ছবি : সংগৃহীত

আমার বাবা ব্যাংকে চাকুরি করতেন। অবসর শেষে ২২ লাখ টাকা পেয়েছেন। সেই টাকা দিয়ে আম্মুর নামে সঞ্চয়পত্র কেনা হয়। সেখান থেকে প্রতি মাসে আমরা ১৭২০০ টাকা করে পাই। এছাড়াও আমাদের বাসার ২ রুম ভাড়া দিয়ে ১০-১১ হাজার টাকার মতো পেয়ে থাকি। এই পুরো টাকা সংসারের পেছনে খরচ হয়ে যায়। কোনো জমানো টাকা অবশিষ্ট থাকে না।

এখন আমার জানার বিষয় হলো- আম্মুর উপর কি জাকাত ফরজ হবে? যদি হয় তাহলে সেটার পরিমাণ কত হবে?

এই প্রশ্নের উত্তর হলো- ব্যাংকের প্রচলিত সঞ্চয়পত্রের মাধ্যমে যে টাকা জমা রাখা হয় এককালীন ৩ বছর, ৫ বছর বা ১০ বছরের জন্য। সে টাকা জমা রাখার পরে প্রতি মাসে ব্যাংক কর্তৃক টাকা জমাকারীকে একটা অংক দেওয়া হয়; এটা স্পষ্টত সুদ। কেননা সুদ বলা হয়, ঋণ নেওয়ার পর ঋনদাতাকে কিছু দেওয়ার চুক্তি করা।

আরও পড়ুন : যে সম্পদ থাকলে জাকাত দিতেই হবে

আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘যারা সুদ খায় তারা কিয়ামতে দন্ডায়মান হবে— যেভাবে দণ্ডয়মান হয় ওই ব্যক্তি, যাকে শয়তান আসর (প্রভাব) করে মোহাবিষ্ট করে দেয়। তাদের এ অবস্থার কারণ এই যে, তারা বলেছেঃ ক্রয়-বিক্রয় ও তো সুদ নেওয়ারই মতো! অথচ আল্লাহ তাআলা ক্রয়-বিক্রয় বৈধ করেছেন এবং সুদ হারাম করেছেন। অতঃপর যার কাছে তার পালনকর্তার পক্ষ থেকে উপদেশ এসেছে এবং সে বিরত হয়েছে, পূর্বে যা হয়ে গেছে, তা তার। তার ব্যাপার আল্লাহর উপর নির্ভরশীল। আর যারা পুনরায় সুদ নেয়, তারাই দোজখে যাবে। তারা সেখানে চিরকাল অবস্থান করবে। (সুরা বাকারা, আয়াত : ২৭৫)

আরও পড়ুন : ব্যাংকে টাকা থাকলে কি জাকাত দিতে হবে?

সুদ বা রিবা কাকে বলে? এ ব্যপারে উলামায়ে কেরাম একমত যে, প্রত্যেক ওই ঋণ যা মুনাফাকে টেনে নিয়ে আসবে তাই রিবা বা সুদ হিসেবে পরিগণিত হবে। যেমন বলা হয়েছে যে, ‘প্রত্যেক ওই ঋণ যা মুনাফাকে টেনে নিয়ে আসবে, তাই রিবা বা সুদ।’ (মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বাহ, হাদিস : ২০৬৯০)

জ্ঞাতব্য যে, সঞ্চয়পত্র যা আপনার মা ক্রয় করেছেন, তা হারাম। মূলধন ব্যতিত মুনাফা যতটুকুই আসবে— সবকটুকু সদকা করে দিতে হবে। মূলধন যেহেতু জাকাতের নিসাব সমপরিমাণ, তাই তাতে জাকাত আসবে।