গত জুন থেকে টানা লকডাউনে থাকা সিডনি যেন হাঁপিয়ে উঠেছে। সেখানে কমছে না করোনা সংক্রমণ। কঠোর নিয়ম-নীতির জালে থাকতে হচ্ছে বাসিন্দাদের। পাঁচ কিলোমিটার ব্যাসার্ধের মধ্যে চলাচল সীমিত। ‘স্টে হোম’ অপারেশন সক্রিয় রাখতে মোতায়েন হচ্ছে প্রতিরক্ষা বাহিনীর অতিরিক্ত পাঁচ শতাধিক সদস্য। 

সিডনি তথা নিউ সাউথ ওয়েলেস কার্যত অস্ট্রেলিয়ার অন্যান্য রাজ্য থেকে বিচ্ছিন্ন। করোনা পরিস্থিতি যেন কিছুতেই অনুকূলে আসছে না। কঠোর লকডাউনের মধ্যেও ৪৬৬ নতুন সংক্রমণ নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। সেখানে করোনায় চারজনের মৃত্যু হয়েছে, যা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়সহ অস্ট্রেলিয়ার নীতি-নির্ধারকদের উদ্বেগ বাড়িয়েছে। 

নিউ সাউথ ওয়েলসের ডেপুটি প্রিমিয়ার জন বারিলারো বলেন, সরকার আঞ্চলিক এবং নিউ সাউথ ওয়েলসের কোভিড পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে। নতুন সংক্রমণ নিয়ে সরকার প্রো-অ্যাকটিভ হয়ে কাজ করবে।

প্রিমিয়ার গ্ল্যাডিস বেরেজিক্লিয়ান বলেন, রাজ্যজুড়ে মহামারির এমন পরিস্থিতিতে সবার সহযোগিতা প্রয়োজন। তিনি শনিবারকে ‘সবচেয়ে উদ্বেগজনক দিন’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, দীর্ঘ দেড় বছর ধরে, আমরা বাকি বিশ্ব থেকে ব্যাতিক্রম ছিলাম, কিন্তু এখন আমরা আর অন্যদের থেকে আলাদা নই, পরিস্থিতি একই স্রোতে।


 
তাই কঠোর বিধিনিষেধের জালে আটকা পড়তে হচ্ছে সিডনিবাসীদের। রোববার থেকে প্রতিরক্ষা বাহিনীর  অতিরিক্ত পাঁচশ কর্মকর্তাকে নিয়ে অপারেশন ‘স্টে হোম’ চালু হচ্ছে। সেই সঙ্গে থাকছে অর্থদণ্ডের বিধানও। আইনানুযায়ী পৃথক পৃথক মোটা দাগের জরিমানা গুনতে হবে অমান্যকারীদের। 

হোম কোয়ারেন্টাইন লঙ্ঘন করা, পারমিটের ওপর মিথ্যা বলা, কনট্রাক্ট ট্রেসারের বিষয়ে মিথ্যা বললে পাঁচ হাজার ডলার জরিমানা গুনতে হবে। শারীরিক দূরত্বের বিধান ভঙ্গ করলে গুনতে হবে তিন হাজার ডলার। 

সেই সঙ্গে প্রয়োগ হচ্ছে বাসভূমি থেকে মাত্র পাঁচ কিলোমিটার অঞ্চল পর্যন্ত ভ্রমণ বৈধতার আইন। অর্থাৎ সিডনিসহ আশপাশের এলাকার অধিবাসীদের বাসা থেকে পাঁচ কিলোমিটার ব্যাসার্ধের মধ্যে চলাচল সীমাবদ্ধ থাকবে। এর মধ্যে সারতে হবে কেনাকাটা, ব্যায়াম ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় কর্মযজ্ঞ। আর চলাচল সীমারেখা নির্ধারণে বাসিন্দাদের ডিটেক্ট মাই লোকেশন ব্যবহার করে নিশ্চিত হওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। 

এদিকে সোমবার থেকে যে কেউ কোভিড পরীক্ষার ফলের অপেক্ষায় থাকার সময় বিচ্ছিন্ন হলে, সরকার তার পকেটে তিনশো বিশ ডলার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। নিউ সাউথ ওয়েলেসের বাসিন্দাদের আগামী ২২ আগস্ট  রাত ১২টা ১ মিনিট পর্যন্ত আরও সাত দিনের লকডাউনে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

আরএইচ