দীর্ঘ এক বছরেরও অধিক সময় (৪০১ দিন) পর মাস্ক ব্যবহারের বাধ্যবাধকতা আজ থেকে প্রত্যাহার করেছে স্পেন সরকার।  ফলে এখন থেকে রাস্তায় মাস্ক ছাড়াই চলাচল করা যাবে। এক্ষেত্রে কমপক্ষে দেড় মিটার সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। তবে মানুষের ভিড় আছে এমন এলাকায় মাস্ক ব্যবহার বাধ্যতামূলক রাখা হয়েছে। তাই বাইরে বের হওয়ার ক্ষেত্রে মাস্ক ব্যবহার না করা হলেও সঙ্গে রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

দেশটির মনোবিজ্ঞানী নাতালিয়া ওরতেগা মনে করেন, মাস্ক ব্যবহার সম্পূর্ণ উঠিয়ে না দেওয়া হলেও, দীর্ঘ ১৫ মাস অতিক্রম করা মহামারির পর এ শিথিলতা মানুষের মনে কিছুটা হলেও প্রশান্তি দেবে।

তিনি বলেন, সামাজিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে মুখাবয়বের ভাব ও অভিব্যক্তি দেখা মানুষের জন্যে গুরুত্বপূর্ণ, যা মাস্ক ব্যবহারের কারণে এতদিন ঢাকা ছিল। এখন আমরা কারো মুখের দিকে তাকিয়ে কথা বলতে পারব।

জানা গেছে, ২৬ জুন থেকে মাস্ক ব্যবহারের এ শিথিলতা কার্যকর করা হলেও, কয়েক মাস ধরে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চলছিল। ইউরোপের অন্যান্য দেশগুলোর তুলনায় মহামারি পরিস্থিতিতে স্পেনের আইনকানুন তুলনামূলকভাবে বেশি কড়াকড়ি ছিল। এ কারণে দেশটির বিশেষজ্ঞরা মাস্ক ব্যবহারের শিথিলতার বিষয়ে পক্ষে  বিপক্ষে যুক্তি দেখান।

এ ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ ভিন্ন যুক্তি দেখিয়েছেন মহামারি বিশেষজ্ঞ ও অভিয়েডো বিশ্ববিদ্যালয়ের জরুরি ও দুর্যোগ গবেষণা ইউনিটের প্রধান পেদ্রো আরকোস।

তিনি বলেন, যেখানে খোলা পরিবেশে সামাজিক দূরত্ব বজায় ছিল এমন জায়গায় প্রথম থেকেই মাস্ক ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা প্রয়োজন ছিল না। শুধুমাত্র আবদ্ধ পরিবেশে যেখানে মানুষের ভিড় হয়, এমন স্থানে বাধ্যতামূলক করাটাই যথেষ্ট ছিল। তবে বর্তমান এ উদ্যোগটি স্পেনকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে একটি বিশেষ ধাপ বলে মনে করছেন তিনি।

উল্লেখ্য, এক সপ্তাহ আগে দেশটির রাষ্ট্রপতি পেদ্রো সানচেসের দেওয়া ঘোষণা অনুযায়ী ২৬ জুন থেকে মাস্ক ব্যবহারের বাধ্যবাধকতা উঠিয়ে নেওয়া হয়েছে। এ ঘোষণার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্নভাবে আনন্দ প্রকাশ করেন স্প্যানিশরা। শিথিলতা কার্যকরের আগের রাতে দেশটির বিভিন্ন শহরে মানুষকে আনন্দ উল্লাস করতে দেখা গেছে।

এসকেডি/এসকেডি