পর্তুগালে মানবিক অভিবাসন নীতির দাবিতে প্রতিবাদ সমাবেশ
পর্তুগালের রাজধানী লিসবনের জাতীয় সংসদ ভবনের সামনে মানবিক অভিবাসন নীতির দাবিতে প্রতিবাদ সমাবেশে অংশগ্রহণ করেন হাজারো অভিবাসী। যাদের মূল দাবি ছিল- ন্যায়বিচার, মর্যাদা এবং নিরাপত্তা।
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) পর্তুগালের বৃহত্তম অভিবাসী সংগঠন ‘সলিডারিটি ইমিগ্রেন্টের’ নেতৃত্বে এই সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
বিজ্ঞাপন
এ দিন দুপুর থেকেই অভিবাসীরা সেখানে জড়ো হতে থাকেন এবং দুপুর ২টা নাগাদ সংসদ ভবনের সামনের অংশটি কানায় কানায় পরিপূর্ণ হয়ে যায়। ওই অভিবাসীরা তাদের দাবি সম্বলিত বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড ফেস্টুন নিয়ে হাজির হন।
বৈধ আবাসিক নথিপত্রের অধিকার, পারিবারিক পুনর্মিলন, অপরাধ না করেও আটক অভিবাসীদের মুক্তি, দীর্ঘদিন যাবত রেসিডেন্ট কার্ড অপেক্ষায় (ওয়েটিংয়ে) ঝুলে থাকা, অভিবাসীদের প্রতি সম্মান ও ন্যায়বিচার এমনকি ন্যায্য নাগরিকত্ব আবেদনের দাবিতে এই প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
বিজ্ঞাপন
এ ছাড়া সমাবেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রতিপাদ্য বিষয়– দীর্ঘদিন যাবত নিয়মিত হওয়ার অপেক্ষায় থাকা অভিবাসীরা সেঞ্জেন ইনফরমেশন সিস্টেমে তথ্য থাকার কারণে দেশ ছাড়ার নোটিশ পাচ্ছেন। যদিও পর্তুগালের অভিবাসন আইন অনুযায়ী এ বিষয়ে সমাধান রয়েছে। দেশটির অভিবাসন কর্তৃপক্ষ আইমা যথাযথভাবে ইউরোপিয়ান আইনের প্রয়োগ না করে তাদেরকে অন্যায়ভাবে চলমান প্রসেস বাতিল করে দেশ থেকে নোটিশ দিচ্ছেন অভিযোগ রয়েছে।
পর্তুগালের কৃষি অধ্যুষিত অঞ্চল অদিমেরাতে কর্মরত এ সমাবেশে অংশগ্রহণকারী প্রবাসী বাংলাদেশিরা বলেন, আমরা মাঝেমধ্যে কাজের চাপের কারণে ছুটি ছাড়াও ২ সপ্তাহ একাধারে কাজ করতে হয়। গ্রীষ্মে মাঝেমধ্যে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রিতে পৌঁছায় কিন্তু আমরা আমাদের দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছি তবে সরকার সেই দিকে নজর দিচ্ছে না। আইনের প্রয়োগ না করে অন্যায়ভাবে আমাদের দেশ ছাড়ার নোটিশ দিয়েছে, তবে আমরা আপিল করেছি এখনো এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত পাচ্ছি না।
আয়োজক সংস্থা সলিডারিটি ইমিগ্রেন্টের প্রধান টিমোটেও মাসেডো জানান, অভিবাসীদের রাজনৈতিক অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। পর্তুগালের উন্নয়নে অভিবাসীদের ভূমিকা অনস্বীকার্য সুতরাং এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ সম্প্রদায়কে সুবিধাবঞ্চিত করা অমানবিক। দিনের পর দিন সোশ্যাল কন্ট্রিবিউশন করেও অভিবাসীরা বসবাসের অনুমতি পাচ্ছেন না, সরকার পারিবারিক পুনর্মিলন বন্ধ করে রেখেছে এমনকি অভিবাসীদের উপর নতুন আইন প্রয়োগ করেছে, যা তাদের পরিবার থেকে আলাদা করার জন্য অমানবিক।
টিমোটেও মাসেডো আরো বলেন, সরকার পর্তুগিজ নাগরিকত্ব আইনের মাধ্যমে জাতি এবং বর্ণ হিসেবে আলাদা করতে চায়, যা এই দেশের সংবিধান পরিপন্থি।
তিনি দাবি করেন, বর্তমানে অভিবাসন আইন যেমন রয়েছে তেমনি পাঁচ বছর বজায় রাখা হোক। এই সরকারকে অভিবাসীদের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।
সম্প্রতি অভিবাসন ও নাগরিকত্ব আইনের পরিবর্তনের খসড়া প্রস্তাব এবং দীর্ঘদিন যাবৎ অপেক্ষায় থাকা অভিবাসীরা তাদের বসবাস অনুমোদনের পত্র না পাওয়ার কারণে তাদের মধ্যে উদ্যোগ দেখা দেয়। এর ফলে অভিবাসী সংগঠনের নেতৃত্বে আন্দোলনের ডাক দেওয়া হয় এবং আয়োজকদের পক্ষ থেকে জানানো হয় সরকার তদের দাবি না মানা পর্যন্ত এই প্রতিবাদ চলবে।
বিআরইউ