সম্প্রতি দক্ষিণ আফ্রিকায় মেজবাহ উদ্দিন ফারুক নামে এক প্রবাসী বাংলাদেশিকে তিন বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে দেশটির একটি আদালত। নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের বিদ্যুৎ বিল সংক্রান্ত একটি মামলায় তাকে এ দণ্ড দেওয়া হয়।

মেজবাহ উদ্দিন ফারুক ইসলামী ফোরাম অব দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক সভাপতি। যদিও তিনি পরে পদত্যাগ করেন। বর্তমানে তিনি কারাগারে রয়েছেন। তার বাড়ি ফেনী জেলার দাগনভূঁইয়া উপজেলায়।

এদিকে ফারুকের কারাদণ্ডাদেশের খবর বাংলাদেশি কমিউনিটি ভিত্তিক অনলাইন নিউজপোর্টালে প্রকাশ করায় ও ফেসবুকে শেয়ার করায় পোস্টদাতাদের ইসলামী ফোরামের নেতাকর্মীরা বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি দেখিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

প্রবাসীরা বলছেন, সংবাদের তথ্য ও ঘটনা সত্য ছিল। তারাই (ইসলামী ফোরাম) মেজবাহ উদ্দিন ফারুকের কারাদণ্ডের বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে এটি ষড়যন্ত্রমূলক উল্লেখ করে সংগঠনটি প্রতিবাদ প্রকাশ করে। ওই প্রতিবাদে নিউজ করা ব্যক্তি, ফেসবুক পেইজ ও অনলাইনে পোস্টদাতাদের বিরুদ্ধে মামলা করার হুমকি প্রচার করা হয়। তাদের এমন ব্যবহারে কমিউনিটিতে অস্বস্তিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।

দেশটিতে অবস্থানরত সাধারণ প্রবাসীরা এ নিয়ে বিরক্তি প্রকাশ করেছেন। তারা বলেন, তাদের (ইসলামী ফোরাম) ভাষায় ষড়যন্ত্রমূলক হলেও মেজবাহ উদ্দিন ফারুক বর্তমানে সাজা ভোগ করছেন। ঘটনা তো সত্যিই ঘটেছে। এটা তারই দায়। তাহলে সেই বিষয়ে নিউজ প্রচার হলে সমস্যা কোথায়। এখানে তো এরকম ব্যক্তি, সংগঠনের বিরুদ্ধে এ ধরনের নিউজ প্রচার হয়ে আসছে। শুধুমাত্র সাবেক ইসলামী ফোরাম নেতার কারাদণ্ডের বিষয়ে খবর প্রকাশ হলে বা সেটি নিয়ে ফেসবুকে পোস্ট করলে অপরাধ হবে কেন। হুমকি ধমকি আসবে কেন।

প্রবাসীরা এ নিয়ে ব্যক্তি ও সংগঠনের সহায়তা কামনা করে বলেন, দলমত নির্বিশেষে আমরা সবাই বাংলাদেশি। বিদেশের মাটিতে দলাদলি না করে সবাইকে মিলেমিশে থাকতে হবে। সেটা করার উদ্যোগ নিতে হবে দক্ষিণ আফ্রিকায় অবস্থান করা সকল সামাজিক, রাজনৈতিক ও ধর্মীয় সংগঠনগুলোকে।

ইসলামী ফোরাম অব দক্ষিণ আফ্রিকার নেতাদের মনমানসিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে তারা আরও বলেন, তারা বিষয়টিতে অপরিপক্বতার পরিচয় দিচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে তাদের সবার আগে চুপ হয়ে যাওয়া উচিত ছিল।

দক্ষিণ আফ্রিকায় বিভিন্ন ধরনের সচেতনতামূলক বিষয় নিয়ে পোস্ট করে বাংলাদেশিদের সহায়তা দিয়ে আসছে একটি ফেসবুক পেইজ। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই পেইজের এডমিন বলেন, বিষয়টি নিয়ে সাধারণ অন্যসব খবরের মতোই পেইজে পোস্ট করি। এর কিছু সময় পর থেকে পরিচিত, অপরিচিত কিছু লোকজন আমাকে ইনবক্সে ও ফোন করে অনুরোধ করেছে পোস্ট ডিলিট করে দিতে। তাদের ধারাবাহিক চাপাচাপির একপর্যায়ে পোস্টটি ডিলিট করতে বাধ্য হই। এখন দেখছি তাদের সমর্থকদের ফেসবুক পেইজ থেকে ব্যক্তি টার্গেট করে অনবরত হুমকি ধমকি দিয়ে যাচ্ছে।

হতাশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, পোস্ট ডিলিট করে তাদের কথায় প্রতিবাদ পোস্ট করতে এক ধরনের বাধ্য হয়েছি। তারা পরিস্থিতি ঘোলাটে করে তুলছে। তারা এই ঘটনাকে পুঁজি করে অসৌজন্যমূলক আচরণ করে যাচ্ছে কেন তা বোধগম্য নয়।

ঘটনার বিষয়ে জানতে ইসলামী ফোরাম অব দক্ষিণ আফ্রিকার সভাপতি মোশাররফ হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, মেজবাহ উদ্দিন ফারুকের বিষয়টা ষড়যন্ত্রমূলক। তিনি দুর্ভাগ্যজনকভাবে ফেঁসে গেছেন। দ্রুত তার জামিন হবে বলে আশা করছি।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি নিয়ে তিনি বলেন, সেটা আমাদের কেউ করছে না। যারা করছে সেটা তাদের দায়।

সত্যি ঘটনা নিয়ে সংবাদ প্রকাশের পর মামলার হুমকি কেন দেওয়ার হলো জানতে চাইলে তিনি বলেন, মামলার হুমকি দিয়ে আফ্রো বাংলা নামের ফেসবুক পেইজে পোস্ট করেছে মেজবাহ উদ্দিন ফারুকের মামাত ভাই আরিফ পাটোয়ারী।

এসএসএইচ