কানাডায় জাঁকজমকপূর্ণভাবে পালিত হলো খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় অনুষ্ঠান বড়দিন বা ক্রিসমাস ডে। বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ গির্জায় একত্রিত হয়ে বিশ্ববাসীর জন্য সুখ-শান্তি কামনা করে প্রার্থনা করেছেন। কানাডার স্থানীয় সময় রোববার খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীদের চার্চে ছিল মানুষের ব্যাপক ভিড়। 

কানাডিয়ানরা সারা বছরই অপেক্ষায় থাকেন এই দিনটির জন্য। দিনটি শুরু হবার আগেই ডিসেম্বর মাসজুড়ে থাকে আনন্দ উৎসবের আয়োজন।

খ্রিষ্টধর্মের অনুসারী এ্যনথনি জ্যাকব বলেন, সমগ্র বিশ্ববাসীর সুখ শান্তি কামনা করে এ বছর আমরা ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করেছি। বড়দিন মানে নতুন চেতনা ও মুক্তির কথা। সংগ্রামশীল পৃথিবীতে আমরা যেন ভালো থাকি এটাই আমাদের প্রার্থনা।

ক্যালগেরির সেন্টার স্ট্রিট চার্চের ধর্ম যাজক ড. আশউইন রামানী বলেন, যিশুর জন্মদিন শুধু খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের জন্য নয়, সারা মানবজাতির জন্যই একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা। যিশুখ্রিষ্ট সারা জীবন আর্তমানবতার সেবা, ত্যাগ ও শান্তির আদর্শ প্রচার করে গেছেন। হিংসা-দ্বেষ ভুলে তিনি সবাইকে শান্তি, সম্প্রীতি ও মানবতার বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। যিশুখ্রিষ্ট পথভ্রষ্ট ব্যক্তিদের দেখিয়েছেন আলোকিত পথ।

অন্যদিকে বড়দিন ঘিরে পুরো কানাডা উৎসবমুখর ও বর্ণিল আয়োজনে সেজেছে। শুরু হয়েছে হলিডে সিজন। আলোক সজ্জায় সজ্জিত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও বাসাবাড়ি। শপিং কমপ্লেক্সগুলোয় প্রচুর ভিড় দেখা গেছে। পরিবার পরিজন নিয়ে চলছে আনন্দ আয়োজন। প্রবাসী বাংলাদেশিরাও যোগ দিচ্ছেন বড়দিনের এই উৎসবে।

বড়দিনকে ঘিরে আনন্দ উৎসবে মেতে উঠেছেন প্রবাসী বাঙালিরা। বড়দিনের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য দিক হলো প্রিয়জনের মধ্যে উপহার আদান-প্রদান। ছোট ছোট কোমলমতি শিশু কিশোরদের কাছে শান্তা ক্লজ অন্যতম আকর্ষণ। শিশু-কিশোরদের আনন্দে আনন্দিত হয় বড়রাও। সারা বছরের কর্মব্যস্ততাময় একঘেয়েমি জীবন থেকে বেরিয়ে এসে পরিবারের সঙ্গে মিলিত হয়ে মেতে ওঠে বড়দিনের আনন্দ উৎসবের মিলন মেলায়।

ইতোমধ্যেই বিভিন্ন কমিউনিটির নেতারা রাস্তায় রাস্তায় ‘মেরি ক্রিসমাস’ সম্বলিত পোস্টার লাগিয়ে শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন। বিভিন্ন শপিংমল ও পরিবহনগুলোতে লেখা হয়েছে ‘হ্যাপি হলিডে’। 

উল্লেখ্য, দুই হাজার বছরেরও বেশি সময় আগে এই দিনে খ্রিষ্ট ধর্মের প্রবর্তক মহামানব যিশু জেরুজালেমের কাছে বেথেলহেমের এক গোয়ালঘরে জন্ম নিয়েছিলেন। হিংসা-বিদ্বেষ, অন্যায়-অত্যাচার ও পাপাচারে নিমজ্জিত মানুষকে সুপথে আনার জন্যই যিশু আবির্ভূত হয়েছিলেন। তারপর থেকেই এই দিন টিকে ‘বড়দিন’ বা ‘ক্রিসমাস ডে’ হিসেবে পালন করে আসছেন খ্রিষ্টধর্মের অনুসারীরা।

এমএ