মালয়েশিয়ায় প্রায় ৮ লাখ প্রবাসী বাংলাদেশি নিরানন্দ ঈদ কাটাচ্ছেন। আজ মঙ্গলবার (২০ জুলাই) দেশটিতে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। তবে এবার মসজিদে ঈদুল আজহার নামাজ পড়তে পারেননি বাংলাদেশি রেমিট্যান্সযোদ্ধারা। তারা ঘরে ও বিকল্প স্থানে ঈদের নামাজ আদায় করেছেন। 

করোনা সংক্রমণ রোধে মসজিদে স্বল্প পরিসরে ঈদের নামাজ আদায়ের নির্দেশনা দিয়েছিল মালয়েশিয়া সরকার। তাই মসজিদে স্বল্প সংখ্যক মুসল্লি নিয়ে স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ঈদের নামাজ অনুষ্ঠিত হয়েছে। মসজিদে এবার ঈদুল আজহার নামাজ পড়েছেন শুধু স্থানীয়রা। 

কুয়ালালামপুর সূরাও বায়তুল মোকাররমের খতিব হাফেজ মাও. মো. ইকরামুল হক ঢাকা পোস্টকে বলেন, সকাল ৮টায় ঈদের প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। পরে আরও একটি জামাত অনুষ্ঠিত হয়। মসজিদে ঈদের জামাতে ৫০ জন করে মুসল্লি অংশ নিয়েছেন। 

জহুর বারু সূরাও বাংলাদেশ তামান মাউন্ট অস্তিনে বাংলাদেশিরা নামাজ আদায় করেছেন। জহুর কমিউনিটি নেতা মোস্তফা হোসেইন জানান, সরকারি নির্দেশনা মোতাবেল সীমিত সংখ্যক মুসল্লি নিয়ে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। তাই অনেকেই জামাতে অংশ নিতে পারেননি।

করোনা মহামারির সংকট ও পরবর্তী অর্থনৈতিক বিপর্যয়ে প্রবাসী বাংলাদেশিদের বেশিরভাগই অর্থনৈতিক দুর্দশার শিকার হয়েছেন। অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ নিয়ে অর্থনৈতিক ধাক্কা সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন তারা।

প্রবাসী বাংলাদেশিরা চরম অর্থনৈতিক সংকটে পড়েছেন। ব্যবসায়ীরা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। চাকরি হারিয়েছেন হাজার হাজার বাংলাদেশি। অনিশ্চিত সময়ে বছর ঘুরে আসা চিরচেনা ঈদের আবহে তারা ছন্দ মেলাতে পারছেন না।

এদিকে করোনার কারণে স্বপ্নভঙ্গ হয়েছে মালয়েশিয়া থেকে গত বছর ছুটিতে দেশে যাওয়া প্রবাসীদের। তারা কর্মস্থলে ফিরতে পারবেন কি না তা এখনও অনিশ্চিত। এছাড়া প্রবাসে কর্মহীন অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন অনেকে। 

মালয়েশিয়ার রাজা ইয়াং ডি-পার্টুয়ান আগোং সুলতান আবদুল্লাহ সুলতান আহমদ শাহ, প্রধানমন্ত্রী তানশ্রী মুহিউদ্দিন ইয়াসিন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী তুন ডা. মাহাথির মোহাম্মদ, আনোয়ার ইব্রাহীম দেশবাসী ও বিদেশিদের ঈদ শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।

এদিকে মালয়েশিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার প্রবাসী বাংলাদেশি ও মালয়েশিয়ান নাগরিকসহ সবাইকে পবিত্র ঈদুল আজহার শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। তিনি দেশে অবস্থিত প্রবাসীদের পরিবারের সদস্যদেরও শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।

হাইকমিশনার মো. গোলাম সারওয়ার বলেন, এই মহা দুর্যোগে প্রবাসী ভাইয়েরা মালয়েশিয়া সরকারের নিয়মকানুন মেনে ঈদ উদযাপন করবেন। এখন এক কঠোর ও অস্বাভাবিক সময় অতিক্রম করছে গোটা বিশ্ব। লকডাউনের আইনি শেকলে খারাপ সময় একদিন কেটে যাবে। সুদিন আসবেই।

এইচকে