ছবি : সংগৃহীত

সদকাতুল ফিতর খাদ্যদ্রব্য দিয়ে যেমন আদায় করা যায়, তেমনি টাকা দিয়েও আদায় করা যায়। কারণ অসংখ্য সলফ হাদিসে উল্লিখিত খাদ্যদ্রব্যের পরিবর্তে মুদ্রা বা টাকার মাধ্যমে সদকাতুল ফিতর আদায় করেছেন। নিম্নে তার কয়েকটি উদাহরণ তুলে ধরা হলো।

১. ইমাম বুখারি (রহ.) তাঁর সহিহ বুখারিতে মুআজ (রা.)-এর বক্তব্য উল্লেখ করেছেন।

তিনি ইয়ামেনবাসীকে বলেন, তোমরা সদকার মধ্যে খাদ্যদ্রব্যের পরিবর্তে কাপড় নিয়ে আসো। কেননা এটা তোমাদের জন্য অধিকতর সহজ এবং মদিনার সাহাবিগণের জন্যও অধিক উপযোগী। (বুখারি, হাদিস : ১১৪৭)
ইমাম আবু হানিফা (রহ.) এই দৃষ্টিকোণ থেকেই বলেছেন, টাকা দিয়ে আদায় করা উত্তম। কারণ এটি মানুষের জন্য সহজ এবং উপকারী।

আল্লামা ইবনু রাশিদ (রহ.) বলেন, উক্ত মাসআলাটির মাঝে ইমাম বুখারি (রহ.) হানাফিদের সহমত পোষণ করেছেন। (ফাতহুল বারি, ইবনে হাজার : ৩/৩১২)

২. জুহাইর (রহ.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আবু ইসহাক (রহ.) থেকে শুনেছি তিনি বলেছেন, আমি সাহাবায়ে কেরাম (রা.)-কে এই অবস্থায় পেয়েছি যে তারা রমজানে সদকাতুল ফিতর খাবারের বিনিময়ে টাকা দ্বারা আদায় করতেন। (মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা, হাদিস : ১০৪৭২)

এই হাদিসের সনদ বিশুদ্ধ তথা প্রমাণযোগ্য।

আরও পড়ুন : ফিতরা দিতে হয় কেন?

৩. হাসান বসরি (রহ.) বলেন, টাকা দ্বারা সাদাকায়ে ফিতর আদায় করাতে কোনো সমস্যা নেই। (মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা, হাদিস : ১০৪৭১)

৪. এ প্রসঙ্গে ওমর ইবনে আব্দুল আজিজ (রহ.)-এর ঐতিহাসিক একটি চিঠি রয়েছে। তিনি ‘নিসফে সা’ বা এর মূল্য সদকা করার নির্দেশ দেন। (মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা, হাদিস : ১০৪৭০)

তা ছাড়া বিখ্যাত ইমাম ইবনে আবি শায়বা তার রচিত কিতাব ইবনে আবি শায়বা-২/৩৯৮-এর মাঝে এভাবে অনুচ্ছেদ স্থাপন করেন যে অর্থাৎ ‘সাদকাতুল ফিতর টাকা দ্বারা আদায় করার (বৈধতা) সম্পর্কে। ’

ইমাম বায়হাকী (রহ.) তার রচিত কিতাবু সুনানুল কুবরা-৪/১৮৯-এর মাঝে এভাবে অনুচ্ছেদ স্থাপন করেন যে অর্থাৎ ‘এই অনুচ্ছেদ হলো টাকা দ্বারা জাকাত আদায় করা অনুমোদিত। ’

মোটকথা সালাফদের কর্ম ও বক্তব্য দ্বারা স্পষ্ট যে টাকা দ্বারা সদকাতুল ফিতর  আদায় করা যায়; বরং ক্ষেত্রবিশেষ এর মাধ্যমে আদায় করা উত্তম।