ছবি : সংগৃহীত

এ বছর বাদশাহ ফয়সাল পুরস্কার লাভ করেছেন কুয়েতের অর্থনীতিবিদ ও সাখর সফটওয়ার কোম্পানির স্বত্বাধিকারী মুহাম্মাদ বিন আবদুর রহমান আল শারিখ। প্রযুক্তি ব্যবহার করে ইসলাম প্রাচার-প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখায় মুসলিম বিশ্বের নোবেলখ্যাত এই পুরস্কার পেয়েছেন তিনি।

বুধবার (১০ ফেব্রুয়ারি) সন্ধায় রিয়াদে পুরস্কারপ্রাপ্তদের নাম ঘোষণা করেন সৌদি বাদশাহর উপদেষ্টা, পবিত্র মক্কা নগরীর গভর্নর ও কিং ফয়সাল প্রাইজ বোর্ডের প্রধান প্রিন্স খালেদ আল ফয়সাল। কিং ফয়সাল প্রাইজ ওয়েব সাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এমনটা জানা গেছে।

আল-শারিখকে মুসলিমবিশ্বের সর্বোচ্চ সম্মাননার এ পুরুস্কার দেওয়া হয় মূলত ইসলাম ও মুসলিমদের সেবায় অনন্য ভূমিকা রাখার কারণে। তিনি সর্বপ্রথম ইংরেজি ভাষায় পবিত্র কোরআন ও নয়টি হাদিসগ্রন্থের অনুবাদ সম্বলিত কম্পিউটার সফটওয়ার ডেভলপ করেন। এছাড়াও কোরআন, হাদিস ও ফিকাহের ইনসাকোপিডিয়াসহ ইসলামবিষয়ক নানা তথ্য সম্বলিত আর্কাইভ আপডেট করার কাজেও বিশেষ ভূমিকা রাখেন।

আল-শারিখের জন্ম ১৯৪২ সালে কুয়েতে। ১৯৬৫ সালে কায়রো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতি ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটসের উইলিয়ামস কলেজ থেকে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন।

কর্মজীবনে তিনি কুয়েত উন্নয়ন তহবিলের সহকারি পরিচালক ছিলেন। বিশ্বব্যাংকের পরিচালনা পরিষদেরও সদস্য ছিলেন। কুয়েত ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালনা পরিষদের প্রধান ছিলেন। এছাড়াও কুয়েত ও সৌদি আরবে আল-আলামিয়াহ ইলেকট্রনিকস কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেন।

১৯৮২ সাল থেকে মুহাম্মাদ আল-শারিখ কম্পিটার প্রোগ্রাম আরবিকরণ, অ্যারাবিক ইলেক্ট্রনিক ডিকশেনারি, প্রুফরিডার প্রোগ্রাম, অ্যাটোমেটিক ফর্মাল অ্যারাবিক প্রোনানসিয়েশন, মেশিন ট্রান্সিলেশন ডেভলপ করাসহ দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের জন্য ভিশন সিস্টেম উন্নয়নে কাজ করছেন।

আধুনিক প্রযুক্তিতে আরবি ভাষার সমৃদ্ধি আনতে সাখর প্রজেক্ট প্রতিষ্ঠা করেন। এর মাধ্যমে স্ক্রিন রিডার, মেশিন ট্রান্সলেশন, অটোমেটিক স্পিসসহ আরবি ভাষার উন্নয়নে নানামুখী কাজ করা হয়। তাছাড়া সাখর কোম্পানি তরুণদের জন্য ৯০ টিরও বেশি শিক্ষামূলক প্রোগ্রাম ও কম্পিউটার প্রোগ্রাম ডেভলপ করে।

অসংখ্য কৃতিত্ব ও অবদানের মধ্যে মুহাম্মাদ আল শারিখের সবচেয়ে বড় অবদান হলো, ‘দ্য মডার্ন অ্যারাবিক ডিকশনারি’, ‘আর্কাইভ অব কালচারাল এন্ড লিটারেরি ম্যাগাজিনস’ এবং ‘অ্যাটোমেটিক কারেক্টর’। 

প্রসঙ্গত, বাদশাহ ফয়সাল পুরস্কার দেওয়া চালু হয় ১৯৭৭ সাল থেকে। ১৯৭৯ সালে সর্বপ্রথম ইসলামের সেবা, ইসলাম শিক্ষা ও আরবি সাহিত্য তিনটি বিভাগে পুরস্কার দেওয়া হয়। ১৯৮১ সালে চিকিৎসা ও বিজ্ঞানকেও পুরস্কারের অন্তর্ভূক্ত করা হয়।