করোনায় বিশ্বজুড়ে লকডাউন ও অচলাবস্থার কারণে মালয়েশিয়ায় প্রবাসী বাংলাদেশিরা নানান সমস্যা নিয়ে জীবনযাপন করছেন। করোনায় প্রবাসীদের টাকা পাঠানোর পরিমাণ আরও কমতে পারে বলেও আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এরই মাঝে বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন কর্মহীনদের খাদ্য সহায়তা অব্যাহত রেখেছে।

এ দিকে সংক্রমণরোধে মালয়েশিয়া সরকার টিকাদানে জোর দিয়েছে। যারা দুই ডোজ টিকা নিয়েছেন তারা কর্মক্ষেত্রে যোগ দিতে পারবেন বলে সংশ্লিষ্টদের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে।

তবে চলমান লকডাউনে কিছুটা শিথিলতা আনলেও দেশটিতে বিভিন্ন সেক্টরে কর্মরত বাংলাদেশিরা একদিকে বেতন পাচ্ছেন না অন্যদিকে অনেকে ছাঁটাই ও মজুরি হ্রাসের কবলে পড়েছেন। দেশটিতে অবস্থানরত প্রবাসীদের অনেকেই এখন বাড়িতে টাকা পাঠাতে পারছেন না। চাকরি থাকা নিয়েও রয়েছেন দুশ্চিন্তায়।

মালয়েশিয়ায় কর্মরত সাইদুল মিয়া জানান যে, গত চার মাস ধরে তিনি দেশে টাকা পাঠাতে পারছেন না। গত মাসে বেতন-ভাতাও পাননি। তিনি যে কারখানায় কাজ করেন সেটিও বন্ধ। 

তিনি বলেন, ‌‘কোনোটাই হইতেছে না। এখানে আমরা আছি করুণ অবস্থায়। সমস্যা তো এখানেই যে, আমরা কারো কাছে হাত পাততেও পারতেছি না, কারো কাছে বলতেও পারতেছি না।’

করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে মালয়েশিয়ায় যে কড়াকড়ি চলছে তাতে নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত বেশিরভাগ প্রবাসী। মহামারির প্রভাবে দেশটির অর্থনীতিও মন্দার কবলে। এ অবস্থায় বহু প্রতিষ্ঠানে বেতন কাটা হচ্ছে বা শ্রমিক ছাঁটাই শুরু হয়েছে।

প্রবাসী সোহাগ মিয়া বলেন, ‘আমার নিজের কোম্পানি প্রচুর সংখ্যক শ্রমিক ছাঁটাই করতেছে। ছাঁটাই একটা বিরাট সমস্যা হয়ে গেছে। আরেকটা সমস্যা হচ্ছে বেতন কাটতেছে।’

তিনি বলেন, ‘ধরেন যাদের বেতন দেড় থেকে দুই হাজার ছিল তাদের বেতন এক হাজার থেকে ১২শর মধ্যে নিয়ে আসতেছে।’

এসব কারণে প্রবাসীদের পরিবারগুলোতে আর্থিক সংকট দেখা দিচ্ছে। অনেকেই আর্থিক সঙ্কটে রয়েছেন। আয় কমে যাওয়ার পাশাপাশি মালয়েশিয়া গিয়ে কর্মস্থলে যোগদান নিয়েও অনিশ্চয়তায় ছুটিতে থাকা প্রায় ২৫ হাজার প্রবাসী।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যে মতে, শীর্ষ ৩০টি দেশ থেকে আসা রেমিট্যান্সের মধ্যে পঞ্চম স্থানে ছিল মালয়েশিয়া। গত অর্থবছরে প্রতিমাসে গড়ে মালয়েশিয়া থেকে ১৭৫ মিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স দেশে পাঠানো হতো। কিন্তু গত জুন-জুলাইয়ে রেমিট্যান্স নেমে এসেছে ১০৫ মিলিয়ন ডলারে। ফলে রেমিট্যান্স পাঠানো দেশের তালিকায় মালয়েশিয়া এখন পঞ্চম থেকে সপ্তম স্থানে।

ওএফ