদস্যদের নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করে। দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতিকে স্তব্ধ করা হয়। দেশকে পশ্চাৎমুখী করার চেষ্টা করা হয়।

তিনি  বলেন, বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা নির্মাণের স্বপ্নকে অনুসরণ করে তার সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একটি সমৃদ্ধ ও জ্ঞানভিত্তিক স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে বদ্ধপরিকর। তার কার্যকর পদক্ষেপের ফলে বাংলাদেশ একটি গতিশীল অর্থনীতি ও সম্ভাবনার দেশে পরিণত হয়েছে। দারিদ্র বিমোচন, নারীর ক্ষমতায়ন, পরিবেশ সুরক্ষা, স্বাস্থ্য, শিক্ষা বিভিন্ন সামাজিক সূচকে বাংলাদেশের অগ্রগতি ঈর্ষণীয়। বাংলাদেশ আজ বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে পরিগণিত হয়েছে।

ভারপ্রাপ্ত  হাইকমিশনার প্রবাসীদের ব্যাংকের মাধ্যমে রেমিট্যান্স পাঠানোর আহ্বান জানিয়ে বলেন, বৈধপথে টাকা পাঠানো হলে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে।  তাছাড়া অবৈধ পথে পাঠানো হলে প্রবাসীদের কষ্টার্জিত অর্থ সন্ত্রাস, জঙ্গীবাদসহ বিভিন্ন অপকর্মে ব্যবহৃত হতে পারে। এতে দেশ যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হবে তেমনি মানিলন্ডারিংসহ এ ধরনের অপরাধে ব্যক্তিগত দায়ও সৃষ্টি হবে।

তিনি আরও বলেন, প্রবাসীবান্ধব এ সরকার প্রবাসীদের কল্যাণে বহুমাত্রিক কার্যক্রম হাতে নিয়েছে। বাংলাদেশ হাইকমিশন প্রবাসীদের কাঙ্ক্ষিত সেবা যেমন- পাসপোর্ট-ভিসা, কনসুলার সেবা, কর্মসংস্থানসহ কল্যাণমূলক সেবা প্রদানে সর্বোচ্চ আন্তরিকতার সাথে দায়িত্ব পালন করছে। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কোন প্রকার শৈথিল্য হাইকমিশন প্রশ্রয় দেয় না , ভবিষ্যতে দেবেও না।

অনুষ্ঠানে মালয়েশিয়ায় বসবাসরত বাংলাদেশ কমিউনিটির নেতারা এবং হাইকমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠান শেষে অতিথিদের আপ্যায়ন করা হয়।

এনআই/পিএইচ