মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগের সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষরের জন্য দেশটিতে যাচ্ছেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ। আগামী ১৯ ডিসেম্বর এ সমঝোতা স্বাক্ষর অনুষ্ঠিত হবে।

বুধবার (১৫ ডিসেম্বর) প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের ডেপুটি সেক্রেটারি মো. আমিনুর রহমান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। 

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আগামী ১৮ ডিসেম্বর প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রীর নেতৃত্বে চার সদস্য বিশিষ্ট একটি প্রতিনিধি দল মালয়েশিয়ায় যাচ্ছেন। প্রতিনিধি দলের অন্যান্য সদস্যরা হচ্ছেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. আহমদ মনিরুস সালেহীন, বিএমইটির পরিচালক শহিদুল আলম এনডিসি ও উপসচিব সুসমা সুলতানা।

গত ১০ ডিসেম্বর মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ মন্ত্রী দাতু সেরি এম সারাভানান আনুষ্ঠানিক এক চিঠিতে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদকে সমঝোতা স্বাক্ষরের জন্য আমন্ত্রণ জানান। 

জানা গেছে, এবারের সমঝোতা স্মারকে কিছু বিষয় পরিবর্তন আসছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো জিটুজি প্লাস পদ্ধতি উল্লেখ থাকছে না, যুক্ত হচ্ছে মালয়েশিয়ার রিক্রুটিং এজেন্সি, কর্মীদের বাধ্যতামূলক বিমা থাকছে। আরও রয়েছে মালয়েশিয়ার সোশ্যাল সিকিরিটির আওতায় আজীবন সুবিধা পাওয়া। 

এছাড়া কর্মীদের দেশে ফেরার ব্যবস্থা ও খরচ বহন করবে নিয়োগদাতা প্রতিষ্ঠান, চুক্তি মেয়াদে কর্মীদের দায়িত্ব নিতে হবে মালয়েশিয়ার রিক্রুটিং এজেন্সিকেও, বয়স নির্ধারণ করা হয়েছে ১৮-৪৫ বছর পর্যন্ত। তবে কর্মীদের মালয়েশিয়া যেতে অভিবাসন ব্যয় বা খরচ কত হবে তা জানা যাবে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের পর।

এ দিকে বিদেশি কর্মী প্রবেশের মধ্যস্থতায় মালয়েশিয়ার ১ হাজার ৪০টি নিবন্ধিত সংস্থা করোনার মহামারির পরে অর্থনীতির অনেক খাত আবার চালু হওয়ার পরে দেশের সকল সেক্টরে শ্রমিকের গুরুতর ঘাটতি মেটাতে বিদেশি কর্মী নিয়োগে সরকারের উদ্যোগকে সময়োপযোগী বলে মনে করা হচ্ছে।

ন্যাশনাল অর্গানাইজেশন অব প্রাইভেট সার্ভিস অ্যাজেন্সিস মালয়েশিয়ার (পিএপিএসএমএ) মহাসচিব ড. সুকুমারন নায়ার বলেন, এ প্রচেষ্টায় মধ্যস্থতাকারী হিসেবে এবং দেশে বিদেশি কর্মীদের প্রবেশ ত্বরান্বিত করতে ১ হাজার ৪০টি বিদ্যমান নিবন্ধিত বিদেশি কর্মী নিয়োগকারী সংস্থাকে জড়িত করার জন্য সরকারকে অনুরোধ করা হয়েছে।

ড. সুকুমারন নায়ার ১৫ ডিসেম্বর এক বিবৃতিতে এসব কথা বলেন। 

এদিকে বাংলাদেশের সাথে কর্মী নিয়োগের সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করার ঘোষণা প্রেক্ষিতে মাইগ্রেন্ট ওয়ার্কার নিয়ে কাজ করে এমন বিভিন্ন সংস্থা ও ব্যক্তি জি টু জি প্লাসের সময়ে সিন্ডিকেটের ফলে কর্মীর অতিরিক্ত মাইগ্রেশন খরচ মেটাতে ঋণ করার বিষয়টি সামনে এনেছে। 

তারা বলেন, নিয়োগ কর্তাদের অতিরিক্ত খরচ ফেরত দিতে হয়েছে এবং তাদের উৎপাদিত পণ্য আমেরিকা, ব্রিটেন এবং ইউরোপের বাজারে প্রবেশ করতে পারেনি। অপরদিকে উন্নত দেশের ঘোষণার দ্বারপ্রান্তে এসে মালয়েশিয়া একই কারণে ফোর্স লেবার এবং মানব পাচারের অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছে। বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে সেসব খারাপ ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে না ঘটে সে প্রত্যাশা করছে। অন্যথায় মালয়েশিয়ায় ফোর্স লেবার ও মানব পাচারের যে সমস্যা মোকাবিলা করছে তা থেকে বের হতে পারবে না।

আইএসএইচ