২২ বছর আগে রোহানার মা তাকে কিন্ডারগার্টেনের শিক্ষিকা চি হুই লানের (৮৩) কোলে তুলে দিয়ে তার নিজ দেশে ইন্দোনেশিয়া চলে যান। রোহানার মা ওই কিন্ডারগার্টেনে ক্লিনার হিসেবে কাজ করতেন। 

চি হুই লান রোহানাকে তার নিজের সন্তানের মতো করে বড় করে তোলেন। মালয়েমিয়ান চাইনিজ চি হুই যদিও ভিন্নধর্মী ছিলেন, কিন্তু রোহানা যেহেতু মুসলিম পরিবারের মেয়ে, তাই সকালে স্কুলের পর বিকেলে তাকে নিয়ে যেতেন ইসলামি একাডেমিতে। বাসায় ব্যবস্থা করে দিতেন নামাজ, কোরআন ও হাদিস পড়ার। খেতে দিতেন হালাল খাবার, পরিয়ে রাখতেন মুসলিম পোশাক।  

১৬ জানুয়ারি দেশটির জাতীয় দৈনিক স্টার অনলাইনে রোহানা ও তার পালক মা চি হুই লানকে নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পর থেকে রোহানা ও তার পালক মাকে নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে ঝড় উঠেছে। অন্য ধর্মের প্রতি এতটা শ্রদ্ধাশীল হওয়ার কারণে প্রতিবেদনটি মালয়েশিয়ার সাধারণ মানুষ থেকে  প্রধানমন্ত্রীর মন পর্যন্ত ছুঁয়ে গেছে। সামাজিক মাধ্যমে অনেকেই বলছেন, এমনই হওয়া উচিত আমাদের। আমরা যেন মানুষের মতো মানুষ হই এবং প্রতিটা ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হই।

স্টার অনলাইনে প্রকাশিত প্রতিবেদনে দেখা যায় চি হুই লান বলছেন, আমি একজন মা হিসেবে মরার আগে তাকে বিয়ে দিতে চাই এবং তাকে সফল ও সুখি দেখতে চাই। আমি স্বস্তি পেয়েছি কারণ তার সমস্ত জীবন আমি নিশ্চিত করেছি যে সে একজন মুসলিম হিসেবেই বড় হয়েছে এবং চিরকাল সেভাবেই থাকবে। 

এর আগে রোহানার নাগরিকত্ব না পাওয়ার বিষয়টি বাটু এলাকার আবাসিক প্রতিনিধি পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম মুজাফফর গোলাম মুস্তাকিমের কাছে উত্থাপন করেছিলেন চি।

রোহানা বলছেন, বর্তমানে, আমি নাগরিকত্বের মর্যাদা পাওয়ার সমস্যার মুখোমুখি হয়েছি। আমি বুঝতে পারি কারণ আমার মা ইন্দোনেশিয়ান এবং আমার বাবা ছোটবেলা থেকেই নিখোঁজ।

তিনি আরও বলেন, আমি ২০১৬ সালে নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করেছিলাম এবং এখনও পর্যন্ত কোনো সুরাহা হয়নি। 

সামাজিক মাধ্যম ও পত্র-পত্রিকায় রোহানাকে নিয়ে সংবাদ পরিবেশনের পর প্রধানমন্ত্রী রোহানাকে সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। 

এনএফ