সিঙ্গাপুরে বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনা ও যথাযোগ্য ভাবগাম্ভীর্য এবং বিনম্র শ্রদ্ধায় পালিত হলো মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস-২০২৪। বাংলাদেশ হাইকমিশন, সিঙ্গাপুরের আয়োজনে প্রবাসী বাংলাদেশি ও সিঙ্গাপুরে অবস্থিত বিভিন্ন কূটনৈতিক মিশন ও প্রতিষ্ঠানের অংশগ্রহণে হাইকমিশন প্রাঙ্গণে দিনব্যাপী বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে দিবসটি পালিত হয়।

বুধবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সকালে জাতীয় সংগীত পরিবেশনা ও জাতীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণের মধ্য দিয়ে দিবসের কার্যক্রমের সূচনা করেন সিঙ্গাপুরে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. তৌহিদুল ইসলাম। পরে ভাষা শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে অস্থায়ী শহীদ মিনারে পুস্পস্তবক অর্পণ করা হয়।

দিবসটি উপলক্ষ্যে অতিথি ও প্রবাসী বাংলাদেশিদের পড়ে শোনানো হয় বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রীর বাণী। এসময়ে মহান শহীদ দিবসের ওপরে নির্মিত একটি আলেখ্যও প্রদর্শিত হয়। দিবসটি উপলক্ষ্যে আয়োজিত বিশেষ আলোচনায় অংশ নেন সিঙ্গাপুর প্রবাসী বাংলাদেশিরা, সিঙ্গাপুরে নিযুক্ত আর্জেন্টিনার রাষ্ট্রদূত মাউরিসিও এবং হাইকমিশনের কয়েকজন কর্মকর্তা। এসময় তারা দিবসের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট ও বিশ্বব্যাপী আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালনের তাৎপর্য ও উপযোগিতার কথা বিস্তারিত আলোচনা করেন।

হাইকমিশনার মো. তৌহিদুল ইসলাম তার বক্তব্যের শুরুতেই সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। মাতৃভাষা বাংলার অধিকার আদায়ে বায়ান্নোর ভাষা শহীদদের অবদানকে তিনি শ্রদ্ধা ভরে স্মরণ করেন।

তিনি বলেন, মাতৃভাষা হিসেবে বাংলা আজ বিশ্বের বুকে স্বগৌরবে প্রতিষ্ঠিত হলেও বিশ্বের বিলীয়মান ভাষাগুলোকে বাঁচিয়ে রাখার লক্ষ্যে সংগ্রাম এখনো শেষ হয়নি। পৃথিবী থেকে প্রতি বছরই কোনো না কোনো ভাষা বিলুপ্ত হচ্ছে। এর সঙ্গে হারিয়ে যাচ্ছে অনেক ইতিহাস, ঐতিহ্য আর সংস্কৃতি।

তিনি উল্লেখ করেন, প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে এবং প্রবাসী বাংলাদেশিদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় ২১শে ফেব্রুয়ারি ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ হিসেবে জাতিসংঘের স্বীকৃতি অর্জন করেছিল। যার কারণে এ দিবস এখন কেবল বাংলাদেশের নয় বরং সমগ্র বিশ্বের।

অনুষ্ঠানে ভাষা শহীদ ও বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে আত্মদানকারী সবার আত্মার মাগফিরাত এবং দেশ ও জাতির অব্যাহত উন্নতি ও সমৃদ্ধি কামনা করে করা হয় বিশেষ মোনাজাত। বাংলাদেশ হাইকমিশনের আয়োজনে দেশি-বিদেশি বেশ কয়েকটি ভাষাভাষী শিল্পীদের পরিবেশনায় মাতৃভাষার বন্দনা করে একটি মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়।

এসএসএইচ