গত চার দিন দক্ষিণ আফ্রিকায় ছড়িয়ে পড়া উত্তেজনা থেকে বিদেশিদের বাসা-বাড়ি ও ব্যবসা-প্রতিষ্ঠানে ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ, ব্যাপক লুটপাটের ঘটনায় বাংলাদেশি মালিকানাধীন সাত শতাধিক দোকান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে করে প্রায় তিন হাজার প্রবাসী সবকিছু হারিয়ে একবারে নিঃস্ব হয়ে গেছে।

১৭ মে (সোমবার) দিবাগত রাত থেকে শুরু হয়ে দফায় দফায় এই হামলার চলে। দেশটির ব্লুমফন্টেইন থেকে উত্তেজনা শুরু হয়ে পার্শ্ববর্তী খালিসা, পাম্পিং, রকল্যান্ড, নামিবিয়াসহ প্রায় কয়েক কিলোমিটার দূরত্বে বিভিন্ন শহরেও ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ, লুটপাটসহ বিদেশিদের হামলার ঘটনা বেড়ে চলেছে।

এখন পর্যন্ত বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের সাত শতাধিক দোকানসহ পাকিস্তান, ভারত, সোমালিয়াসহ বিদেশিদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে সশস্ত্র কৃষ্ণাঙ্গরা ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়।

এদিকে নতুন নতুন এলাকায় বাংলাদেশিদের আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে। লুটপাট ও হামলার সময় দশ প্রবাসী আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। আক্রান্ত এলাকাগুলোতে বাংলাদেশিরা পুলিশ স্টেশনসহ পরিচিত নিরাপদ স্থানীয় বাসিন্দাদের বাসায় আশ্রয় নিয়েছেন।

ঘটনার সূত্রপাত ব্লুমফন্টেইন থেকে মারাগুয়া কমিউনিটি কনসার্ন সংগঠনের ব্যানারে স্থানীয় কৃষ্ণাঙ্গ জনগোষ্ঠীর লোকজন সরকারের কাছে বিভিন্ন দাবী নিয়ে আন্দোলনে শুরু করেন। ওই সময় নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে এক যুবক নিহত হয়। যুবক নিহতের ঘটনায়  ওই এলাকায় মানুষের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। পরে তারা বিদেশিদের বাসা-বাড়ি, ব্যবসা-প্রতিষ্ঠানগুলোকে হামলার টার্গেট বানায়। দিনশেষে সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত পুলিশ নিরাপত্তা দিয়ে বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো রক্ষা করা হয়। কিন্তু রাত গভীর হওয়ায় সঙ্গে সঙ্গে  পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়।

বিভিন্ন এলাকায় সারারাত হামলা ও লুটপাট চলে। এরপর থেকে নতুন নতুন এলাকায় হামলা ও লুটপাট ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় দোকান মালিকরা পালিয়ে জঙ্গলে ও পুলিশ স্টেশনে গিয়ে জীবন বাঁচান। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, লুটপাটে তিন হাজার বাংলাদেশি ব্যবসায়ী সবকিছু হারিয়ে একেবারে নিঃস্ব হয়ে গেছেন। 

ওএফ